Advertisement
E-Paper

কারও চোখে ত্রাস, কোথাও রবিনহুড এই হিদমা

হিদমার ‘একশো একটা’ ছবি রয়েছে ছত্তীসগঢ়ের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে। কিন্তু তার মধ্যে কোনটা হিদমার আদত ছবি, এখনও তা জানা সম্ভব হয়নি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:০৯
হিদমা। ছত্তীসগঢ় পুলিশের কাছে থাকা অনেকগুলি ছবির একটি। ছবি সংগৃহীত।

হিদমা। ছত্তীসগঢ় পুলিশের কাছে থাকা অনেকগুলি ছবির একটি। ছবি সংগৃহীত।

হিদমাই এখন ছত্তীসগঢ়ের জঙ্গলে কারও কাছে ত্রাস, কারও কারও কাছে ‘রবিনহুড’। যার হাতে সব সময় থাকে ‘একে-৪৭’ রাইফেল। শোনা যায়, ঘুমোনোর সময় হিদমার একটা হাতে ধরা থাকে কালাশনিকভ।

পুলিশ আর নিরাপত্তা বাহিনী মাওবাদী হিদমাকে তন্নতন্ন খুঁজছে গত ৫/৬ বছর ধরে। কিন্তু হিদমা এখনও পর্যন্ত ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গিয়েছেন।

হিদমার ‘একশো একটা’ ছবি রয়েছে ছত্তীসগঢ়ের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে। কিন্তু তার মধ্যে কোনটা হিদমার আদত ছবি, এখনও তা জানা সম্ভব হয়নি। সুকমার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের জেরা করে পুলিশ কানাঘুষো যেটুকু শুনেছে, তাতে মাওবাদী হিদমা বেশ বেঁটেখাটো, অনেকটা মাও জে দঙের মতোই। তবে চেহারায় বেশ খানিকটা রোগাই। তাঁর জন্ম সম্ভবত সুকমার জাগরগুন্ডা এলাকায়। বয়সটা ৫১-র আশপাশে।

গোটা বস্তার জেলায় মাওবাদী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন এই হিদমাই। সুকমা, বস্তারে আরও একটি নামে হিদমাকে চেনে লোকজন। ‘দেবা’। তবে কবে তাঁর হাতে বন্দুক উঠল আর কবে তিনি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা শুরু করলেন, এখনও পর্যন্ত তার কিছুই ছত্তীসগঢ়ের পুলিশের জানা নেই। এও জানা যায়নি, স্ত্রী ছাড়া হিদমার পরিবারে আর কে কে আছেন, তাঁরা কোথায় থাকেন।

আরও পড়ুন- মাওয়ের চিন এখন সাম্রাজ্যবাদী! বলছেন এ দেশের মাওবাদীরা​

আরও পড়ুন- ঘুমন্ত স্ত্রীর পাশেই ১২ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ​

ছত্তীসগঢ়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা হলেই হিদমার নাম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যায়। যা ফের এখন হচ্ছে, হালে আত্মসমর্পণ করা মাওবাদী নেতা পাহাদ সিংহের মন্তব্যে। পাহাদ পুলিশকে বলেছেন, ‘‘শেষ ঘাঁটি সুকমা, বস্তারে মাওবাদীদের শিরদাঁড়া ভেঙে দেওয়া যাবে হিদমাকে ধরতে পারলেই।’’

এই হিদমার নাম প্রথম জোরালো ভাবে ছত্তীসগঢ় পুলিশের কানে আসে আজ থেকে ৫ বছর আগে, ২০১৩-য়। ওই সময় মাওবাদীদের আক্রমণে ঝিরাম উপত্যকায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৭ জন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তদানীন্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিদ্যাচরণ শুক্ল, প্রদেশ কংগ্রেসের তদানীন্তন সভাপতি নন্দকুমার পটেল, তাঁর ছেলে দীনেশ, প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা মহেন্দ্র কর্মা ও ছত্তীসগঢ়ের তদানীন্তন বিধায়ক উদয় মুদালিয়র। গত বছরের এপ্রিলে বারকাপালে মাওবাদীদের সঙ্গে গুলিযুদ্ধে সিআরপিএফের ২৪ জন জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনাতেও হিদমা জড়িত ছিলেন বলে ছত্তীসগঢ় পুলিশের একাংশের ধারণা।

পুলিশ শুধু এইটুকুই জানতে পেরেছে, সুকমার জাগরগুন্ডা এলাকায় জন্ম হিদমার। একটি উপজাতি পরিবারে। হিদমা এখন মাওবাদী সংগঠন পিপলস লিবারেশন-এর ‘গেরিলা সেনাবাহিনী’র এক নম্বর ব্যাটেলিয়নের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। আর মাওবাদীদের ‘সাউথ সাব-জোনাল কমান্ডে’র প্রধান। সংগঠনের ক্যাডারদের কাছে হিদমা এখন কার্যত ‘হিরো’।

হিদমাকে সব সময় ঘিরে রাখে তাঁর খুব বিশ্বস্ত লোকজনের চার-চারটি ‘বলয়’। সুকমা, বস্তারের যেখানেই যান হিদমা, তাঁর সঙ্গে যায় ওই চারটি ‘বলয়’। পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হলে বাইরের ‘বলয়’-এর অনেকের মৃত্যু হয়। তাতে ধীরে ধীরে হিদমার ‘বলয়’-এর শক্তি হ্রাস পাচ্ছে বলে পুলিশের ধারণা। আর তার ওপরেই ভরসা করে ছত্তীসগঢ় পুলিশ বলছে, আর ক’বছরের মধ্যেই পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনীর জালে জড়িয়ে পড়বেন হিদমা।

Hidma Sukma Maoist হিদমা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy