Advertisement
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
recipes

কলকাতার বুকে দুর্দান্ত বাঙালিখানার নতুন সন্ধান ‘চিলেকোঠা’, এদের বিশেষত্ব জানেন?

ই পয়লা বৈশাখে পুরনো কলকাতার আমেজ নিতে ঘুরে আসতে পারেন ডোভার লেনের ‘চিলেকোঠা’ থেকে। স্বাদ? যে কোনও বাঙালি রেস্তরাঁর সঙ্গে সমানে টক্কর দেবে এরা।

চিলেকোঠার অন্দরমহল।

চিলেকোঠার অন্দরমহল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:২০
Share: Save:

যতই গরম পড়ুক, পয়লা বৈশাখ নিয়ে বাঙালির উত্তেজনার কোনও খামতি নেই। প্যাচপ্যাচে গরম হোক বা ঝড়-বৃষ্টি, এ দিন সেজেগুজে বাঙালির সেলিব্রেশন চাই-ই চাই। উৎসবমুখর বাঙালির কথা ভেবেই এই সময় জুড়ে রেস্তোরাঁগুলিতে থাকে বাঙালি বাহারি খাবারের সম্ভার। সারা বছর মোগলাই, চাইনিজ আর কন্টিনেন্টাল চললেও এই সময়ে শুধুই বাঙালিয়ানা।

তাই এই পয়লা বৈশাখে পুরনো কলকাতার আমেজ নিতে ঘুরে আসতে পারেন ডোভার লেনের ‘চিলেকোঠা’ রেস্তরাঁ থেকে। নামের মতোই সাজ রেস্তরাঁর। ঠিক যেন মনে হবে উত্তর কলকাতার কোনও পুরনো বাড়ির ছাদে চিলেকোঠার ঘরে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমিয়েছেন। ঘোরানো লোহার সিঁড়ি এবং পুরনো কলকাতার থ্রি ডি পেন্টিং দেখে মনেই হবে না আপনি কোনও রেস্তরাঁয় এসেছেন। আর স্বাদ? যে কোনও বাঙালি রেস্তরাঁর সঙ্গে সমানে টক্কর দেবে ‘চিলেকোঠা’।

এহেন ‘চিলেকোঠা’-র মেনুতেও যে বাঙালিয়ানার ছড়াছড়ি থাকবে তা বলাই বাহুল্য। বাঙালির হারিয়ে যাওয়া রান্নাকে আবার উজ্জীবিত করাই চিলেকোঠার উদ্দেশ্য। এদের মেনুতে তাই রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার রান্না। এ ছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু ফিউশন ডিশ। বাংলাদেশের বিশেষ কিছু পদের সঙ্গে এদের পরোটা, বরিশালি মুর্গ বাটা, মটন ও মাছের আরও নানা বাহারি পদ খেতে ভুলে যাবেন না যেন!

আরও পড়ুন: গরমের দুপুরে অতিথিকে খাওয়ান চিংড়ির এই বাহারি ডিশ​

হররোজ বাঙালি রান্না তো বাড়িতেই হয়! তা হলে আবার রেস্তরাঁয় এ সব কেন খাব? এমন ভাবনা যাঁদের, তাঁদের খাতায় কেবলই ভুল বোঝা পড়ে রইল! রোজের বাঙালি খাবারকে কী ভাবে অসাধারণ করে তুলত হয়, কোথায় দিতে হয় হালকা ফিউশন টাচ, এর এক অদ্ভুত রহস্য জানেন চিলেকোঠার হেঁশেল সামলান যাঁরা। সারা বছর তো এমন মনকাড়া খাবারের সম্ভাব থাকছেই, তা ছাডাও পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ১৪ এবং ১৫ এপ্রিল তিনটি বিশেষ থালির আয়োজন করেছে চিলেকোঠা।

যাঁরা নিরামিষ খান, তাঁদের জন্য রয়েছে ‘বৈশাখী সব্জি বাহার’। এর মধ্যে রয়েছে আমপোড়া সরবত, ঝুরঝুরে আলু ভাজা, বেগুন ভাজা, পোস্তর বড়া, লুচি, ছোলার ডাল, পোলাও, পুরভরা আলুর দম, ছানার ডালনা, এঁচোড় ডালনা, আমের চা‌‌‌‌‌টনি, পাঁপড় ও মিষ্টি। এই থালির দাম ৪৪০ টাকা।

দ্বিতীয় থালি‌‌টি হল ‘বৈশাখী আহারের থালি’। এতে রয়েছে আমপোড়া সরবত, ঝুরঝুরে আলু ভাজা, বেগুন ভাজা, পোস্তর বড়া, বেগুন ভাজা, ফিশ ফ্রাই, মাছমাখা, ছোলার ডাল, লুচি পোলাও, মাটন কষা, ইলিশ ভাপা, আমের চাটনি, পাঁপড়, মিষ্টি ও পান। এই থালির দাম ৭৫০ টাকা।

তৃতীয় থালি ‘বৈশাখী বাহারি ভোজ’-এর দাম ৯২০ টাকা। এর মধ্যে রয়েছে আমপোড়া সরবৎ, ১ পিস চিকেন উইং, ১ পিস ফিশ ফ্রাই, টক ঝাল মিষ্টি প্রন, চিকেন তেহরি, ঢাকাই রোস্টেড চিকেন এবং ২ পিস ডাকবাংলো মাটন, ১ পিস ইলিশ ভাপা, আমের চাটনি, পাঁপড় এবং মিষ্টি।

ফিউশন ও বাঙালি দুই রকমের রান্নাই আপনার স্বাদকোরকে আনবে আলাদা আরাম। এই রেস্তরাঁর দু’টি রেসিপি কিন্তু সহজে বানিয়ে ফেলতে পারবেন বাড়িতেও। দেখে নিন কী ভাবে বাড়িতেই হানা দিতে পারে চিলেকোঠার স্বাদ।

তেহরি মটন

উপকরণ

গোবিন্দ ভোগ চাল: ৩০০ গ্রাম

মটন: ৫০০ গ্রাম

সরষের তেল

ঘি: পরিমাণ মত

জায়ফল গুড়ো: ১/২ চা চামচ

জয়ত্রী গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ

কেওড়ার জল: ১ টেবিল চামচ

গোলাপ জল: ১ টেবিল চামচ

গরম মশলা: এক চিমটি

পেঁয়াজ কুচি: ১/২ চা চামচ

আদা বাটা: ১/২ চা চামচ

রসুন বাটা: ১/২ চা চামদ

হলুদ গুঁড়ো: পরিমাণ মত

কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো: পরিমাণ মত

প্রণালী

কড়াইতে প্রথমে সম পরিমাণ সরষের তেল ও ঘি দিন। এর পর পেঁয়াজ দিয়ে, সেটিকে অল্প ভেজে তার মধ্যে আদা, রসুন বাটা দিন। এবার তাতে মটনের পিসগুলো দিন এবং সঙ্গে হলুদ গুঁড়ো, কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। এর পরে এটি স্টিমে দিয়ে দিন ও তার মধ্যে জায়ফল গুঁড়ো, জয়ত্রী গুঁড়ো, কেওড়ার জল দিয়ে মটনগুলোকে নরম হতে দিন। অন্য দিকে গোবিন্দ ভোগ চালে খুব বেশি পরিমাণ জল না দিয়ে ভাত বসান, যখন ভাত ৭০-৮০% হয়ে যাবে, তখন তাতে মটন দিয়ে সঙ্গে কেওড়ার জল, গোলাপ জল, জয়ত্রী গুঁড়ো অল্প করে দিয়ে দমে দিয়ে দিন। এভাবে ৫-৬ মিনিট দমে থাকার পর তৈরি হয়ে যাবে তেহরি মটন।

আরও পড়ুন: নিরামিষেই ভরবে পেট ও মন, রইল রেড পেপার ব্রকোলি সুপ-এর রেসিপি

তেহরি মটন ছাড়াও যে পদের জন্য এখানে বার বার যাওয়া যায়, তা হল বরিশালি মুর্গ বাটা। পয়লা বৈশাখে তাই চাইনিজ, মোগলাই ছেড়ে ওপার বাংলার এই খাবার চেখে দেখতেই পারেন। চিকেনের একঘেয়ে স্বাদ বদলাতে চিলেকোঠার বরিশালি মুরগ বাটা একাই একশো।

বরিশালি মুর্গ বাটা

উপকরন

চিকেন কিমা: ২৫০ গ্রাম

সরষের তেল

পাঁচ ফোড়ন: এক চিমটি

পেঁয়াজ কুচি: ১/২ চা চামচ

রসুন কুচি: ১/২ চা চামচ

শুকনো লঙ্কা: ১/২ টি

ধনে পাতা

কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ

হলুদ: ১/২ চা চামচ

জিরে বাটা: পরিমাণ মত

প্রণালী: প্রথমে প্যানের মধ্যে সরষের তেল দিয়ে সেটি গরম করে নিন এবং তার মধ্যে পাঁচ ফোড়ন ও শুকনো লঙ্কা দিয়ে দিন। এর পর তাতে পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, ছোট ছোট করে কাটা চিকেন কিমা, হলুদ, কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো ও জিরে বাটা দিয়ে ভাজতে থাকুন। পুরোপুরি রান্না হয়ে গেলে সেটিকে শিল বাটাতে বেটে নিন। বাটা শেষ হয়ে গেলে, এর পর তার উপরে ধনে পাতা দিয়ে কাঁচা সরষের তেল ছড়িয়ে দিন। যদি চান তাহলে উপরে একটু কাচা পেঁয়াজ-লঙ্কাও দিয়ে দিতে পারেন।

৭/২বি, ডোভার লেনের এই রেস্তরাঁ খোলা থাকে বেলা ১২ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত। দু’জন খেতে খরচ পড়বে কর-সহ ১২০০ টাকা।

অন্য বিষয়গুলি:

Chilekotha চিলেকোঠা Bengali Cuisine Kolkata Restaurants Bengali New Year 2019 বাংলা নববর্ষ Poila Baisakh Special Bengali New Year
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy