Advertisement
E-Paper

নুড়ি-বালির অন্দরে

একই ছাদের তলায় নোনাবালি, ইটের দেওয়াল, রঙিন প্রজাপতির উড়ান আর কফিশপের ওম। সিংহরায় দম্পতির অন্দরমহলে মিলবে সবেরই হদিশএকই ছাদের তলায় নোনাবালি, ইটের দেওয়াল, রঙিন প্রজাপতির উড়ান আর কফিশপের ওম। সিংহরায় দম্পতির অন্দরমহলে মিলবে সবেরই হদিশ

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:২০
এ-ঘর থেকে ও-ঘরের মাঝে সাধের ছোট্ট কফিশপ

এ-ঘর থেকে ও-ঘরের মাঝে সাধের ছোট্ট কফিশপ

একটা ফ্ল্যাটের স্বল্প পরিসরেই যদি একসঙ্গে পাওয়া যায় সমুদ্র সৈকতের আভাস, খোয়া ভাঙা ইটের দেওয়াল আর এক টুকরো কফিশপ? ধাঁধাঁর মতো লাগল তো? খোলসা করেই বলি। রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোডের উপর অরবিট সিটিতে সন্দীপ সিংহরায় আর বহ্নি সিংহরায়ের প্রায় ১৫০০ স্কোয়্যার ফুটের ফ্ল্যাটের মোদ্দা কথাটাই এই। অর্থাৎ যখন মন যে রকম জায়গায় যেতে চায়, নিজের ঘরের সেই কোনাতে গেলেই মিলে যাবে ইচ্ছেভ্রমণের ছোঁয়াচ।

আর ঠিক তাই তো তাঁদের ড্রয়িং কাম ডাইনিং রুমের দুই দেওয়ালে খেলা করছে বৈপরীত্য। ঢোকার মুখে কাঠের দরজায় নামের ফলকে সাঁটানো সিংহরায় দম্পতি আর তাঁদের একরত্তি মেয়ে অক্ষিতার ছবি। সেই ছবিতে তিন জনেই হাসিমুখে অতিথিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। ভিতরে ঢুকলেই দুধসাদা সোফা। নীচে মখমলি কার্পেট। পিছনের বড় দেওয়ালের ওয়ালপেপার জুড়ে ছড়িয়ে আছে সৈকতের নুড়ি-পাথর। সে দিকে তাকালেই মন উড়ু উ়ড়ু। আর ঠিক উল্টো দিকেই খাবার টেব্‌ল। এক দিকের দেওয়াল যদি সমুদ্রের নোনা জলে ধোয়া সাদাটে বালি-পাথরের হয়, তা হলে অন্য দেওয়ালে গাঢ় রঙের ছোঁয়া। বিস্তীর্ণ দেওয়াল থেকে বেরিয়ে এসেছে ত্রিমাত্রিক ইটের টুকরোর গাঁথনি। ওয়ালপেপারটি যেন পুরনো বাড়ির ক্ষয়ে যাওয়া দেওয়াল। সবটাই লালচে বাদামি আর খোয়া ওঠা। তার সঙ্গে মানানসই ঝাড়বাতি।

ড্রয়িং রুমের একটা গোটা দেওয়াল জুড়ে সমুদ্রতীরের ছোঁয়া

ড্রয়িং রুমের এক কোনায় বড় সেলার। ভিতরে রঙিন কাচের বোতলে দেশি-বিদেশি হরেক পানীয়। তার পাশেই হুকা-গড়গড়া তৈরি অতিথি আপ্যায়নের জন্য।

সিংহরায় কর্তার যদি পছন্দের হয় গণেশ, তো গিন্নির প্রিয় লাফিং বুদ্ধ। ফলে ড্রয়িংয়ের বড় শেল্‌ফে সহাবস্থান করেন গণেশ ও বুদ্ধ। ছোট্ট রান্নাঘরে ঢোকার মুখে রাখা বিশাল চিনা ঘড়ি। ঘড়ির নীচেই ফোয়ারা। উল্টো দিকে ইটের থ্রিডি দেওয়াল থেকে ঠিকরে বেরোনো আয়নায় নিজেকে দেখতে দেখতে হারিয়ে যাবেন নিঃসন্দেহে।

ঘরময় প্রজাপতির ওড়াউড়ি

মার্কেটিং রিসার্চ কনসালট্যান্ট সন্দীপ কাজের সূত্রেই ঘোরেন নানা দেশ। আর নিজ বাসভূমে ফেরার আগে যথারীতি তুলে নেন পছন্দমাফিক জিনিসপত্র। কিন্তু তার জন্য তাঁদের ফ্ল্যাটের যত্রতত্র ছ়ড়িয়ে নেই বিদেশি জিনিস। বলা ভাল, নিত্য প্রয়োজনীয় আর সংগ্রহের বেশির ভাগ জিনিস রাখার জন্য বেছে নিয়েছেন থ্রি বিএইচকে ফ্ল্যাটের একটা গোটা ঘর।
সেই স্টোর রুমেই জড়ো করে রেখেছেন যাবতীয় জিনিস। বাকি দুটো ঘর তাঁরা বেছে নিয়েছেন নিজেদের মাস্টার বেডরুম আর মেয়ের জন্য।

দেওয়ালের থ্রিডি ওয়ালপেপার নিঃসন্দেহে এনে দেবে পুরনো বাড়ির সুবাস

দুই বে়ডরুমের রংই ধবধবে সাদা। শোওয়ার ঘরে সাজানোর ক্ষেত্রে মিনিমালিস্ট আইডিয়াই পছন্দ সন্দীপ-বহ্নির। একটি দেওয়ালে দম্পতির ফেলে আসা অতীতের ছবি আর অন্য দেওয়াল থেকে ঝুলছে লতানে গাছ। সারা ঘরে রঙের ছোঁয়া বলতে ওটুকুই। মেয়ের ঘরও প্রায় সাদা হলেও দেওয়াল জুড়ে উড়ছে হালকা গোলাপি-আকাশিরঙা প্রজাপতি। ঠিক মেয়ের চঞ্চল মনেরই প্রতিবিম্ব যেন! দুটো বেডরুমের মাঝে যাতায়াতের সরু প্যাসেজটাকে বুদ্ধি খাটিয়ে সিংহরায় দম্পতি বানিয়ে ফেলেছেন একটা আস্ত কফিশপ। কাঠের বাহারি চেয়ার, স্কোয়্যার ফ্রেমে পরিবারের সুখী ছবি, দেওয়ালে বাদামি ইটের ওয়ালপেপার আর গিটার...
শুধু দু’কাপ কফি নিয়ে বসে পড়লেই হল।

ঘর সাজানো মানেই রুচির বহিঃপ্রকাশ। সন্দীপ-বহ্নির একচিলতে সংসারের পরতে পরতে রুচির সঙ্গেই মিলেমিশে আছে মুঠো মুঠো ভালবাসা। তাই তো ফ্ল্যাট থেকে বেরোনোর সময় ওঁদের একরত্তি পোষ্যটুকু লেজ নাড়তে নাড়তে বেরিয়ে আসে বিদায় জানানোর জন্য।

রূম্পা দাস

ছবি: আশিস সাহা

Home Decor Stones Walls
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy