ইসবগুল নামটা অচেনা নয়। বাড়িতে বয়স্ক সদস্য থাকলে এবং বয়সজনিত কারণে তাঁদের হজমের বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে অনেক সময়েই ইসবগুলের প্রয়োজন পড়ে। রাসায়নিক বর্জিত ফাইবারে সমৃদ্ধ ইসবগুল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরাও। হজমের সুবিধার জন্য কেউ ইসবগুল খান সকালে। কেউ আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার জন্য ইসবগুল রাতে খাবার পরে গরম জল বা গরম দুধে ভিজিয়ে খান। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বা কোলেস্টেরলে রাশ টানতেও খালি পেটে জলে ইসবগুল আর লেবুর রস মিশিয়ে খান অনেকে। সেই ইসবগুল দিয়ে খাবারও বানানো যায় জানতেন কি? সমাজমাধ্যমে স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার রেসিপি দেওয়া এক ফুড ব্লগার ঋতু খেমকা জানাচ্ছেন, ইসবগুলের সঙ্গে মুসুর ডাল দিয়ে তৈরি করা যেতে পারে পাউরুটি। তাতে প্রাতঃরাশে স্বাস্থ্যকর ফাইবার আর প্রোটিনও খাওয়া হবে। একই সঙ্গে বিদায় জানানো যাবে ক্ষতিকর ময়দাকেও।
ইসবগুল কেন উপকারী?
ইসবগুল ফাইবারে ভরপুর। এক চামচ ইসবগুলে রয়েছে চার গ্রাম ফাইবার। যা কি না শরীরের দৈনিক প্রয়োজনের ১৫ শতাংশ। পুষ্টিবিদেরা বলেন, নিয়মিত খাবারে পরিমাণমতো ফাইবার রাখলে তা হৃদরোগ, স্ট্রোক, হাইপারটেনশন, ডায়াবিটিস, হজমের রোগ এবং কিছু ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়। এ ছাড়া স্থূলত্বকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়েরিয়ার মতো সমস্যায়, কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে ফাইবার।

ইসবগুলের পাউরুটি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
ইসবগুল দিয়ে বেকিং সম্ভব?
ইসবগুলের সুবিধা হল এতে একদিকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। ১০০ গ্রাম আটায় যেখানে ফাইবারের পরিমাণ ২.৭ গ্রাম, ১০০ গ্রাম ওটসে যেখানে ফাইবার রয়েছে ১০ গ্রামের কিছু বেশি। সেখানে ১০০ গ্রাম ইসবগুলে রয়েছে ৮০ গ্রাম ফাইবার। তবে আটা দিয়ে কেক বা পাউরুটি বানানো হলেও ওটস দিয়ে সেভাবে বেক করা যায় না। কারণ ওটস সহজে বেকিংয়ের বাকি উপকরণের সঙ্গে মেশে না। ইসবগুল কিন্তু সে দিক থেকে বাকিদের থেকে। খুব সহজেই বেকিংয়ের উপকরণের সঙ্গে মিশে যেতে পারে ইসবগুল।
কী ভাবে বানাবেন ইসবগুলের পাউরুটি?
উপকরণ: ১ কাপ মুসুর ডাল
৪ টেবিল চামচ ইসবগুল
১/২ চা চামচ নুন
দেড় টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
১/৪ কাপ দই
১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা
১/২ টেবিল চামচ লেবুর রস
প্রণালী: মুসুর ডাল জলে ধুয়ে সারারাত বা অন্তত ৪-৫ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। পরে জল ঝরিয়ে ওই মুসুর ডাল, ইসবগুল, নুন, তেল, দই, বেকিং সোডা এবং লেবুর রস ব্লেন্ডারে দিন। লেবুর রস দেওয়ার সময় সেটি বেকিং সোডার উপর দেবেন। তাতে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া হবে তাতে মিশ্রণটিকে ফুলতে সাহায্য করবে।
সবকিছু দিয়ে ব্লেন্ডারে ভাল ভাবে মেশান। মিশ্রণটি এমন হবে যাতে হাতে করে গোল করলে আকৃতি ধরে রাখতে পারে। এ বার মিশ্রণটিকে চার ভাগে ভাগ করে গোল বলের আকার দিয়ে একটি ট্রে-তে পার্চমেন্ট পেপার দিয়ে তার উপর চার ভাগে ভাগ করে ১৮০ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেডে প্রিহিট করা অভেনে আধ ঘণ্টা বেক করুন। অথবা একটি ব্রেডমোল্ডে পার্চমেন্ট পেপার রেখে পুরো মিশ্রণটিই ঢেলে বেক করুন। অভেন বন্ধ করে ১০-১৫ মিনিট ঠান্ডা হতে দিন। তারপরে পছন্দের সঙ্গত দিয়ে পরিবেশন করুন।