Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
India

ট্রাম্প সফরে চুক্তি নিয়ে চাপের খেলা

বস্তুত, নিজেদের পক্ষে কতটা সুবিধাজনক শর্তে চুক্তি করা যায়, তা নিয়ে দু’তরফেই নিয়েই চলছে চাপের খেলা। আমেরিকা চাইছে পিৎজ়া, চিজ়-সহ আরও বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের জন্য ভারতের বাজার খুলে দেওয়া হোক।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৯
Share: Save:

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের আগে হাতে আর মাত্র এক সপ্তাহ। এখনও অনিশ্চিত বাণিজ্য চুক্তি।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের দু’দিনের সফরে ছোট মাপের কোনও বাণিজ্য চুক্তিও কি হতে পারে? অসম্ভব, এমনটা বলছে না বিদেশ মন্ত্রক। তবে স্পষ্ট করেই তারা জানাচ্ছে, চুক্তি এখনও অনিশ্চিত। কারণ, বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে গত এক বছর ধরে যে জটগুলি পাকিয়ে রয়েছে, এখনও সেগুলির সমাধান করা সম্ভব হয়নি।

বস্তুত, নিজেদের পক্ষে কতটা সুবিধাজনক শর্তে চুক্তি করা যায়, তা নিয়ে দু’তরফেই নিয়েই চলছে চাপের খেলা। আমেরিকা চাইছে পিৎজ়া, চিজ়-সহ আরও বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের জন্য ভারতের বাজার খুলে দেওয়া হোক। দেশের চাষি-পশুপালকদের কথা ভেবে মোদী সরকার তাতে নারাজ। ট্রাম্প চাইছেন, হৃদ‌্‌রোগের চিকিৎসার জন্য স্টেন্টের দামে যে ঊর্ধ্বসীমা মোদী সরকার বেঁধে দিয়েছে, তা তুলে নেওয়া হোক। তাতে মার্কিন সংস্থার ফায়দা হলেও তাতে আম ভারতীয়ের ক্ষোভ বাড়বে। ভারত তাই রাজি নয় এই দাবি মানতে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তথা আরএসএস-র পক্ষ থেকেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর চাপ রয়েছে। তাদের সাফ কথা, আমেরিকার শর্তে ভারতের বাজার হাট করে খুলে দেওয়া চলবে না। মোদী সরকার চাইছে, ভারত থেকে রফতানি করা ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম থেকে বাড়তি শুল্ক তুলে নিন ট্রাম্প। ভারতের কৃষিজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যে আরও বেশি করে মার্কিন বাজার খুলে দেওয়া হোক।

গোটা বিষয়টি যে ক্রমশ অনিশ্চয়তার পথে চলেছে তার একটি বড় প্রমাণ হল মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটথাইজ়ার-এর শেষ মুহূর্তে ভারত সফর বাতিল করা। স্থির ছিল, ট্রাম্প আসার আগে ভারতে এসে বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য চুক্তিটির রূপরেখা তৈরি করবেন। সেই মতো প্রস্তুতি নিচ্ছিল সাউথ ব্লকও। কিন্তু সূত্রের খবর, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে দুঃখপ্রকাশ করে সফরটি বাতিল করা হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রকের এক সংশ্লিষ্ট কর্তার কথায়, ‘‘আমরা আমেরিকার সঙ্গে কথা বলে যা স্থির করেছিলাম, তার থেকেও ওদের চাহিদা বেড়েই চলেছে। আমরা ভারত-মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সে দেশ থেকে ‘শেল’ তেল আমদানি দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভারত সফরকে মাইলফলক করে তুলতে সে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রকের এ বার দায়িত্ব, দু’দেশের পক্ষেই মেনে নেওয়া সম্ভব এমন চুক্তি প্রস্তাব আনা।’’

চুক্তি যে একেবারেই সম্ভব নয়, এমনটাও অবশ্য মনে করছে না ভারত। কারণ, এই চুক্তি নিয়ে ঘরোয়া রাজনৈতিক কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে ট্রাম্পেরও। তাঁর দিক থেকে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা থাকবে কিছু একটা করার। এটা ঠিক, ভারত বাণিজ্যিক ভাবে চিনের মত গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু আমেরিকার পক্ষে সুবিধাজনক শর্তে চুক্তি করতে ভারতকে রাজি করাতে পারলে, সেটা টাম্পের ভোট প্রচারের ঝুলিতে কিছুটা অক্সিজেন জোগাতে পারে। ট্রাম্প দেখাতে চাইছেন, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে অটল রয়েছেন তিনি। সহযোগী দেশ হোক বা শত্রু রাষ্ট্র— তাঁর কড়া অবস্থানের ফলে আখেরে আমেরিকার অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India US Trade Deal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE