রবীন্দ্র-হর্নগীতি আইন’-এর এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে আজ। এর আগে পর্যন্ত শুধু ট্র্যাফিক সিগনালেই রবীন্দ্রসংগীত বাজত। কিন্তু লাল আলোয় গাড়ি দাঁড়ালেই তো হর্নের প্যাঁ-পোঁ। ল্যাম্পপোস্টের রবীন্দ্রসংগীত শোনাই যাচ্ছিল না। শোনা না গেলে কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় কী করে? তাই গত বছর আইন করা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে রেজিস্ট্রেশন করা সব গাড়ি আর মোটরবাইকের হর্নেও বাধ্যতামূলক ভাবে রবীন্দ্রসংগীত বাজাতে হবে। এ বছর মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, আইনটি প্রবল সফল হয়েছে। ট্র্যাফিক আলোতে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির চালকেরা হর্নে আলাদা আলাদা রবীন্দ্রসংগীত বাজাচ্ছেন। পথচারীরা এখন নতুন ‘ফিউশন’ গানও শুনতে পাচ্ছেন, যেমন, ‘বড় আশা করে এসেছি গো... জগতের আনন্দযজ্ঞে...দই চাই গো, দই চাই...’ মোটরবাইকের তরুণ চালক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্কুটির চালিকাকে শোনাচ্ছেন, ‘তুমি কোন কাননের ফুল।’ সঙ্গে সঙ্গে স্কুটির হর্ন-এ বেজে উঠছে — ‘অহো কী দুঃসহ স্পর্ধা।’ মেয়েদের দেখলেই পাড়ার বখাটে ছোঁড়ার মোটরবাইকের হর্নে বাজছে, ‘আয় তবে সহচরী।’ প্রশাসন এখনও স্থির করতে পারেনি, এটা ইভটিজিং কি না। প্রতিটি ট্র্যাফিক জ্যাম এখন রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র। লরিও রাজপথে ‘হারে রে রে রে রে, আমায় ছেড়ে দে রে, দে রে’ বাজিয়ে অ্যাক্সিডেন্ট করছে। তবে, প্রযুক্তিগত কারণে, সাইকেলে এই হর্ন লাগানো যায়নি। তাই, মোটরবাইকের দেখাদেখি সাইকেল আরোহীরা ‘ক্রিং ক্রিং’-এর বদলে খালি গলায় রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে দিচ্ছেন। শুনে পথচারীরা সরেও যাচ্ছেন। রবীন্দ্র-আরাধনার এই নতুন পথ খুঁজে পেয়ে প্রশাসন থেকে মন্ত্রী-সান্ত্রি, সাধারণ মানুষ, সবাই খুব খুশি। অন্য রাজ্যেও এই ঠাকুরপুজো-পদ্ধতি চালু করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিছু বুদ্ধিজীবী প্রস্তাব দিয়েছেন— পশ্চিমবঙ্গের নাম পালটে, নতুন নাম রাখা হোক ‘রবীন্দ্র ধরণী’।
সুকান্তদেব, পশ্চিম মেদিনীপুর
লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের রিপোর্ট? ঠিকানা:
টাইম মেশিন, রবিবাসরীয়, আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০ ০০১। অথবা pdf করে পাঠান এই মেল-ঠিকানায়: robi@abp.in
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy