Ukraine’s Shotguns Hunting Russian drones, other countries also developing dgtl
Russia-Ukraine War
ছোট প্যাকেট বড় ধমাকা! রুশ ড্রোন রুখতে ইউক্রেনের ভরসা ‘আদিম অস্ত্র’, কী ভাবে শত্রুকে নাস্তানাবুদ করছে ‘পুরনো চাল’?
জানা গিয়েছে, ড্রোনের বিরুদ্ধে শটগান ব্যবহারের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে ইউক্রেনের ৪১৩তম ‘সেপারেট রেড’ ব্যাটালিয়ন। ড্রোন মোকাবিলায় শটগান সঠিক ভাবে ব্যবহার করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে সেখানে।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ১০:০৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
পৃথিবীর সমর বিশেষজ্ঞদের চোখ খুলে দিয়েছে প্রায় চার বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। অস্ত্র নিয়ে অনেক প্রচলিত ধ্যানধারণাও বদলে দিয়েছে এই সংঘাত। তার মধ্যে অন্যতম হল, কী ভাবে শটগানের মতো ‘আদিম অস্ত্র’ও আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে অর্থবহ এবং কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে!
০২১৯
কিভ-মস্কো সংঘাতে বর্তমানে রুশ বাহিনীর অন্যতম মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে এই শটগান। অন্যতম কঠিন হুমকিও হয়ে উঠেছে। ছোট, দ্রুত এবং মারাত্মক ড্রোনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে সাশ্রয়ী প্রতিকার হিসাবে শটগানের উপরেই ভরসা রাখছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
০৩১৯
ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বের প্রথম দেশ যারা সংগঠিত ড্রোন হামলার প্রতিরক্ষায় শটগান ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউক্রেন এ-ও প্রমাণ করেছে, শটগানের গুলির বিস্তারের কারণে ছোট এবং দ্রুত গতিশীল ড্রোনগুলিকে আঘাত করার সম্ভাবনা এর বেশি, বিশেষ করে ড্রোনগুলি একদম কাছে চলে এলে।
০৪১৯
আগে, ড্রোন মোকাবিলা করতে পছন্দের প্রতিরক্ষা হিসাবে বিবেচিত হত অত্যাধুনিক বিমান-বিরোধী প্রতিরক্ষা এবং বৈদ্যুতিন কিছু অস্ত্র। কিন্তু একাধিক ড্রোন মোকাবিলায় ব্যর্থ হচ্ছিল ব্যবস্থাগুলি।
০৫১৯
এখন সেই ড্রোনের হামলা রুখতে বিশ্বাসযোগ্য প্রতিরক্ষা অস্ত্র হিসাবে পরিণত হয়েছে শটগান। জানা গিয়েছে, ড্রোনের বিরুদ্ধে শটগান ব্যবহারের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে ইউক্রেনের ৪১৩তম ‘সেপারেট রেড’ ব্যাটালিয়ন। ড্রোন মোকাবিলায় শটগান সঠিক ভাবে ব্যবহার করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে সেখানে।
০৬১৯
ইউক্রেনের সাফল্যের পর, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সামরিক বাহিনীগুলিও ড্রোনের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলে শটগান অন্তর্ভুক্ত করা শুরু করেছে বলে খবর।
০৭১৯
গত ৩ অক্টোবর ‘ইজ়রায়েল ওয়েপন ইন্ডাস্ট্রিজ়’ তাদের ‘আর্বেল অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম’ প্রকাশ্যে এনেছে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা কখন ক’টা গুলি বন্দুক থেকে বেরোবে, তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এই অস্ত্রের সাহায্যে ড্রোনের হামলা রুখতে পারবে পদাতিক বাহিনী।
