গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আইনের মারপ্যাঁচ, আইনজীবীদের ক্ষুরধার সওয়াল-জবাব বা যুক্তি-পাল্টা যুক্তির বিচারে নয়, বরং মধ্যস্থতাকারী নিযুক্ত করেই রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার নিষ্পত্তি করতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার এটাই নির্ধারিত করে দিল প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। সব পক্ষকেই মধ্যস্থতাকারীদের নাম প্রস্তাব করতে বলেছে শীর্ষ আদালত। সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখে মধ্যস্থতাকারীদের নাম চূড়ান্ত করবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।তবে এই মধ্যস্থতার সময়কালে সংবাদ মাধ্যমে এই সংক্রান্ত কোনও খবর প্রকাশ করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। শুনানিতে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এতে বিবদমান সব পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা কমাবে।
প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি এ এস বোদড়ে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতিঅশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস এ নাজির। তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রবীণ বিচারপতি এ এস বোদড়ের পর্যবেক্ষণ, জমি নয়, বরং রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলা ভাবাবেগ এবং বিশ্বাস’-এর।
পাশাপাশি বিচারপতি বোদড়ের মন্তব্য, ‘‘কে আক্রমণ করেছিল, বাবর কী করেছিল, সেই সময় কে রাজা ছিল, মসজিদ না মন্দির ছিল, সেসব আমরা পাল্টাতে পারব না। আমরা শুধু বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করতে পারব।’’
আরও পড়ুন: ‘পুলওয়ামা হামলা আসলে বড় দুর্ঘটনা,’ বিজেপি নেতার কথায় বাড়ল বিতর্ক
এই মামলায় মোট পাঁচটি পক্ষ। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া, রাম লালা বিরাজমান, অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা এবং মহন্ত সুরেশ দাস। এর মধ্যে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং নির্মোহী আখড়া মধ্যস্থতাকারীর সিদ্ধান্তে রাজি হলেও আপত্তি তোলে বাকি তিনটি পক্ষ। তাদের অনেকেরই যুক্তি, মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে এই মামলার নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘আমরা বিষয়টা (মধ্যস্থতা) অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। কিন্তু মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তির এক শতাংশ সম্ভাবনা থাকলেও সেই সুযোগটা আমরা দিতে চাই।
আরও পড়ুন: অযোধ্যায় রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ বিতর্ক সম্পর্কে কতটা জানেন, পরীক্ষা করে নিন
আরও পডু়ন: ‘জঙ্গি ঘাঁটিতে ৩০০ মোবাইল কি গাছেরা ব্যবহার করছিল’, বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণ রাজনাথের
মধ্যস্থতার বিরোধিতায় এক আইনজীবীর যুক্তি ছিল, মধ্যস্থতায় সব পক্ষ রাজি হলেও সাধারণ মানুষ নাও মেনে নিতে পারেন, যেখানে এত মানুষের ভাবাবেগ জড়িয়ে এবং এক পক্ষ রাম মন্দির নির্মাণের তোড়জোড় শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি বোদড়ে বলেন, ‘‘আপনি তো ধরেই নিচ্ছেন, এক পক্ষকে অনেক কিছু ছাড়তে হবে বা সমঝোতা করতে হবে এবং অন্য পক্ষের জয় হবে। কিন্তু মধ্যস্থতা মানেই সব সময় এমনটা নাও হতে পারে। আপনি আগেই সিদ্ধান্তের কথা ভাবছেন।’’ একাধিক মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করা হবে বলেও জানান বিচারপতি বোদড়ে।
আরও পড়ুন: মশা মেরেও গোনেন নাকি? বিমানহানায় জঙ্গি মৃত্যু নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ ভি কে সিংহের
প্রশ্ন ওঠে, সব পক্ষের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারীদের দর কষাকষি বা আলোচনার বিষয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে তার প্রভাবে উত্তেজনা বাড়তে পারে। এই প্রসঙ্গেই বিচারপতির মন্তব্য, এই সব ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে রিপোর্ট করা উচিত নয়। এটা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা নয়। তবে এ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা বা মতামত প্রকাশ করা উচিত নয়।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy