মডেলিং জীবনের শুরুর দিকের কথা। রোহিত খোসলা আর তরুণ তেহলিয়ানি আমাকে নিয়ে গেল লন্ডনে। ওরা তখন নতুন নতুন কাজ শুরু করেছে। কিন্তু অল্প কয়েক দিনেই ভীষণ নাম করেছে। ওদের প্রতিভার চমক দেখে এ দেশের ফ্যাশন-ইন্ডাস্ট্রি তো বটেই, গোটা পৃথিবীর শিল্প-সমালোচকরা হতচকিত। সেই ওদের ফ্যাশন শো হবে সাগরপারে। রইরই ব্যাপার। মেহের জেসিয়া, সুজান সাবলোক-এর মতো দিকপাল মডেলরা হাজির। বাঙালি বলতে অবশ্য শুধু আমিই। জোরকদমে রিহার্সাল চলছে, আমরা খুব উত্তেজিত। জান-প্রাণ ঢেলে কাজ করছি। এ বার হয়েছে কী, যে হোটেলে শো হচ্ছে, সেখানে আরও কিছু ইভেন্ট চলছিল। সেই ইভেন্টে দুজন ভদ্রলোক এসেছিলেন। তাঁরা শো দেখে সোজা আমার কাছে এসে হাজির। ‘আমরা মডেলিং এজেন্ট। তোমার কাজ দেখে মুগ্ধ। তুমি ভারতের সব অ্যাসাইনমেন্ট ক্যানসেল করে দাও। শুধু লন্ডনে কাজ করো। সব কাজ আমরা জোগাড় করে দেব।’ আমি তো স্তম্ভিত। মাথায় সব গোলমাল হয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছিল। কী উত্তর দেব এর? সে সময় মডেলিংকে কেরিয়ার করব কি না, সেই বিষয়েই নিশ্চিত নই। তা সত্ত্বেও ভারতে কত কাজ অপেক্ষা করে রয়েছে, কিন্তু এটা তো খুব বড় একটা সুযোগ। আমি ঘোর দোটানায়। এ দিকে এজেন্ট দুজন নাছোড়বান্দা। তাঁরা আমাকে কিছুতে দেশে ফিরতে দেবেন না। জোর করে রেখে দেবেন ওখানে।
সারা জীবন লন্ডন আঁকড়ে থেকে কাজ করা হয়নি আমার। কিন্তু সেই মুহূর্তে ওই ‘ডাক আসা’টা নিয়েই খুব হইচই হয়েছিল মডেলিং ইন্ডাস্ট্রিতে। আমাদের টিমের সক্কলে জেনে গিয়েছিল, দেশের লোককে জানিয়েওছিল। ঘটনাটা আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল। আসলে বাঙালি তো দূর, কোনও ভারতীয় মেয়েই তখনও বিদেশে গিয়ে মডেলিং করত না। কোনও সুযোগ আসত না এ ভাবে। যাই হোক, আমি বেশি মাতামাতি করিনি এ সব নিয়ে। শুধু এক বার মনে হয়েছিল, বাঙালিয়ানার সীমানাটা একটু বাড়িয়ে দিতে পেরেছি বোধহয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy