Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

সরকারি আবাসে গরু পুষে স্কুলে দুধ পাঠান শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি সিদ্ধার্থবাবু ব্যস্ত আইনজীবী, পর্বতারোহীও। বাবা গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্যও ছিলেন রাজনীতিবিদ। তাঁর সময় থেকেই উলুবাড়ি এলাকার ভট্টাচার্য বাড়িতে গোপালনের চল। বাবার মৃত্যুর পরে সাতটি গরু বিলিয়ে দিয়েছিলেন সিদ্ধার্থবাবু।

গোপালনে ব্যস্ত আমির হুসেন ও আমজাদ আলি। নিজস্ব চিত্র

গোপালনে ব্যস্ত আমির হুসেন ও আমজাদ আলি। নিজস্ব চিত্র

রাজীবাক্ষ রক্ষিত 
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০৪:১৪
Share: Save:

অসমের শিক্ষামন্ত্রী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য যখন বরপেটার দরিদ্র গ্রাম মাঝগাঁওয়ে হলস্টাইন ফ্রেসিয়ান গরু কিনতে যান, গরুর মালিকের ভাই আমির হুসেনকেও গরুদের কয়েকদিন প্রাথমিক তদারকির জন্য গুয়াহাটিতে নিয়ে আসেন। আর ফেরা হয়নি আমিরের। আড়ে-বহরে বেড়ে ওঠা সেই চারটি গরু এখন দিনেরাতে প্রায় ৯০ লিটার দুধ দেয়। ভটচাজ্জি বামুন, মন্ত্রীর বাড়িতে আমির ও আমজাদ আলির হাতে দোয়া সেই দুধই গুয়াহাটির বিভিন্ন মন্দির ও স্কুলে প্রতিদিন পাঠানো হয়। অসহিষ্ণুতার আবহে, শিক্ষামন্ত্রীর আবাস এ ভাবেই নীরবে সহিষ্ণুতার বার্তা দিয়ে চলেছে বলে দাবি তাঁর অনুগামীদের।

শিক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি সিদ্ধার্থবাবু ব্যস্ত আইনজীবী, পর্বতারোহীও। বাবা গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্যও ছিলেন রাজনীতিবিদ। তাঁর সময় থেকেই উলুবাড়ি এলাকার ভট্টাচার্য বাড়িতে গোপালনের চল। বাবার মৃত্যুর পরে সাতটি গরু বিলিয়ে দিয়েছিলেন সিদ্ধার্থবাবু। কিন্তু মন্ত্রী হওয়ার পরে দিসপুরে সরকারি আবাস পেয়েছেন। সেখানেই নতুন করে গোপালনের পরিকল্পনা করেন তিনি। ডাচ প্রজাতির চারটি গরু কেনেন বরপেটা থেকে। সেই সঙ্গেই নিয়ে আসেন আমিরকে। পরে কাজে যোগ দেন আমজাদ আলি।

এখন লক্ষ্মী, প্রতিমা, তারা ও পদ্মা—চারটি গরু সকালে ও বিকেলে মিলিয়ে প্রায় ৯০ লিটার করে দুধ দেয়। মন্ত্রীর সহযোগী সুরজিৎ শাণ্ডিল্য, নির্মল সাহারা জানান, প্রতিদিন গরুর দুধ শহর ও আশপাশের দরিদ্র স্কুলগুলিতে পাঠান শিক্ষামন্ত্রী। সপ্তাহে চার্ট মিলিয়ে গড়ে ২০টি স্কুলে দুধ পাঠানো হয়। রাতে দুধ পাঠানো হয় বিভিন্ন মন্দিরে। শুক্লেশ্বর মন্দিরের সামনে থাকা ভিক্ষুকদেরও দুধ পাঠানো হয় দিসপুরের ‘এম-১০’ থেকে।

আমির বলেন, ‘‘গরুর যত্নে অবহেলা না-পসন্দ মন্ত্রীর। আমি ও আমজাদ চাচা ছাড়া অন্য কেউ গরুর আশপাশে এলে ওদের শরীর খারাপ হয়। আমাদের যত্নে পালিত গরুদের দুধ প্রতিদিন মন্দির ও স্কুলে পাঠানো হয়। ভাল লাগে।’’

এর আগে রাজ্যে কোনও মন্ত্রী বা বিধায়ক সরকারি আবাসে গরু পোষেননি। অবশ্য সিদ্ধার্থবাবুর পাশের বাড়ির বাসিন্দা, বন ও আবগারিমন্ত্রী পরিমল শুক্ল বৈদ্য বড় চৌবাচ্চা তৈরি করে সরকারি আবাসে মাছ চাষ শুরু করেছিলেন। এখন সিদ্ধার্থবাবুর দেখাদেখি তিনিও প্রতিমা ও পূর্ণিমা নামে দু’টি বাছুর কিনে আবাসের ভিতরেই গোশালা তৈরি করে ফেলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE