নামটি বেশ মিষ্টি। খস খস শরবত। আসলে বাঙালির প্রিয় পোস্তকে ওই নামেই ডাকে ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলের মানুষ। খস খস। তবে নামে আলাদা হলেও পোস্তের কাজ নিয়ে দ্বিমত নেই কোনও। পোাস্ত যে শরীর ঠান্ডা করতে ওস্তাদ, তা একবাক্যে মানে বঙ্গোপসাগর থেকে আরবসাগর তীরের মানুষজনও। সেই আরবসাগর তীরের কোঙ্কন উপকূলেরই শরীর ঠান্ডা রাখার পানীয় পোস্তর শরবত।
বাঙালি যেমন গরমে পেট ঠান্ডা রাখার জন্য ভাতের পাতে পোস্ত রাখে, কোঙ্কন উপকূলেও তেমনই নানা রান্নায় পোস্ত খাওয়ার চল আছে। বাঙালি যে পোস্ত দিয়ে আলুপোস্ত, ঝিঙেপোস্ত, পোস্তবাটা কিংবা পোস্তের বড়া বানিয়ে খায়, কোঙ্কনিরা বিশেষ করে গোয়ায় সেই পোস্ত ব্যবহার করা হয় মুরগির মাংস থেকে শুরু করে ডিমের কারি, এমনকি পায়েসেও। তবে কোঙ্কন উপকূলের পোস্তের শরবত এই সব কিছুর থেকে আলাদা। তার ইতিহাস প্রাচীন। এ শরবত বহু যুগ ধরে খাওয়া হয়ে আসছে গোয়া, মহারাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূল, এমনকি কর্নাটকেরও কিছু কিছু অঞ্চলে।
পোস্তর শরবত সেখানে কেবল শরবত নয়, গরমের স্বাস্থ্যকর পানীয়। খেলে মনে হতেই পারে চারপাশে আবহাওয়ার পারদ ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে। তবে আরামের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণও জোগাবে খস খস শরবত। যাকে খস খস রস বা খস খস উধা নামেও ডাকার চল আছে।

বাঙালি যেমন গরমে পেট ঠান্ডা রাখার জন্য ভাতের পাতে পোস্ত রাখে, কোঙ্কন উপকূলেও তাই। তারা পোস্ত দিয়ে শরবত বানিয়ে খায়। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে বানাবেন?
পোস্তের শরবত বাড়িতেই বানিয়ে নেওয়া যায়। তার জন্য খুব বেশি ঝক্কিরও দরকার নেই। সামান্য কয়েকটি উপকরণে মিনিট দশেকেই তৈরি হয়ে যাবে শরবত। গরমের দিনে নিজের জন্য বা পরিবারের জন্য বানিয়ে দেখতে পারেন।
উপকরণ: ১/২ কাপ পোস্ত
১/২ কাপ নারকেল কোরা
৩টি ছোট এলাচ
১/২ কাপ গুড়ের গুঁড়ো (স্বাদ অনুযায়ী কম-বেশি করে নিতে পারেন)
১ চা চামচ দারচিনির গুঁড়ো কিংবা কয়েকটি গোলাপের পাপড়ি সাজানোর জন্য
আরও পড়ুন:
প্রণালী: পোস্ত ভিজিয়ে রাখুন। এ বার মিক্সিতে ভেজানো পোস্ত, নারকেল বাটা, এলাচ, গুড় এবং এক কাপ জল দিয়ে ভাল ভাবে বেটে নিন। এই উপকরণে ২ জনের শরবত বানানো যাবে।
বেটে নেওয়া মিশ্রণটি একটি পাত্রে ঢেলে তাতে প্রয়োজনমতো জল দিন। ভাল ভাবে গুলিয়ে নিয়ে ফ্রিজে ঠান্ডা হতে দিন।
ঠান্ডা হলে গ্লাসে ঢেলে উপরে দারচিনির গুঁড়ো বা গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।