০৮১৯
এআর-১৫, এআরএডি অ্যাসল্ট রাইফেল এবং নেগেভ মেশিনগানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ‘আর্বেল’। এটি ইজ়রায়েলের সেনাকে তাদের অস্ত্র এবং গোলাবারুদ ব্যবহার করে আকাশপথে আসা ড্রোনের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে। এর জন্য কোনও অতিরিক্ত সরঞ্জাম লাগবে না।
০৯১৯
‘আর্বেল’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাহায্যে সঠিক ‘ফায়ারিং মোড’-এর উপর নির্ভর করে বন্দুকগুলি ৪৫০ মিটার দূরে থাকা ড্রোনে আঘাত হানতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
১০১৯
অন্যান্য দেশের সশস্ত্র বাহিনীও ‘ড্রোন-কিলার’ বন্দুক এবং রাইফেল তৈরির জন্য একই ধরনের পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে।
১১১৯
আমেরিকা তৈরি করেছে আইএক্সআই-ইডব্লিউ ‘ড্রোনকিলার’ রাইফেল। পিস্তলের গ্রিপ থাকা এই অস্ত্র একটি সাধারণ রাইফেলের মতো। বন্দুকটির ওজন প্রায় ৪ কেজি। ‘ড্রোনকিলার’ প্রায় ১,০০০ মিটার দূরে থাকা ড্রোনকে ধ্বংস করতে সক্ষম।
১২১৯
ড্রোন মোকাবিলায় ইউক্রেন অন্য একটি ‘অ্যান্টি-ড্রোন’ অস্ত্রও তৈরি করছে। সেই শটগানের নাম ‘কেভিএসজি-৬’।
১৩১৯
ড্রোন মোকাবিলায় বিবর্তিত এই অস্ত্র ড্রোনগুলি থেকে সঙ্কেত গ্রহণ করে লক্ষ্যবস্তুর দিকে পাল্টা রেডিয়ো সঙ্কেত ছুড়ে দেবে। এর ফলে ড্রোনগুলি বিপথে চালিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে।
১৪১৯
‘অ্যান্টি-ড্রোন’ বন্দুক হিসেবে রাশিয়া ব্যবহার করছে ‘লোকমাস পার্স স্টুপার’। অন্যান্য ড্রোন প্রতিরোধ ব্যবস্থার মতো স্টুপারও তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করে। ফলে ড্রোনটি লক্ষ্যহীন ভাবে উড়তে শুরু করে এবং পরে বাধা পেয়ে ধ্বংস হয়ে যায়।
১৫১৯
লিথুয়ানিয়া যে ‘অ্যান্টি-ড্রোন’ রাইফেল তৈরি করছে, তার নাম ‘ইডিএম৪এল’। ব্যারেল এবং পিস্তলের গ্রিপ থাকা রাইফেলের মতো দেখতে এই অস্ত্র ড্রোন এবং সেটি পরিচালনাকারীর মধ্যে যোগাযোগ ব্যাহত করে।
১৬১৯
ইটালির সশস্ত্র বাহিনী ড্রোন মোকাবিলায় নতুন ‘বেনেলি এম৪ এআই ড্রোন গার্ড’ শটগান ব্যবহার করছে বলে জানা গিয়েছে।
১৭১৯
তবে, বলাই বাহুল্য যে ড্রোন হামলা রুখতে শটগান ব্যবহারেরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব কম পরিসরে ড্রোন হামলা রুখতে কার্যকর এটি। কেবল ছোট ড্রোনগুলিকেই ধ্বংস করতে সক্ষম।
১৮১৯
সমান্তরাল ক্ষতিরও কারণ হয়ে উঠতে পারে শটগান। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় শটগান ব্যবহারে সাধারণ নাগরিক এবং সম্পত্তির ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
১৯১৯
এ ছাড়া কোনও বিশেষজ্ঞই মনে করছেন না, ড্রোন-প্রতিরক্ষা কেবল শটগান নির্ভর হবে। ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেমন শক্তিশালী হচ্ছে, তেমনই অত্যাধুনিক হচ্ছে ড্রোনগুলিও। ফলে সেগুলির মোকাবিলায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি তৈরির দিকেও নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।