সুকুমার রায় পড়া না থাকলেও ‘বোম্বাগড়ের রাজা’ নামেই মালুম যে, শিল্পীসংঘের এই প্রযোজনায় (নাটক: চঞ্চল ভট্টাচার্য, পরিচালনা: সীমা মুখোপাধ্যায়) ছেলেবুড়োর দেখার মতো মজার কিছু ঘটবে। অবশ্য সুকুমার রায়ের সঙ্গে পরিচয় থাকলে প্রত্যাশার অতিরিক্ত কিছু আগে থাকতে আঁচ করা যায়। সুকুমার-রচনা থেকে রসদ নিয়ে রচিত এই নাটক সুবোধ নির্বোধ সব রকমের মজায় ঠাসা। যদিও বিরতির আগের চেয়ে পরের অংশই বেশি মজার। বোম্বাগড়ে আছেন বোকাচন্দ্র রাজা, ছিঁচকাঁদুনে রানি, ক্যাবলা রাজশ্যালক, গবুচন্দ্র মন্ত্রী, নাড়ি-টেপা বদ্যি আর হাতুড়ে ডাক্তার। আছে দ্রিঘাংচু আর রাজার এক পিসি যিনি ক্রিকেট খেলেন কুমড়ো দিয়ে। কিন্তু যে না থাকলে নাটক জমত না, সে হচ্ছে বাপ-মা মরা গরিব ছেলে পটাশ, ভারি চালাক চটপটে। বোকা রাজাকে তুড়ি মেরে এক হাটে বেচতে পারে। তাকে শায়েস্তা করতে গিয়ে রাজা নিজেই নাস্তানাবুদ।
মজা কেবল নাটকে নয়, উপস্থাপনাতেও অনেক মজা। যেমন রঙবেরঙের মঞ্চসজ্জা, তেমনই পুতুলনাচ ছায়ানাটক, মজাদার আবহসঙ্গীত ও গান, গানের সঙ্গে নাচ এবং আড়াল থেকে কম্বু কণ্ঠে সংলাপ। সব মিলিয়ে প্রযোজনায় একটিও ক্লান্তিকর মুহূর্ত নেই। এমনকী সেনাপতি ও মন্ত্রীকে রাজা খুন করলেও, বোকা রাজা ধনরত্নের লোভে সমুদ্রে ঝাঁপ দিলেও নাটকের প্রহসনের মেজাজ নষ্ট হয় না।
অভিনয়ে সকলকে টেক্কা দিয়েছেন রাজার ভূমিকায় কমল চট্টোপাধ্যায়। তাঁর এমন বলিহারি বাহারে রাজা মঞ্চ মাতিয়ে রেখেছে সারা ক্ষণ। তার চলন-বলন হুংকার-হুকুম সব কিছুই রাজার মতো, এক্কেবারে বোকার মতো নয়। কারণ রাজা নিজেই জানে না সে হদ্দ বোকা। এমন রাজার পাশে আর সকলেই ম্লান কেবল মহা ধড়িবাজ পটাশ ছাড়া। কিন্তু এমন বোকা মজাদার রাজা না থাকলে পটাশের কেরামতি খাটত না। শুভেন্দু ঘোষের পটাশ দেখতে বেচারি ভালমানুষ ছেলে! আসলে ভিজে বেড়াল, পেটে পেটে নষ্টামি বুদ্ধি। কিন্তু দর্শক ভালবাসে রাজাকে, পটাশকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy