বা ড়ির বাগান মানেই যে শুধু মাত্র পছন্দসই কয়েকটি গাছ ও তার পরিচর্যা, এমনটা নয়। বাগানের নানা থিম থাকে। যাঁরা গাছবিলাসী হন, তাঁরাও নিজেদের বাগানে সাজের নতুনত্ব আনার ফিকির খোঁজেন। আর সেই অভিনবত্ব যোগ করতে পারে জ়েন গার্ডেনিং। আদতে জাপানের রক গার্ডেনের অনুপ্রেরণায় তৈরি হয় জ়েন গার্ডেন। এই বাগান করতে সাধারণত জায়গা লাগে বেশি। তাই বাড়ির সামনে বা পিছনে কিংবা ছাদের একটি বড় অংশে অথবা ড্রয়িং রুমের লাগোয়া বড় খোলা জায়গায় তৈরি করতে পারেন এই বাগান। তবে ইদানীং অনেকে
আবার খুব স্বল্প পরিসরের মধ্যে ছোট্ট বা মিনিয়েচার জ়েন গার্ডেন করায় উৎসাহী।
বড় পরিসরে জ়েন গার্ডেন
বড় জায়গা জুড়ে জাপানি ধাঁচে তৈরি এই বাগান মনে এনে দেয় অদ্ভুত প্রশান্তি। এই বাগানে থাকতেই হবে গাছ, ভাল করে ছাঁটা ঝোপ, পাথর, সাদা বালি এবং জল। বাড়ির বাইরে বা সামনের অংশ জুড়ে জ়েন গার্ডেন তৈরি করতে চাইলে প্রথমে ভাল করে সেই অঞ্চলের ঘাস ছেঁটে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক বার ঘাস ছেঁটে পরিষ্কার রাখতে হবে লন। এ বার গোটা জায়গা মুড়ে ফেলতে হবে বেশ কয়েকটি স্তরে খবরের কাগজ দিয়ে। তার উপরে ছড়িয়ে দিন সাদা বালি। কয়েক সপ্তাহ বালি ফেলে রাখার পরে তার উপরে তৈরি করতে পারেন বাগান। তার জন্য প্রথমে ছড়িয়ে দিতে হবে ছোট নুড়ি ও পাথর। এর জন্য ভার্টিকাল স্টোনের চেয়ে হরাইজ়ন্টাল স্টোন সাজানোই ভাল। সোজাসুজি একটি লাইনে পাথর না রেখে নানা আকার, গঠন ও রং মিলিয়ে সাজাতে পারেন।
আর যদি কোনও জ্যামিতিক ডিজ়াইন তৈরি করতে না চান, তা হলে এলোমেলো ভাবেও রাখতে পারেন পাথর।
বাগানের যে অংশ ফাঁকা রয়েছে, তার মধ্যে বালি ও গ্র্যাভেল বা পাথরকুচি সাজিয়ে রাখুন। তবে তার বিন্যাস যেন নদীপথের মতো হয়। পছন্দ মতো বনসাই, ঝোপ, গাছ লাগাতে পারেন এ বার বাগান জুড়ে। বাগানের মাঝে অবশ্যই থাকুক পাথুরে ফোয়ারা। অনেকে আবার ফোয়ারার পরিবর্তে ছোট জলাশয় কেটে তাতে জল ভরে রাখেন। এর জন্য বড় মাটির গামলা, বাথটাব বা পাথরের পাত্র ব্যবহার করতে পারেন। ইচ্ছে হলে সেই জলাশয়ে লিলি কিংবা জলজ উদ্ভিদ বসাতে পারেন। আবার জলে ছেড়ে দিতে পারেন রঙিন মাছ।
গাছ বসানো হয়ে গেলে বাগানের মূল আকর্ষণ বিন্দুতে থাকুক বুদ্ধমূর্তি। স্নিগ্ধ, সমাহিত বুদ্ধমূর্তি মন শান্ত করবেই। সন্ধেবেলা মূর্তির আশপাশে পাথরের উপরে সাজিয়ে দিতে পারেন মোমবাতি বা টি লাইট ক্যান্ডল। সব মিলিয়ে বাড়ির এই জ়েন গার্ডেন হয়ে উঠবে আপনার অবসরের সঙ্গী।
মিনিয়েচার জ়েন গার্ডেন
জায়গার অভাবে ফ্ল্যাটেও করতে পারেন মিনিয়েচার জ়েন গার্ডেন। ড্রয়িং রুম অথবা বড় শেলফের মাথায় রাখতে পারেন সেই বাগান। সে ক্ষেত্রে দরকার বড়সড় একটি কাঠের বাক্স। কাঠ ছাড়াও বড় কাচের বাক্স নিতে পারেন। তবে কী ধরনের বাক্স নিচ্ছেন, তা জরুরি নয়। বরং কী ভাবে সাজাচ্ছেন এই বাগান, সেটাই আসল। বাক্সের উপরেই একে একে সাজানো হবে জ়েন গার্ডেনের ধাপ। বেড়াতে গিয়ে সমুদ্রতট থেকে কুড়িয়ে আনা নানা পাথরকুচি রাখতে পারেন সাজিয়ে। থাকুক রঙিন বালিও। বালিতে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল দিতে পারেন। রেক দিয়ে বালির প্যাটার্ন গড়তে পারেন। মনও থাকবে ভাল। বালিতে কয়েক ফোঁটা হোহোবা অয়েল দিলে বালির মধ্যে ভেজা ভাব তৈরি হয়। এমনকি যে প্যাটার্নে বালি সাজিয়েছেন, সেটিও থাকে বেশি দিন। এ বার বাগানে যোগ করুন সাকিউলেন্ট, এয়ার প্ল্যান্ট বা মস। বুদ্ধমূর্তি ছাড়াও ইচ্ছে মতো পাথরের কিছু মূর্তি, বাতি সাজিয়ে রাখতে পারেন। ছোট্ট ফোয়ারার স্থান হতে পারে মিনি জ়েন গার্ডেনেরই এক পাশে।
এ ভাবেই জ়েন গার্ডেনের হাত ধরে ঘরে লাগুক সৌন্দর্যের ছোঁয়া, মনে থাক প্রশান্তি।
পত্রিকা সংক্রান্ত কোনও
মতামত থাকলে জানান
patrika@abp.in-এ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy