বসন্তের শুরুতে পাওয়া যায় সজনে ফুল। যা তার পরে আর সারা বছরে সে ভাবে পাওয়া যায় না। ঠিক তেমনই এক অল্প সময়ের মরসুমি সব্জি হল কচি সজনে ডাঁটা। বসন্তের শেষ দিকে বাজারে ওঠে ওই কচি সজনে ডাঁটা। নরম, হিলহিলে সরু সজনে ডাঁটাও ফাল্গুনের শেষ আর চৈত্রের শুরুর ক’টি দিন ছাড়া আর পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ এক মাসের মধ্যেই ওই ডাঁটা পেকে যাবে। তার পরে আবার এক বছরের অপেক্ষা!
আবহাওয়া বদলের সময়ে যখন চারপাশে জ্বর, ঠান্ডা লাগা, হাঁচি-কাশির পাশাপাশি আরও নানা রকম রোগ বাড়ে, তখন মরসুমি শাকসব্জিকেই প্রাকৃতিক নিরাময়ের উপায় বলে মানেন অনেকে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরা সজনে ডাঁটায় রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানও। যা রোগব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তৈরি রাখে শরীরকে। তাই মরসুমি সব্জি বেশি করে খাওয়ার কথা বলেন চিকিৎসকেরাও। বসন্তের শেষ পর্বে তাই ভাতের পাতে থাক মরসুমি কচি সজনের বাটিচচ্চড়ি।
কী ভাবে বানাবেন?
বাটিচচ্চড়ি রান্নার একটি ধরন আছে। তা হল, সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে সেজে বাটি বা পাত্রে বসিয়ে ঢাকাচাপা দিয়ে রান্না। কচি সজনে ডাঁটার রান্নাটি সেই ভাবেও করা যায় আবার একই উপকরণ দিয়ে কড়ায় কষিয়ে নিয়েও রাঁধতে পারেন।
উপকরণ:
১৫০ গ্রাম নরম সজনে ডাঁটা
১টি মাঝারি মাপের আলু
১টি মাঝারি মাপের টম্যাটো
৩-৪ টি কাঁচালঙ্কা
২ টেবিল চামচ সর্ষের তেল
১/২ চা-চামচ কালো জিরে
১ টি শুকনো লঙ্কা
১ টেবিল চামচ কালো সর্ষে
১ টেবিল চামচ সাদা সর্ষে
১ টেবিল চামচ পোস্ত
১ চা-চামচ হলুদগুঁড়ো
১/২ চা-চামচ কাশ্মীরি লঙ্কাগুঁড়ো
স্বাদমতো নুন
সামান্য চিনি
প্রণালী : আলু আর ডাঁটা ভাল করে ধুয়ে লম্বাটে মাপে কেটে নিন। টম্যাটোও না কুচিয়ে লম্বাটে আকারে কেটে নিন। একটি পাত্রে দু’রকম সর্ষে, পোস্ত এবং কাঁচালঙ্কা চিরে অন্তত ১৫ মিনিট ভিজিয়ে তার পরে বেটে নিন।
কড়াইয়ে তেল দিয়ে প্রথমে আলু ভেজে নিন। আলু ভাজার সময়ে নুন এবং হলুদ গুঁড়ো দিয়ে ভাজবেন। আলু ভাজা হয়ে গেলে তুলে রাখুন। এ বার ওই তেলেই শুকনো লঙ্কা আর কালোজিরে ফোড়ন দিয়ে কিছুটা ভেজে দিয়ে দিন হলুদ এবং লঙ্কার গুঁড়ো। খানিকটা নেড়েচেড়ে দিয়ে দিন কেটে রাখা টম্যাটো। এক মিনিট পরে টম্যাটো নরম হলে দিন সর্ষে-পোস্ত বাটা।
বেশ কিছু ক্ষণ মশলা কষানোর পরে তেল ছাড়তে শুরু করলে কেটে রাখা ডাঁটা দিয়ে খানিক ক্ষণ কষিয়ে তাতে জল দিয়ে ঢেকে রান্না হতে দিন কিছু ক্ষণ। মিনিট তিনেক পরে ঢাকা খুলে আলু দিয়ে আরও এক বার নাড়াচাড়া করে ঢাকা দিয়ে রান্না হতে দিন। ২-৩ মিনিট পরে ঢাকা খুলে দেখুন ঝোল যতটা গাঢ় চাইছিলেন ততটা হয়েছে কি না। হয়ে গেলে উপরে কাঁচা সর্ষের তেল ছড়িয়ে আঁচ বন্ধ করে কিছু ক্ষণ চাপা দিয়ে রেখে তার পরে পরিবেশন করুন ভাতের সঙ্গে।