Advertisement
E-Paper

সাধনপথের গহীন ইশারা

লালনের একক চরিত্রে দীপার অসাধারণ অভিনয়। দেখলেন বিপ্লবকুমার ঘোষ।সেই অচিন পাখির দেখা যেন আর মেলে না। তাঁরই খোঁজে যে লালন সাঁই পথ চেয়ে বসে আছেন। লালন যে গানের তরী বেয়ে, যে গানের অতলে তলিয়ে তিনি উপলব্ধি করেছেন বাউল সাধনপথে আছে অনেক গহীন ইশারা। এখানেই যে ব্রহ্মাণ্ডের অচ্ছেদ্য যোগ। আর তাই এই মানব শরীরের মধ্যে বসত করা নানা রিপুকে জয় করেই প্রেমের অনন্ত উড়ান সম্ভব। তিনি বলতে চেয়েছেন, আমার অন্তরের ব্যথা আজ গেরুয়া বসন পরেছে। সরল তারের একতারার মতো।

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০৫

সেই অচিন পাখির দেখা যেন আর মেলে না। তাঁরই খোঁজে যে লালন সাঁই পথ চেয়ে বসে আছেন। লালন যে গানের তরী বেয়ে, যে গানের অতলে তলিয়ে তিনি উপলব্ধি করেছেন বাউল সাধনপথে আছে অনেক গহীন ইশারা। এখানেই যে ব্রহ্মাণ্ডের অচ্ছেদ্য যোগ। আর তাই এই মানব শরীরের মধ্যে বসত করা নানা রিপুকে জয় করেই প্রেমের অনন্ত উড়ান সম্ভব। তিনি বলতে চেয়েছেন, আমার অন্তরের ব্যথা আজ গেরুয়া বসন পরেছে। সরল তারের একতারার মতো।

‘পড়শি’ শিরোনামে লালনকথা একাই গানের সঙ্গে অভিনয় করে তাক লাগিয়ে দিলেন দীপা ব্রহ্ম। টানা পঞ্চাশ মিনিটের এই এককে কোনও নারীর চরিত্রে লালন-দর্শনের অভিজ্ঞতা বহু কাল মনে রাখার মতো। ‘তারে ধরতে পারলে’ গান গাইতে গাইতে একতারা হাতে মঞ্চে আগমন যেন শুরুতেই বড় শিহরন। মনে পড়ে গেল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘সংসারে যে কেবলই সরা কেবলই চলা, তার মধ্য দিয়ে যে লোক একতারা বাজিয়ে নৃত্য করতে করতে কেবলই সরে কেবলই চলে সেই তো বৈরাগী, সেই তো পথিক, সেই তো বাউলের চেনা।’ তাই লালন গেয়েছিলেন ‘আমার মাত্র দুইখান চাকা’।

আসলে এই চলাচলই সার। ‘কত জনমের পর জনম পাক খেয়ে শেষে এই মানবজীবনে আমাদের প্রাণের সাম্পান নোঙর করেছে...’। দীপার অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা পরিস্ফুট হয় আরও এক মুহূর্তে যখন লালন নেমে এসেছেন মঞ্চে। ‘এই যে মন তুমি বসে বসে কথার আলপনা দিচ্ছ কেন গো? তোমার নিজের চলার তালটা ধরতে চাইছ, তাই না? তোমার কাছে তো সব ইশারাই পৌঁছায়, তার সবটুকু কি তুমি ধরতে পারো? সজ্ঞানে ফতুর হওয়া মানে তো পতিত হওয়া নয়।’ সঙ্গে লালনের গান, ‘আর কত দিন জানি’।

দীপার এই একক অভিনয়ের সাফল্যের দাবিদার আরও একজন, তিনি হলেন নির্দেশক আশিস চট্টোপাধ্যায়। প্রযোজনাটি দেখলেই বোঝা যায় উত্‌পল ফৌজদার ও অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নাটকটি নিয়ে নির্দেশককে যথেষ্ট ভাবতে হয়েছে। শুধু গানে নয়, কথার টানে নাটকীয়তা ধরে রাখাও নির্দেশকের কােছৈ বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। দীপার অভিনয়ে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। শেষ পর্বেও তাই সেই দক্ষতায় দর্শকের চোখে জল এনে দিতে পেরেছেন। যখন লালন মঞ্চ ছাড়ছেন একতারা হাতে গাইতে গাইতে ‘মিলন হবে কত দিনে’।

ভৌতিক রসের গল্প

মনসিজ মজুমদার

ফিনিক্স থিয়েটার সোসাইটির প্রযোজনা ‘পোর্ট্রেট’-এর মূল কাহিনি সত্যজিত্‌ রায়ের ‘গগন চৌধুরীর স্টুডিয়ো’। ভৌতিক রসের গল্প নিয়ে পরিচ্ছন্ন সামাজিক মূল্যবোধের নাটক। পরিচালনায় সৈকত ভকত। রোমিত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার হয়ে নতুন ফ্ল্যাটের মালিক। পিতৃহীন শৈশব থেকে বর্তমান পর্যন্ত যারা তাকে সাহায্য করেছিল তাদের দিকে সে ফিরেও তাকায়নি। এই সত্যের মুহূর্তে সে পৌঁছায় তার ফ্ল্যাটের উল্টোদিকের বাড়ি থেকে আসা এক অস্বস্তিকর আলোর উত্‌স খুঁজতে গিয়ে। আবিষ্কার করে এক বৃদ্ধ শিল্পীকে, যিনি এঁকেছেন রোহিতের মৃত আত্মীয় বন্ধুদের প্রতিকৃতি।

ভুতুড়ে বাড়িতে আত্মপরিচয়ের মুখোমুখি হওয়া বাস্তব ঘটনা নয়, দুঃস্বপ্ন। স্ক্রিপ্ট জোরালো এবং পরিচালনাও নির্মেদ। সাফল্যের কৃতিত্ব সুষ্ঠু একক ও দলগত অভিনয়। রোমিতের ভূমিকায় রোহিত নাথ। অন্যান্যরা হলেন সৈকত ভকত, উদয়শঙ্কর পাল, সৌমেন দত্ত (জ্যাঠা) ও স্বাগতা চক্রবর্তী। পাশের ফ্ল্যাটের কমল বিপ্রতীপ চরিত্র কিন্তু পূর্ণাঙ্গ নয়।

manasij majumdar biplab kumar ghosh play
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy