Advertisement
E-Paper

এ কী লাবণ্যে পূর্ণ...

প্রাণবন্ত উজ্জ্বল ত্বকের জন্য শুধু ফেসিয়ালই যথেষ্ট নয়। ফেসিয়ালের পরে কী ভাবে নেবেন ত্বকের যত্ন?প্রাণবন্ত উজ্জ্বল ত্বকের জন্য শুধু ফেসিয়ালই যথেষ্ট নয়। ফেসিয়ালের পরে কী ভাবে নেবেন ত্বকের যত্ন?

নবনীতা দত্ত

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:১৫
মডেল: ডিম্পল; মেকআপ: উজ্জ্বল দত্ত, ছবি: তন্ময় সেন; লোকেশন: ল্যাকমে সালঁ

মডেল: ডিম্পল; মেকআপ: উজ্জ্বল দত্ত, ছবি: তন্ময় সেন; লোকেশন: ল্যাকমে সালঁ

শুষ্ক, রুক্ষ্ম, প্রাণহীন ত্বক? মাসে একটা বা দুটো ফেসিয়াল। ব্যস! তাতেই যেন মনে হয় ত্বকের উপযুক্ত যত্ন নেওয়া হয়ে গেল! তার পরের দিন থেকেই রোজকার ধুলোমাটির জগতে বিচরণ শুরু। এক দিনের ফেসিয়ালে যেটুকু লাবণ্য এসেছিল, এক হপ্তার মধ্যে সেটুকুও হাওয়া। বুঝতেই পারছেন, দাগহীন উজ্জ্বল ত্বকের জন্য শুধু ফেসিয়ালই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন তার পরবর্তী রূপরুটিন। ত্বকের ধরন অনুসারে যে ফেসিয়াল করবেন, তার জেল্লা ধরে রাখতে কিছু সতর্কবিধি মাথায় রাখাও জরুরি।

ত্বক অনুযায়ী ফেসিয়াল

প্রথমে কোন ত্বকে কী ধরনের ফেসিয়াল করবেন, সেটা জানা প্রয়োজন। তৈলাক্ত ত্বকে পার্ল ফেসিয়াল, শুষ্ক ত্বকে সিলভার ফেসিয়াল, রুক্ষ ত্বকে গোল্ড ফেসিয়াল, বয়স হলে বলিরেখা রুখতে ওয়াইন ও চকোলেট ফেসিয়াল এবং ড্যামেজ্ড ত্বকে কোলাজেন ফেসিয়াল করতে পারেন। পনেরো দিন অন্তর বা মাসে একটা করে ফেসিয়াল করাই যায়। তার পরে মন দিতে হবে রোজকার ত্বকচর্চায়...

পার্ল ফেসিয়াল

ফেসিয়াল করার আট ঘণ্টার মধ্যে মুখ ধোয়া যাবে না। পাঁচ দিন পর্যন্ত এক্সফোলিয়েশন বা স্ক্রাবিং বন্ধ রাখলেই ভাল। এই ফেসিয়ালে সবচেয়ে জরুরি হল আর্দ্রতা ধরে রাখা। কারণ পার্ল ফেসিয়াল মূলত তৈলাক্ত ত্বকেই করা হয়। এতে ত্বকের অতিরিক্ত তেল বেরিয়ে যায়। আবার ত্বক যাতে খুব শুষ্ক না হয়ে যায়, সে দিকেও নজর দিতে হবে। তাই ময়শ্চারাইজ়ার সরিয়ে ফেস মিস্ট ব্যবহার করতে পারেন।

সিলভার ফেসিয়াল

এই ফেসিয়ালের পরের দিন থেকেই ত্বকে চাই টোনার। এটি মূলত শুষ্ক ত্বকের জন্য, ফলে এই ট্রিটমেন্টের পরে ত্বকের আর্দ্রতা ফিরে আসে ঠিকই। কিন্তু তা তো ধরে রাখতেও হবে। তাই ফেসিয়ালের পরে বারো ঘণ্টা মুখে জল বা সাবান দেবেন না। রোদে বেরোনোর আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে।

গোল্ড ফেসিয়াল

এই ফেসিয়ালের পরেও মুখে জল বা সাবান দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। রোদে বেরোলে ট্যান পড়ার আশঙ্কা থাকে। অন্ততপক্ষে তিন দিন সরাসরি সূর্যালোকে বেরোবেন না। আর যদি তা এড়াতে না পারেন, তা হলে ছাতা ব্যবহার করুন। মেকআপে মুজ় বা লিকুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন। পাউডার বেস্‌ড মেকআপ থেকে শতহস্ত দূরে থাকাই ভাল।

কোলাজেন ফেসিয়াল

এই ফেসিয়াল করে বেরোনোর সময়েই ভাল এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন মেখে বেরোবেন। ভাল সালঁতে ফেসিয়ালের পরেই উচ্চ মানের সানস্ক্রিন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ফেসিয়াল করার তিন দিন পর্যন্ত স্বাভাবিক জলে ও খুব হালকা সাবানে মুখ পরিষ্কার করবেন। বেশি ঘষবেন না। কারণ ড্যামেজ্ড ত্বকেই কোলাজেন ট্রিটমেন্ট করা হয়। তাই বেশি ঘষলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সুতরাং এ ক্ষেত্রেও স্ক্রাবিং বন্ধ রাখতে হবে ক’দিন।

অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল

এই ফেসিয়ালে বোটক্স করা হলে সেই জায়গায় হাত দেবেন না। হালকা জগিং বা কার্ডিয়ো ছাড়া ভারী ফিটনেস রুটিন ক’দিনের জন্য বন্ধ রাখতে হবে। বিশেষত সুইমিং বন্ধ রাখতে হবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী নিয়মিত টোনার ও সেরাম ব্যবহার করতে হবে।

পরবর্তী যত্ন

যে ধরনের ফেসিয়ালই করুন না কেন, তার পরে সব ত্বকেরই কিছু যত্ন প্রয়োজন।

• ফেসিয়াল করার পরেই অন্ততপক্ষে দু’ঘণ্টা ঘুম জরুরি। যেমন শারীরচর্চার পরে বিশ্রাম জরুরি, ঠিক তেমনই।

• শরীর হাইড্রেটেড রাখতে রোজ প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। ফেসিয়ালের সুফল পেতে এর কোনও দোসর হয় না।

• রাস্তাঘাটে বেরোলে বারবার নিজের মুখে হাত দেবেন না।

• ফেসিয়াল করার পরে বারো ঘণ্টা মুখে জল না লাগানোই ভাল। বিশেষত কোনও সাবান দিয়ে একেবারেই মুখ ধোবেন না। মাইল্ড সাবান ব্যবহার করতে পারেন।

• ফেসিয়ালের পরে অন্ততপক্ষে চব্বিশ ঘণ্টা রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা এ সময়ে ত্বক অনেক বেশি স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে। ফলে ত্বক খুব তাড়াতাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ট্যানও পড়ে সহজে। তাই রোদ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করবেন।

• অন্তত পাঁচ দিন ত্বকে কোনও ফেস পিল বা রেটিনল ক্রিম ব্যবহার করবেন না।

• এ সময়ে মাসাজ বা স্টিমও নেবেন না। নিলেও অন্তত এক সপ্তাহ পরে নেবেন।

• সাঁতারও বন্ধ রাখতে হবে কমপক্ষে দিন তিনেক। ত্বকের সুরক্ষায় যতই ক্রিম মাখুন না কেন, সুইমিং পুলের জলের ক্লোরিন ত্বকের ক্ষতি করে।

সপ্তাহান্তে ঘরোয়া ফেসপ্যাক

সারা মাসে এই রুটিন তো অবশ্যই মেনে চলবেন। তার সঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে পারেন সপ্তাহান্তের ফেসপ্যাক। ঘরোয়া কিছু প্যাক প্রতি উইকেন্ডে লাগাতে পারেন। এতে সারা সপ্তাহের ক্লান্তি কেটে ত্বক পাবে নতুন জীবন।

• কমলালেবুর রস, মধু ও টক দই একসঙ্গে ফেটিয়ে নিয়ে মুখে মাখুন। প্যাক শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এই প্যাক আদর্শ। এতে ত্বকের কালচে ভাব কেটে যায়। অতিরিক্ত তেলও বেরিয়ে যাবে।

• অ্যালো ভেরা জেল বার করে সারা মুখে লাগিয়ে নিন। এক ঘণ্টা পরে মুখে জল দিন। ত্বকের ধরন যেমনই হোক, এটি সুফল দেয়।

• স্ট্রবেরির রসে মেশান পাতিলেবুর রস ও গুঁড়ো চিনি। শুষ্ক ত্বকে এই প্যাক খুব ভাল কাজ দেয়। প্যাক শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ঘষে তুলে দিন। এই ফেসপ্যাক ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

• প্রতি মাসে একবার স্পা-ও করাতে পারেন।

এক দিনের রূপচর্চা বা ফেসিয়ালেই কিন্তু সমস্যাহীন উজ্জ্বল ত্বক পাওয়া যায় না। ভাল ফল পেতে গেলে যেমন সারা বছর নিয়মিত পড়াশোনা করাটা জরুরি, ঠিক তেমনই ভাল ত্বক পেতে হলেও প্রত্যেক দিন তার জন্য কিছুটা সময় বরাদ্দ করাও সমান জরুরি।

Beauty Tips Facial
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy