Advertisement
E-Paper

অভিযুক্ত প্রার্থী কেন, দিতে হবে জবাব

শীর্ষ আদালত এ ক্ষেত্রে আর একটি কঠিন শর্ত রেখেছে। তা হল, ওই প্রার্থীর জেতার ক্ষমতা রয়েছে বলেই তাঁকে প্রার্থী করা হল, এমন উত্তর দিলে চলবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৪৭
অপরাধের ইতিহাস রয়েছে এমন প্রার্থীকে চিহ্নিত করতেই হবে, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

অপরাধের ইতিহাস রয়েছে এমন প্রার্থীকে চিহ্নিত করতেই হবে, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

দু’বছর আগে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, রাজনৈতিক দলগুলিকে অপরাধী মুক্ত করতে সংসদে কড়া আইন আনা হোক। নরেন্দ্র মোদী সরকার সে পথে হাঁটেনি।

নির্বাচন কমিশন চেয়েছিল, ফৌজদারি অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত কাউকে যেন ভোটে প্রার্থীই না করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে তেমনই নির্দেশ দিক।

এতটা কড়া না হলেও আজ সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্দেশ দিল, লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে কোনও ফৌজদারি অপরাধের মামলায় অভিযুক্তকে প্রার্থী করা হলে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় অপরাধের খতিয়ান প্রকাশ করতে হবে। ফৌজদারি অপরাধের মামলা থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে প্রার্থী করা হল, তা-ও জানাতে হবে।

শীর্ষ আদালত এ ক্ষেত্রে আর একটি কঠিন শর্ত রেখেছে। তা হল, ওই প্রার্থীর জেতার ক্ষমতা রয়েছে বলেই তাঁকে প্রার্থী করা হল, এমন উত্তর দিলে চলবে না। ওই ব্যক্তির আর কী যোগ্যতা, সাফল্য বা গুণ রয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। মামলা নেই, এমন কাউকে কেন প্রার্থী করা গেল না, তা-ও জানাতে হবে।

আরও পড়ুন: প্রথম মন্ত্রিসভায় পটেলকে রাখতে চাননি নেহরু, বিদেশমন্ত্রীর টুইট ঘিরে বাগযুদ্ধ

খুন-ধর্ষণ-অপহরণ বা খুনের চেষ্টার মতো গুরুতর মামলা থাকা সত্ত্বেও কাউকে প্রার্থী করার পরে যে কোনও দলই দাবি করে, সব মিথ্যে মামলা। আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও রাজনৈতিক নেতাদের যুক্তি, জনসাধারণের সামনে মামলার খতিয়ানের পাশাপাশি কোনগুলি মিথ্যে মামলা, তা-ও জানানো দরকার।

বর্তমান লোকসভায় ফৌজদারি অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত সাংসদ

• ২০১৯-এর লোকসভায় ২৩৩ জন সাংসদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা (মোট সাংসদের ৪৩%)
• ২৯%-র বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা, ধর্ষণ, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা
• বিজেপি ১১৬ জন (৩৯%)
• কংগ্রেস ২৯ জন (৫৭%)
• জেডিইউ ১৩ (৮১%)
• ডিএমকে ১০ (৪৩%)
• তৃণমূল ৯ (৪১%)
• ২০১৪-র লোকসভার তুলনায় ২০১৯-এ ২৬ শতাংশ বেশি অভিযুক্ত সাংসদ
• ২০১৪-র লোকসভায় ১৮৫ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা ছিল (মোট সাংসদের ৩৪%)
• ২০০৯-এ লোকসভায় ১৬২ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা ছিল (মোট সাংসদের প্রায় ৩০%)

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে জয়ী ৫৩৯ জন সাংসদের মধ্যে ২৩৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা রয়েছে। বিজেপি শিবিরে যেমন মালেগাঁও বিস্ফোরণে অভিযুক্ত প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর রয়েছেন, তেমনই কেরলের ইডুক্কি থেকে জয়ী কংগ্রেসের ডিন কুরিয়াকোজও রয়েছেন, যাঁর নামে ২০৪টি ফৌজদারি অপরাধের মামলা রয়েছে!

রাজনীতিকে অপরাধমুক্ত করতে ২০১৩-য় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, কোনও সাংসদ-বিধায়ক দোষী সাব্যস্ত হলে এবং ২ বছরের বেশি জেল হলে তাঁর সদস্যপদ বাতিল হবে। মনোনয়ন জমার সময় অপরাধের মামলার খতিয়ান জমারও নিয়ম চালু হয়। তার পরেও লোকসভা, বিধানসভায় বছর বছর দাগি নেতার সংখ্যা বেড়েছে।

এই প্রেক্ষিতেই ২০১৮-য় সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, দাগি নেতাদের প্রার্থী করতে অপরাধের মামলার খতিয়ান সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানোর নির্দেশও জারি হয়। কিন্তু কোনও দলই সেই নির্দেশ মানছে না বলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। সেই মামলাতেই আজ বিচারপতি রোহিংটন নরিম্যান ও বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাটের বেঞ্চ আধ ডজন নির্দেশ জারি করেছে।

আজ কংগ্রেস দাবি করেছে, এই জয় আসলে রাহুল গাঁধীর। ২০১৩-য় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কোপ থেকে লালু প্রসাদকে বাঁচাতে মনমোহন-সরকার যখন অধ্যাদেশ আনার পরিকল্পনা করেছিল, তখন রাহুলই রুখে দাঁড়ান। তা ছাড়া বিজেপিতেই দাগি সাংসদ-মন্ত্রীর সংখ্যা সবথেকে বেশি। এ দিনই কর্নাটকে খনি মাফিয়া ‘বল্লারি গ্যাং’-এর নেতা আনন্দ সিংহকে মন্ত্রী করা হয়েছে। বিজেপির যুক্তি, যিনি সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন, সেই অশ্বিনী উপাধ্যায় বিজেপিরই সদস্য।

Supreme Court of India Election Commission of India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy