এখনও আত্মবিশ্বাসী কুমারস্বামী। —ফাইল চিত্র।
কর্নাটকের বিধানসভা স্পিকারের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের টানাপড়েন নিয়ে তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিল না সুপ্রিম কোর্ট। বরং বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার ফের শুনানি হবে বলে জানাল শীর্ষ আদালত। তত দিন পর্যন্ত রাজ্যে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই সিদ্ধান্তে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় পেয়ে গেল কর্নাটকের কংগ্রেস-জনতা দল সেকুলার (জেডিএস) জোট সরকার। তত দিনে বিদ্রোহী বিধায়কদের সঙ্গে কোনওরকম মীমাংসায় আসা সম্ভব হয় কিনা, তা দেখার অপেক্ষায় রাজনৈতিক মহল।
শুক্রবারের মধ্যে বিদ্রোহী বিধায়কদের ইস্তফা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় বলে বৃহস্পতিবারই আদালতে জানিয়েছিলেন কর্নাটকের বিধানসভা স্পিকার কে আর রমেশ কুমার। ওই বিধায়করা আদৌ স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছেন, নাকি তাঁদের ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে সময় লাগবে বলে যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সেই আবেদনের শুনানিতেই, এ দিন বিধায়কদের ইস্তফা সংক্রান্ত শুনানির দিন পিছিয়ে দেয় আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রমেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করতে যান ১৮ বিক্ষুব্ধ বিধায়কের মধ্যে ১০ জন। বেঙ্গালুরুতে তাঁর কাছে নতুন করে ইস্তফাপত্র জমা দেন তাঁরা। তার পর আবার ফিরে যান মুম্বইয়ের হোটেলে, গত এক সপ্তাহ ধরে যেখানে আস্তানা গেড়েছেন তাঁরা। রমেশ কুমারের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে শীর্ষ আদালতে একটি পিটিশনও দায়ের করেন ওই বিদ্রোহী বিধায়করা। তাতে দাবি করেন, ইস্তফা দিতে গেলে তাঁদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন রমেশ কুমার। রীতিমতো হুমকি দেন। এমনকি তাঁদের ইস্তফাপত্রের উপরই বসে পড়েন তিনি। এ দিন তাঁদের সেই আবেদনটিরও শুনানি হওয়ার কথা শীর্ষ আদালতে।
আরও পড়ুন: আলোর গতিতে কাজ করতে পারব না, কর্নাটক জট জিইয়ে রেখে বললেন স্পিকার
অন্য দিকে, রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যেই শুক্রবার থেকে কর্নাটক বিধানসভায় ১১ দিন ব্যাপী বাদল অধিবেশন শুরু হল। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী বলেন, ‘‘কয়েকজন বিধায়কের সিদ্ধান্তের জন্য এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে আস্থাভোটের আর্জি জানাচ্ছি আমি। স্পিকারের অনুমতি পেলে যে কোনও মুহূর্তে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারি।’’
। কোনওরকম বাধা বিঘ্ন ছাড়াই সুষ্ঠ ভাবে বিধানসভার অধিবেশন ফলপ্রসূ হবে বলে আশাবাদী তিনি। তাঁর দাবি, “বর্তমান সরকারকে গদিচ্যুত করার সব রকম প্রচেষ্টাই চলছে। কিন্তু কংগ্রেস-জেডিএস জোট যথেষ্ট মজবুত। আজকের অধিবেশন নিয়ে আত্মবিশ্বাসী আমরা।’’
রাজ্যের এই অচলাবস্থার জন্য শুরু থেকেই বিজেপিকে দায়ী করে এসেছে কংগ্রেস এবং জেডিএস। তাদের বিরুদ্ধে ঘোড়া কেনা বেচার অভিযোগ তুলেছে জোট। পর পর ১৮ জন ইস্তফা দেওয়ায় তাই এখন বুঝেশুনে পা ফেলছে দুই দলই। বেঙ্গালুরুর বাইরে একটি রিসর্টে দলের বিধায়কদের ইতিমধ্যেই সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে জেডিএস, যাতে কোনও ভাবেই বিজেপি তাদের নাগাল না পায়। দফায় দফায় বিধায়কদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেসও।
আরও পড়ুন: ৯৩ লক্ষ টাকা ঘুষ! অভিযুক্ত সেরার পুরস্কার পাওয়া এই তহসিলদার
এই মুহূর্তে কর্নাটক বিধানসভায় কংগ্রেস-জেডিএস-এর দখলে ১১৮টি আসন রয়েছে। কিন্তু ১৮ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়কের ইস্তফাপত্র গৃহীত হলে তা কমে ১০০-এ দাঁড়াবে। তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে গেলে এতদিন যেখানে ১১৩টি আসন পেতে হত, সেই সংখ্যাও কমে গিয়ে ১০৫-এ ঠেকবে। তাতে ক্ষমতা দখলে আর কোনও বাধাই থাকবে না বিজেপির। এমনিতেই বিধানসভায় তাদের ১০৫টি আসন রয়েছে। দুই নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে তা ১০৭-এ গিয়ে দাঁড়াবে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy