স্বপ্ন দেখা আর স্বপ্ন দেখানোয় জুড়ি মেলা ভার ধনকুবের এলন মাস্কের!
মঙ্গলে মহাকাশচারী পাঠানোর আগেই এ বার চাঁদের কক্ষপথে মানুষ পাঠাচ্ছে ধনকুবের এলন মাস্কের হাতে গড়া সংস্থা ‘স্পেস-এক্স’। ২০১৮ সালেই। আপাতত দু’জনকে পাঠানো হচ্ছে চাঁদকে চক্কর মারতে। আর তাঁরা একেবারেই আমার, আপনার মতো মানুষ। মহাকাশচারী নন। মহাকাশচারীদের মতো ‘হার্ড কোর ট্রেনিং’ নেননি কোনও দিন। তবে ইতিমধ্যেই চাঁদ-মুলুকে পাড়ি জমানোর টিকিট কেটে ফেলেছেন। ‘স্পেস-এক্স’-এর ‘ফ্যালকন-হেভি’ রকেটে মহাকাশযাত্রীদের জন্য আসন রয়েছে কুল্যে দু’টি। আর তার অ্যাডভান্সড বুকিংও হয়ে গিয়েছে। ধনকুবের এলন মাস্ক সোমবার সাংবাদিকদের এ খবর জানিয়েছেন। তবে নাসা জানাচ্ছে, যাতে চাপিয়ে দুই মহাকাশযাত্রীকে বেসরকারি উদ্যোগে চাঁদের কক্ষপথে পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছে, সেই ‘ফ্যালকন-হেভি’ রকেট মহাকাশে লম্বা পথ পাড়ি জমানোর উপযুক্ত কি না, তা এখনও পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। তবে ওই নির্ধারিত মহাকাশযাত্রার আগে এখনও দেড় বছর সময় রয়েছে। তাই ‘স্পেস-এক্স’-এর হাতে ‘ফ্যালকন-হেভি’ রকেট পরীক্ষা করে দেখারও পর্যাপ্ত সময় রয়েছে বলে নাসার তরফে জানানো হয়েছে।
যে রকেটে চাপিয়ে স্পেস- এক্স দুই মহাকাশযাত্রীকে পাঠাবে চাঁদের কক্ষপথে, ২০১৮-য়
এলন মাস্ক সাংবাদিকদের ওই চমকে দেওয়ার মতো খবরটা জানিয়েছেন ঠিকই, তবে যে দু’জনকে তাঁরা চাঁদের কক্ষপথে পাক মারার জন্য পাঠাবেন বলে ঠিক করে ফেলেছেন, তাঁদের কারও নামধাম তিনি জানাতে চাননি। শুধু বলেছেন, ‘‘ওঁরা দু’জন একে অপরকে চেনেন। জানেন। দু’জনেই সাধারণ মার্কিন নাগরিক। মহাকাশচারী নন। ওঁরা গত বছরের শেষাশেষি চাঁদের মুলুকে যেতে চান বলে তাঁদের যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়ার যা খরচ হতে পারে, তা মিটিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। খেলাচ্ছলে নয়। অনেক ভেবেচিন্তেই তাঁরা ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বছর তাঁদের স্বাস্থ্য ও ফিটনেস পরীক্ষা করা হবে। তার পর চাঁদের মুলুকে পাড়ি জমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ট্রেনিংও দেওয়া হবে তাঁদের।’’
ওই দুই মহাকাশযাত্রী কত দিন থাকবেন মহাকাশে?
যে রকেটে চাপিয়ে দুই মহাকাশযাত্রীকে পাঠানো হবে চাঁদের কক্ষপথে, তার ভেতরটা
মাস্ক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘যাওয়া-আসা নিয়ে পাক্কা একটা সপ্তাহ। পার্থিব সময়ের নিরিখে সাতটা দিন মানে, ১৬৮ ঘণ্টা। চাঁদের মাটিতে তাঁরা নামবেন না। পৃথিবী থেকে রওনা হয়ে চাঁদের কোনও একটি কক্ষপথে ঢুকে পড়বেন। তার পর সেই কক্ষপথে থেকেই পাক মারবেন চাঁদকে। সেখান থেকেই তাঁরা দেখবেন, কোমন দেখতে লাগে চাঁদ আর পৃথিবীকে। তার পর চাঁদের কক্ষপথ ছেড়ে আবার হুশ্ করে ঢুকে পড়বেন আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহের অভিকর্ষ বলের ‘মায়া’য়। এই চাঁদের মুলুকে যাওয়া-আসার পথে ‘স্পেস-এক্স’-এর ‘ফ্যালকন-হেভি’ রকেট পাড়ি দেবে ৩ থেকে ৪ লক্ষ মাইল। নাসা বা অন্য কোনও দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার চাঁদে মানুষ পাঠানোর আগেই ‘স্পেস-এক্স’ দুই মহাকাশযাত্রীকে পাঠাতে পারবে চাঁদের কক্ষপথে। ৪৫ বছর পর এই প্রথম। চাঁদের খুব লম্বা একটা কক্ষপথে ঘুরবেন ওই দুই মহাকাশযাত্রী। ’৭০-এ ‘অ্যাপোলো-১৩’-এর মহাকাশচারীরা ওই কক্ষপথে থেকেই পাক মেরেছিলেন চাঁদকে।
আরও পড়ুন- ‘রুদ্রমূর্তি’ চিনতে সূর্যের একদম কাছে পৌঁছে যাবে নাসার রোবটযান
তবে হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোনাথন ম্যাকডাওয়েল বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয়, একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালে হলে তাও না হয় মেনে নেওয়া যেত। যাঁরা নিয়মিত মহাকাশে যান, সেই মহাকাশচারীদেরও ট্রেনিং-এর জন্য কম করে বছর দু’তিনেক সময় লাগে। সে ক্ষেত্রে যাঁরা আদৌ কোনও মহাকাশচারী নন, তাঁদের ট্রেনিং দিতে তো আরও অনেক বেশি সময় লাগার কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy