বজরংবলীর লাফ দেখাচ্ছে ‘ড্রাগনের দেশ’! মহাকাশ ছোঁয়ার ১৫ বছরের মধ্যেই পাকাপাকি ভাবে মহাকাশ স্টেশন বানানোর তোড়জোড়-প্রস্তুতি শুরু করে দিল চিন!
বৃহস্পতিবার রওনা হল ‘তিয়াংগং-২’

দেখুন উৎক্ষেপণের ভিডিও
সেই মহাকাশ স্টেশন বানানোর জন্য পরীক্ষামূলক ভাবে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় বারের জন্য উপগ্রহ পাঠাল চিন, গোবি মরুভূমি থেকে। যার নাম- ‘তিয়াংগং-২’। যা আদতে উপগ্রহ হলেও আগামী দিনে চিনা মহাকাশ স্টেশনেরই একটি প্রোটো-টাইপ। এক মাসের জন্য ওই ‘মডেল মহাকাশ স্টেশনে’ গিয়ে থাকার জন্য অক্টোবরেই উড়ে যাচ্ছেন দুই চিনা মহাকাশচারী। গবেষণার জন্য। এ দিন গোবি মরুভূমি থেকে ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ রওনা হয় ‘তিয়াংগং-২’, মহাকাশের উদ্দেশে। চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘জিন হুয়া’ জানাচ্ছে, এ সবই আদতে পাকাপাকি ভাবে চিনা মহাকাশ স্টেশন গড়ে তোলার প্রস্তুতি। যাতে মহাকাশচারীরা থাকবেন। কোনও মহাকাশযান গিয়ে সেখানে নামতেও পারবে। ২০২২ সালের মধ্যেই তা চালু হয়ে যাবে। আর সে ক্ষেত্রে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও আমেরিকার পর চিনই হবে তৃতীয় দেশ, যাদের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন থাকবে পৃথিবীর বাইরে। যার নাম হবে ‘হেভেনলি প্যালেস-২’। দৈর্ঘ্য হবে ১৫ মিটার বা ৪৯ ফুটের কিছু বেশি। মানে প্রায় পাঁচ তলা একটা বাড়ি!
গোবি মরুভূমির এখান থেকেই মহাকাশে গেল ‘তিয়াংগং-২’

পাকাপাকি ভাবে ওই স্টেশন গড়ার জন্য পরীক্ষামূলক ভাবে চিন প্রথম উপগ্রহটি মহাকাশে পাঠিয়েছিল পাঁচ বছর আগে। তার নাম ছিল- ‘তিয়াংগং-১’। তার কাজকর্ম শেষ হয়ে গেলেও সেটি এখনও পৃথিবীর চার পাশে চক্কর মারছে। আর একটু একটু করে এগিয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে। ২০১৭ সালের মধ্যেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢোকার মুখে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার কথা ‘তিয়াংগং-১’-এর। ও দিকে, শুক্রবার থেকেই মহাকাশে তার কাজ শুরু করে দেবে ‘তিয়াংগং-২’। অক্টোবরে সেখানে গিয়ে এক মাস ধরে নানা রকমের গবেষণা চালাবেন দুই চিনা মহাকাশচারী। পাকাপাকি ভাবে চিনা মহাকাশ স্টেশন গড়ে তোলার জন্য। এই ‘তিয়াংগং-২’-এ থাকবে একটি ‘অ্যাটমিক ক্লক’ও। প্রতি তিন কোটি বছরে যার সময়ের হেরফের হয়।
চিনের প্রথম মহাকাশচারী। (ডান দিকে)

একুশ শতকে পা দেওয়ার পরেই মহাকাশ অভিযানে মন দেয় চিন। প্রথম মহাকাশযান পাঠায় ২০০১ সালে। আর তার দু’বছরের মধ্যেই (২০০৩ সালে) প্রথম মহাকাশচারী পাঠায় চিন। চিনের প্রথম মহাকাশচারী ইয়াং লিউই এখন রীতিমতো ‘জাতীয় নায়ক’। এর পর ২০১১ সাল থেকেই চিন শুরু করে দেয় মহাকাশ স্টেশন বানানোর প্রস্তুতি। ২০১১ সালেই মহাকাশে পাড়ি জমায় ‘তিয়াংগং-১’। এ বছর অগস্টে বিশ্বের প্রথম কোয়ান্টাম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায় বেজিং। মহাকাশের সঙ্গে পৃথিবীর ‘হ্যাক-প্রুফ’ যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য। আজ রওনা হল ‘তিয়াংগং-২’। ২০২৪ সালের মধ্যেই চাঁদে হাঁটার জন্য মহাকাশচারী পাঠানোর কথা ভেবে রেখেছে চিন। আর প্রথম চিনা ‘ল্যান্ডার’-এর মঙ্গলে নামার কথা ২০৫০ সালের মধ্যেই।
ভবিষ্যতে মঙ্গলে নামবে যে চিনা ল্যান্ডার, তার কম্পিউটার মডেল।

আরও পড়ুন- একটানা না পড়লেই পড়া বেশি ভাল হয় কেন