এলাহি খাওয়াদাওয়া হোক বা সাদামাঠা, ডাল থাকবেই খাবারের পাতে। সিংহভাগ বাঙালির ঘরে একই ছবি। ডাল রান্নার ধরনধারণ এক এক বাড়িতে এক এক প্রকার। তবে ব্যস্ত জীবনে রান্নাবান্নার কাজ যত দ্রুত হবে, ততই ভাল। কিন্তু কখনও কখনও ডাল বানানো মানে দীর্ঘ প্রতীক্ষা। আগুনের আঁচ বাড়ানো, আঁচ কমানো, সেদ্ধ হওয়ার জন্য বার বার পরীক্ষা করে দেখা— বেশ সময়সাপেক্ষ। এমতাবস্থায় এমন কিছু টোটকা জানা থাকলে সুবিধা। যাতে সারা দিন পর বাড়ি ফিরে রান্না করাটা আর ক্লান্তিকর মনে হবে না, বা খিদে পেটে নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে না। তেমনই রন্ধনপ্রণালীর গোটা কয়েক টোটকার সন্ধান দেওয়া হল, যেগুলি প্রয়োগ করলে চটজলদি ডাল তৈরি হবে এবং স্বাদেও খামতি পড়বে না।
রান্নার আগে ভেজে নেওয়া: শুকনো খোলায় ডালের দানা ভেজে নিলে অনেক সময়ে দ্রুত সেদ্ধ হয়। এর ফলে দানায় জমে থাকা আর্দ্রতা উবে যেতে পারে। ফলে তুলনায় দ্রুত সেদ্ধ হয়ে যেতে পারে। তা ছাড়া এই টোটকার ফলে দানার স্বাদ বৃদ্ধি পায়। ২-৩ মিনিটের রোস্ট করার পদ্ধতি ডালের ঘ্রাণ ও স্বাদ বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সঠিক দানা বেছে নেওয়া: হাতে সময় নেই, অথচ ডাল রাঁধতেই হবে? সে ক্ষেত্রে এমন ডাল বেছে নিন, যা রান্না হতে কম সময় লাগে। যেমন, মুগডাল, মুসুরডাল, অড়হর ডাল দ্রুত সেদ্ধ হয়। কিন্তু বিউলি এবং ছোলার ডাল তৈরি হতে তুলনায় বেশি সময় নেয়। ছোট ডালের দানা দ্রুত জল শোষণ করতে পারে বলে তাড়াতাড়ি নরমও হয়।
ডালের প্রকারভেদ। ছবি: সংগৃহীত।
মাঝপথে ঘেঁটে দেওয়া: ডালের দানা নরম হতে অতিরিক্ত সময় নিচ্ছে? মাঝপথে কার্যকরী এই টোটকা প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। ডাল রান্না হওয়ার ১৫-২০ মিনিট পেরিয়ে গেলে কাঠের বা স্টিলের কাঁটা দিয়ে ডাল ঘেঁটে নিন। এর ফলে দানা ভেঙে গিয়ে চটজলদি সেদ্ধ হয়ে যায়। তবে অতিরিক্ত জোরে বা অতিরিক্ত সময় ধরে ডাল ঘাঁটলে স্বাদ নষ্ট হয়ে যাবে।
সঠিক সময়ে নুন দেওয়া: আগেভাগে নুন দিয়ে দিলে অনেক ক্ষেত্রে ডাল সেদ্ধ হতে সময় লেগে যায়। ডালের দানা নরম না হওয়া পর্যন্ত নুন যোগ করাই উচিত নয়। রান্নার শেষের দিকে নুন দিলে দ্রুত সেদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি ডালের স্বাদও অটুট থাকে।
আরও পড়ুন:
সঠিক সময়ে টম্যাটো দেওয়া়: নুনের মতোই ডালে টম্যাটো যোগ করার নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। নয়তো সেদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। তেঁতুল, লেবুর মতো টম্যাটো, অর্থাৎ টক জাতীয় খাবার ডাল সেদ্ধ হওয়ার গতি শ্লথ করে দেয়। তাই ডাল পুরোপুরি সেদ্ধ হওয়ার পর টম্যাটো বা ফোড়েনর উপকরণ দেওয়া উচিত।
বেকিং সোডা যোগ: সাবেক পন্থা। কিন্তু কার্যকর। এক চিমটে বেকিং সোডা যোগ করলে জলে ক্ষারের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে ডালের দানা দ্রুত ভেঙে যেতে থাকে। কিন্তু সোডার পরিমাণ বেড়ে গেলে আবার ডালের স্বাদ ও রং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই পরিমাপ বুঝে বেকিং সোডা দিতে হবে। এক বাটি ডালের জন্য একটি চা-চামচের আট ভাগের এক ভাগ পরিমাণই যথেষ্ট। চটজলদি ডাল সেদ্ধ হয়ে যেতে পারে এই টোটকা প্রয়োগ করলেও।