Advertisement
E-Paper

‘বয়স আমার মুখের রেখায়...’! অকাল বার্ধক্যের জন্য দায়ী ৪০০ জিনের হদিস পেলেন বিজ্ঞানীরা

অকাল বার্ধক্যের জন্য দায়ী ৪০০টি জিনকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন আমেরিকার ‘নিউ ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডার’-এর বিজ্ঞানীরা। নেচার জেনেটিক্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁদের গবেষণাপত্র।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৫ ০৯:২১
জিনগত কারণেই অকাল বার্ধক্য নেমে আসে শরীর জুড়ে, বলছে গবেষণা।

জিনগত কারণেই অকাল বার্ধক্য নেমে আসে শরীর জুড়ে, বলছে গবেষণা। গ্রাফিক আনন্দবাজার ডট কম।

মুখের রেখায় নয়, বয়স আসলে ‘ধরা পড়ে’ জিনের গঠনে। হালফিলের এক গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন কয়েক জন চিকিৎসা বিজ্ঞানী। তাঁদের মতে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে জিনগত কারণেই অকাল বার্ধক্য নেমে আসে শরীর জুড়ে। ত্বকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ‘প্রিম্যাচিয়োর রিঙ্কলস’।

অকাল বার্ধক্যের জন্য দায়ী এমন ৪০০টি জিনকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন আমেরিকার ‘নিউ ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডার’-এর ওই বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ওই জিনগুলির সক্রিয়তার কারণেই অনেকে কম বয়সেই অনেকে বুড়িয়ে যান। আবার অনেকের ৯০ বছরেও মুখে স্পষ্ট হয় না বলিরেখা। বস্তুত, ওই জিনগুলি বার্ধক্য প্রক্রিয়ার বিভিন্ন কারণকে প্রভাবিত করে। গবেষণা বলছে, একাধিক জৈবিক পথ ধরে শরীর এবং মনে জরার আগমন হয়। ওই জিনগুলি বিভিন্ন বয়সজনিত শারীরবৃত্তীয় ও বিপাকীয় সমস্যা বৃদ্ধি করে বার্ধক্যকে তরান্বিত করে। তাদের সক্রিয়তার কারণেই কম বয়সেই হয় ডায়াবিটিস, অ্যালঝাইমার্স বা বাত। শরীর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হারানোয় ঘন ঘন ‘ফ্লু’তে আক্রান্ত হতে হয়।

চলতি মাসে নেচার জেনেটিক্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, কলোরাডোর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন বিজ্ঞানীদেও ওই গবেষণাপত্র। সেখানে জরার আগমনের সঙ্গে শরীরে বাসা বাঁধা একাধিক দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতাকে চিহ্নিত করে সেগুলির জন্য দায়ী জিনগুলির প্রকারভেদ করা হয়েছে। ‘জিরোসায়েন্স হাইপোথিসিস’ মেনে জিনগুলিকে মোট সাতটি গোত্রে বিভাজন করেছেন গবেষকেরা। দলের নেতা ইসাবেল ফুট জানিয়েছেন, অকাল বার্ধক্য রুখতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে এই গবেষণার ফলাফল।

আমেরিকায় চিকিৎসকেরা মূলত ৩০টি সূচক ব্যবহার করে দুর্বলতা মূল্যায়ন করেন। হাঁটার গতি, ওজন তোলার ক্ষমতা, শক্ত করে ধরার (গ্রিপ) সামর্থ্য, থেকে শুরু করে স্নায়বিক সক্ষমতা এমনকি, স্মৃতিশক্তি পর্যন্ত অনেক কিছুই রয়েছে এই তালিকায়। গবেষকেরা দেখেছেন, ৬৫ বছরে পৌঁছে ৪০ শতাংশ মার্কিন নাগরিকই দুর্বলতায় আক্রান্ত হন। আর এর নেপথ্যে থাকা মোট ৪০৮টি জিনকে সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করতে পেরেছেন তাঁরা। ইসাবেলের কথায়, ‘‘ওই জিনগুলিই অস্বাস্থ্যকর বার্ধক্য ডেকে আনে।’’ তবে এক সঙ্গে সবগুলি একই মানব দেহে সক্রিয় হয় না। তাই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী কোনও বৃদ্ধ অ্যালঝাইমাআর্সে আক্রান্ত হতে পারেন। আবার প্রবল ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অকালবৃদ্ধ হতে পারেন তীক্ষ্ণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী!

মানব শরীরের অধিকাংশ কোষে ক্রোমোজোম থাকে ২৩ জোড়া করে। শরীরের ক্রোমোজমে যে ডিএনএ (ডিঅক্সি-রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) থাকে, তার একটা ‘লেজ’ (টেল) থাকে। সেই ‘লেজ’টার নাম—টেলোমেয়ার। বার্ধক্যের দিকে মানুষ যত এগোতে থাকে, ততই আকারে ছোট হতে থাকে সেই টেলোমেয়ার। বস্তুত, টেলোমেয়ারের ‘ক্ষয়’ রোধ করে দিতে পারলেই রুখে দেওয়া যেতে পারে শারীরবৃত্তীয় অবক্ষয়। মিলতে পারে ‘অমৃতকুম্ভের’ সন্ধান। বস্তুত, আমাদের দেহকোষের ডিএনএগুলি অনবরত বিভাজিত হতে থাকে। তাই অত্যাধুনিক জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সাহায্যে ভবিষ্যতে ‘আয়ুষ্মান জিন’ উদ্ভাবনের মাধ্যমে জরা নিয়ন্ত্রণের আশা রয়েছে যথেষ্টই। ‘নিউ ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডার’-এর গবেষণা কি নতুন আলোর সন্ধান দেবে?

Genetics Early Ageing Gene Structure Genetic Engineering
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy