নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে অনুষ্ঠিত হল সহোদর-সহোদরা সম্মেলন। উদ্যোক্তা ‘নো ওয়ান মোর’ নামের এনজিও। যে পরিবারে একাধিক সন্তান-সন্ততি আছে, তাদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল সংস্থাটি। সংস্থার কর্তা বক্তৃতায় বললেন, বিগত কয়েক দশক ধরে ‘পরিবার পরিকল্পনা’র ঠেলায় প্রতিটি পরিবারে এখন মাত্র একটি করে শিশু জন্মাচ্ছে। তাই, দেখা দিচ্ছে নানা সামাজিক সমস্যা। সন্তানটি বড় হয়ে বিদেশে চলে গেলে, বয়স্ক মা-বাবার দুর্গতির সীমা থাকছে না। তার ওপরে নতুন প্রজন্ম জ্যাঠা-কাকা-মামা-পিসি কাকে বলে, তা-ও জানছে না। সংস্থাটি মেট্রোপলিটান শহরের যুবক-যুবতীদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে, শতকরা ৭৮ জন ‘কাজিন’ শব্দটা জানলেও, মেসোমশাই ও পিসেমশাইয়ের পার্থক্য একেবারেই বোঝে না। সমাজতাত্ত্বিকরা গভীর উদ্বেগে। এমন চলতে থাকলে ভাই-বোন সম্পর্কটাও উঠে যাবে।
বাজারও সংকটে। রাখি আর ভাইফোঁটার মতো লাভজনক দিনগুলোও অবলুপ্তির পথে। নতুন প্রজন্ম শেষে সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পাতানো ভাই-বোনদের ট্যাগ করে ‘হ্যাপি ব্রাদার্স ডে’ বা ‘লাভ ইউ সিস্টার’ উইশ করে কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়। সম্মেলনে দাবি উঠেছে, এখন থেকে অন্তত দুটো বাচ্চা আসুক প্রতিটি পরিবারে। তা হলেই, আগামী দিনে অসংখ্য মধুর সম্পর্ক ফিরে আসবে। মনস্তাত্ত্বিকরাও বলছেন, মানুষ যে এখন এত একা, নির্বান্ধব, অসহায় বোধ করে, প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে প্রায় সারা ক্ষণই নিরাপত্তার অভাবে ভোগে, আত্মহত্যার হারও বেড়ে গেছে, তার একটা বড় কারণ, এখন মানুষের শৈশবটা কাটে কোনও ‘সাপোর্ট সিস্টেম’ ছাড়াই, যা আগেকার কালে ঘরে ঘরে মজুত ছিল। সেই দিন ফিরিয়ে আনার স্বপ্নে, সংস্থাটি সেই দম্পতিদের সম্মানিত করল, যাঁরা অনেক ভাইবোন উত্পাদন করেছেন। ভাইবোনরাও প্রতিজ্ঞা করলেন, মা-বাবা’দের ঐতিহ্য এগিয়ে নিয়ে যাবেন!
বিশ্বজিত্ সরকার, বালি, দুর্গাপুর