Advertisement
E-Paper

বাপি গগনে যা

সিডনিতে খেলা পড়লে প্রায়ই ক্রিকেটার থেকে ধারাভাষ্যকারের ভিড় এক আকাশ-অভিযানে। স্বাদ নিলেন অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়গেইলের পেল্লাই ছক্কাগুলো যতটা ওঠে, তারও প্রায় দেড়-দ্বিগুণ! অত্তটা উঁচুতে চড়ে বসছেন ওঁরা! কাপ-শীর্ষে ওঠার পাহাড়-সদৃশ চাপ রয়েছে যেখানে, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইন, ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রড, আইরিশ দলের ১৩ সদস্য কি না উঠে পড়েছেন ১৩৪ মিটার (প্রায় ৪৪০ ফুট) উঁচু ‘কোটহ্যাঙ্গার’-এ!

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৫ ০০:০৫
শীর্ষ-সফরে ডোনাল্ড, স্টেইনরা।

শীর্ষ-সফরে ডোনাল্ড, স্টেইনরা।

গেইলের পেল্লাই ছক্কাগুলো যতটা ওঠে, তারও প্রায় দেড়-দ্বিগুণ! অত্তটা উঁচুতে চড়ে বসছেন ওঁরা!

কাপ-শীর্ষে ওঠার পাহাড়-সদৃশ চাপ রয়েছে যেখানে, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইন, ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রড, আইরিশ দলের ১৩ সদস্য কি না উঠে পড়েছেন ১৩৪ মিটার (প্রায় ৪৪০ ফুট) উঁচু ‘কোটহ্যাঙ্গার’-এ!

থুড়ি, সিডনি হারবার ব্রিজে।

পোশাকি নাম ‘সিডনি হারবার ব্রিজ ক্লাইম্ব’। সিডনি বললেই যে অপেরা হাউসের ছবি চোখের সামনে ভাসে, তার খুব কাছেই কাম্বারল্যান্ড স্ট্রিট। তা ধরে এগোলে সেতুর পেটের তলায় ঢুকে পড়ার দরজা। টিকিট কেটে যাওয়া যায় সফরে, যার ধাপ-সিঁড়ি একটু একটু করে চোখের সামনে মেলে ধরে সিডনি শহরকে।

সফর শেষে অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ-এ ১০ ফেব্রুয়ারি স্টুয়ার্ট ব্রড লিখছেন, “আজ ক্রিস ওকস এবং জস বাটলারের সঙ্গে সিডনি হারবার ব্রিজে চড়লাম। ভীষণ ভাল লাগল। পৃথিবীতে আর কোথাও এর চেয়েও ভাল দৃশ্য আছে, এ ব্যাপারে ঘোর সন্দেহ আমার।” ফেসবুকেই ব্রডের সতীর্থ বাটলারের ছোট্ট প্রতিক্রিয়া, “অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা!”

সিডনি সেতুশীর্ষ-সফরে এসেছেন নানা ক্ষেত্রের নানা শীর্ষস্থানীয়— বিল গেটস, ওপরা উইনফ্রি, রিকি মার্টিন, উসেইন বোল্ট, রবার্ট ডি নিরো এবং আরও অনেকে।

৮০-র দশকের গোড়ার দিকে একটা হিন্দি সিনেমা ছিল ‘ইঁহা সে শহর কো দেখো’। মূল বক্তব্যের জটিলতার বাইরে একটা দূরত্ব থেকে এক শহরকে দেখার উপলব্ধি।

শিখরে উঠে উল্লসিত হর্ষ।

সিনেমাটা কি দেখেছিলেন ব্রিজ ক্লাইম্বের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল কেভ? ওই দশক ফুরনোর আগেই তো ১৯৮৯-তে ভাবনায় জন্ম ব্রিজ ক্লাইম্বের? জানা হয়নি। তবে শোনা গেল, ভাবনাটা পাকা চেহারা নিতে লেগেছে প্রায় এক দশক।

এখন ভোর-দিন-রাত-গোধূলির জন্য আলাদা-আলাদা সিডনি সেতু-শীর্ষ সফর। মেয়াদ অনুযায়ীও ক্লাইম্ব-এর বিভাজন আছে। খরচও পৃথক।

রাতের মায়া-আলোয়, না ভোরের আলোর মায়ায় কোন সিডনি বেশি নজরকাড়া, তা নিয়ে তর্কে নানা মুনির নানা মত। কিন্তু কয়েকটা জিনিস বাধ্যতামূলক ভাবে সবার জন্য এক। পরনের নীল-ধূসর জাম্প-স্যুট। ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার টেস্ট’। কানঢাকা রেডিও-হেডফোন। কোনও ক্যামেরা বা মোবাইল নয় (পাছে খসে পড়ে)। কোমরে সুরক্ষা-বন্ধনী, যাত্রাপথের পাশের তারে যা বাঁধা পড়ে গোড়াতেই। মাথার টুপি, চোখের চশমা বা গগলস, মায় হাতের রুমালটি পর্যন্ত কোনও না কোনও বাঁধনে বাঁধা।

গত ডিসেম্বর মাসেই ‘ব্রিজ ক্লাইম্ব’ করা পরিচিত ক্রিকেট ভাষ্যকার হর্ষ ভোগলেকে ইউটিউব ভিডিও-য় বলতে শোনা গেল, “এভরিথিং কানেক্টেড। নাথিং লুজ।”

সুঁড়িপথ বেয়ে চুড়োয় পৌঁছে কী দেখলেন ক্রিকেটারেরা?

অ্যালান ডোনাল্ড, কুইন্টন ডি কক বা স্টুয়ার্ট ব্রডেরা যেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তুলিয়েছেন, সেখান থেকে ডিপ ফাইন লেগ বরাবর পিছোলে সিডনি অপেরা হাউস। আনখশির। উড়ো হাওয়ায় জলে হিলিবিলি কাটছে পেল ক্রিম টালি থেকে ঠিকরে আসা রোদ্দুর। রয়্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেনের শান্ত সবুজ বাউন্ডারি লাইন। স্কোয়্যার লেগ থেকে ডিপ মিড উইকেট পর্যন্ত সিডনি সিবিডি-র (সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট) আকাশ-রেখা। পায়ের নীচে আট লেনের রাস্তা জুড়ছে স্কোয়্যার অফ এবং লেগকে।

একদম চুড়োয় ছোট্ট প্ল্যাটফর্ম। সেখানে হাঁটু গেড়ে প্রেমাস্পদর কাছে সারা জীবন একসঙ্গে কাটানোর ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ শোনা যায়। ‘আমি করি’ও (আই ডু) বলা যায়! অনেক অস্ট্রেলীয় নাকি করেওছেন।

ব্রিজ ক্লাইম্ব কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ২০০৬-এ সেতুর চুড়োয় উঠেছিলেন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরা। ২০১৩ সালে তাঁদের দেশেরই পেসার ব্রেট লি।

ক্লাইম্ব লিডারের কাছ থেকে সে তথ্য জেনে মশকরা জোড়েন জনৈক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট-উৎসাহী, “ব্রেট লি-র শখের গানের দলের নাম জানেন তো? ‘সিক্স অ্যান্ড আউট’। সিডনি ব্রিজের চুড়ো থেকে যে দৃশ্য দেখলাম, সেটাও স্টেডিয়ামের বাইরেই পড়বে।”

মনে পড়িয়ে দেয় ‘বাপি বাড়ি যা শট’। ক্রিকেটীয় বা ক্যামেরাজনিত, সে যে অর্থই করা যাক।

sydney world cup 201 anindya mukhopadhyay harsha bhogle anandabazar patrika
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy