Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Arun Jaitley

বন্ধু হারালাম, বললেন মোদী, জেটলির প্রয়াণে শোক সব মহলেই

পর পর দলের দুই শীর্ষ নেতার মৃত্যুতে শোকের আবহ বিজেপির অন্দরেও। নিজেদের অভিভাবহীন মনে হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন দলের একাধিক নেতা।

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৯ ১৬:৩০
Share: Save:

চলতি মাসের শুরুতেই জীবনাবসান হয়েছে সুষমা স্বরাজের। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ফের এক অভিজ্ঞ রাজনীতিককে হারাল দেশ। প্রায় দু’সপ্তাহ দিল্লির এমসে ভর্তি ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি। শনিবার সকালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা দেশে।

পর পর দলের দুই শীর্ষ নেতার মৃত্যুতে শোকের আবহ বিজেপির অন্দরেও। নিজেদের অভিভাবকহীন মনে হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন দলের একাধিক নেতা। জেটলির প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন বিরোধী শিবিরের নেতারাও। বিজেপির সদস্য হলেও, অন্য দলের নেতাদের সঙ্গে সদ্ভাব রেখে চলতেন জেটলি। তাঁর মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন সনিয়া গাঁধী,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অরবিন্দ কেজরীবালের মতো নেতারাও।

অরুণ জেটলির প্রয়াণে এ দিন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ টুইটারে লেখেন, ‘অরুণ জেটলির প্রয়াণে আমিশোকাহত।দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করছিলেন। এক জন বুদ্ধিদীপ্ত আইনজীবী এবং অভিজ্ঞ সাংসদ ছিলেন উনি। দেশে গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল ওঁর।’

আরও পড়ুন: প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলির জীবনাবসান, শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে​

এই মুহূর্তে বিদেশ সফরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখান থেকে ইতিমধ্যেই অরুণ জেটলির স্ত্রী এবং সন্তানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তিনি। তাঁদের সমবেদনা জানিয়েছেন। সফর কাটছাঁট করে তাঁকে দেশে ফিরতে নিষেধ করেন জেটলির পরিবারের সদস্যরা।

এর পর টুইটারেই শোকপ্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি লেখেন, ‘অরুণ জেটলিজির প্রয়াণে এক জন বন্ধু হারালাম আমি। ওঁকে জানার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। ওঁর মতো দূরদর্শিতা এবং উপলব্ধি খুব কম জনের রয়েছে। বহু সুখস্মৃতি রেখে গেলেন। আমরা ওঁর অভাব অনুভব করব।’

প্রধানমন্ত্রী আরও লেখেন, ‘বিজেপি এবং অরুণ জেটলির মধ্যে অটুট বন্ধন ছিল। উনি ছাত্রনেতা থাকাকালীনই জরুরি অবস্থা জারি হয়। গণতন্ত্র রক্ষায় তখন সামনে থেকে লড়েছিলেন। আমাদের দলের অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা উঠেছিলেন উনি। দলের ভাবধারা এবং আদর্শ সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল ওঁর।’

অরুণ জেটলির প্রয়াণের খবরে হায়দরাবাদ থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অমিত শাহ। টুইটারে তিনি লেখেন , ‘অরুণ জেটলিজির প্রয়াণে শোকাহত আমি। এটা আমার কাছে ব্যক্তিগত ক্ষতি। শুধুমাত্র দলের এক জন শীর্ষ নেতাকেই হারাইনি, পরিবারের এক সদস্যকেও হারিয়েছি, আমার কাছে যিনি চিরকাল পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবেন।’

কংগ্রেসের টুইটার হ্যান্ডলে লেখা হয়, ‘অরুণ জেটলির প্রয়াণে আমরা শোকস্তব্ধ। ওঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাই। এই দুঃখের মুহূর্তে ওঁদের জন্য প্রার্থনা করছি।’দলের অন্তর্বর্তী সভাপতি সনিয়া গাঁধীও শোকপ্রকাশ করেন।

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় টুইটারে লেখেন, ‘অরুণ জেটলির অকাল মৃত্যুতে শোকাহত আমি। এক দিন আগেই ওঁকে দেখতে গিয়েছিলাম। দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছিলাম ওঁর। অত্যন্ত মেধাবী এবং জ্ঞানী নেতা ছিলেনউনি। ওঁর অভাব অনুভব করব। ওঁর পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং সমর্থকদের সমবেদনা জানাই।’

শুধুমাত্র বিজেপি নয়, সব রাজনৈতিক দলই অরুণ জেটলিকে শ্রদ্ধা করত করে বলে জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘অরুণ জেটলিজির প্রয়াণে মর্মাহত আমি। অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছেন উনি। এক জন অসাধারণ সাংসদ এবং বুদ্ধিদীপ্ত আইনজীবী ছিলেন। সব রাজনৈতিক দল ওঁকে শ্রদ্ধা করত। ভারতীয় রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন উনি। ওঁর স্ত্রী, সন্তান, বন্ধু এবং সমর্থকদের সমবেদনা জানাই।’

আরও পড়ুন: দৃপ্ত আইনজীবী থেকে দূরদর্শী নেতা, রাজনৈতিক সহবতের উজ্জ্বল মাইলফলক​

লখনউতে যাবতীয় কাজ ফেলে দিল্লি ফেরার ঘোষণা করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘নানা পদে থেকে দেশের সেবা করেছেন অরুণ জেটলি। দেশ ও দলের সম্পদ ছিলেন তিনি। সব ব্যাপারে গভীর জ্ঞান এবং স্বচ্ছ ধারণা ছিল তাঁর। গুণে আকৃষ্ট হয়েই তাঁর বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন অনেকে।’

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল লেখেন, ‘অরুণ জেটলির অকাল প্রয়াণে দেশের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। এক জন কৃতী আইনজীবী এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিক ছিলেন উনি। দেশবাসী ওঁর অভাব বোধ করবেন। ওঁর পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি।’

কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর টুইটারে লেখেন, ‘আমার বন্ধু এবং দিল্লি ইউনিভার্সিটির সিনিয়র অরুণ জেটলির প্রয়াণে শোকাহত আমি। উনি যখন দিল্লি ইউনিভার্সিটির ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ছিলেন, আমি তখন সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের ইউনিয়নে। তখনই ওঁর সঙ্গে আলাপ। রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলেও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম আমরা। লোকসভায় বাজেট নিয়েও ওঁর সঙ্গে বাদানুবাদ হয়েছে আমার। দেশের বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’

এ দিন দুপুরেই এমস থেকে দিল্লির বাসভবনে অরুণ জেটলির দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বিজেপির দফতরেও নিয়ে যাওয়া হবে মরদেহ। রবিবার দুপুরে দিল্লির নিগমবোধ ঘাটে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE