Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
science news

করোনাভাইরাসকে দেহের ভেতরেই ফাঁদ পেতে মারা সম্ভব! দাবি নয়া গবেষণার

তবে গবেষণাটি করা হয়েছে শুধুই গবেষণাগারে। ইঁদুরের মতো প্রাণী বা মানুষের উপর এখনও তা প্রয়োগ করে দেখা হয়নি।

কোভিড-১৯ ভাইরাস। -প্রতীকী ছবি।

কোভিড-১৯ ভাইরাস। -প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ১৫:১৭
Share: Save:

খুব ধুরন্ধর ‘সার্স-কভ-২’ ভাইরাসকে কি এ বার ফাঁদে ফেলা যাবে আমাদের শরীরের মধ্যেই? ভাইরাসটির খুব পছন্দের জায়গা আমাদের ফুসফুসেই পাতা যাবে সেই ফাঁদ? এমনটাই দাবি করলেন এক দল চিনা গবেষক। জানালেন, তাঁরা পলিমারের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা (ন্যানো পার্টিক্‌লস) দিয়ে কৃত্রিম ভাবে ফুসফুসের এমন কোষ বানিয়েছেন, যা আদতে জীবন্ত কোষ নয়। কোভিডের ফাঁদ। সেই ফাঁদের ভিতর ঢুকে পড়লে ভাইরাসটি আর তার বেঁচে থাকার রসদ পাবে না। মরে যাবে।

গবেষণাপত্রটি গত ১৭ জুন বেরিয়েছে ন্যানো বিজ্ঞান ও ন্যানো প্রযুক্তি সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ন্যানো লেটার্স’-এ। গবেষণাপত্রটির শিরোনাম- ‘সেলুলার ন্যানোস্পঞ্জেস ইনহিবিট সার্স-কভ-২ ইনফেক্টিভিটি’।

তবে গবেষণাটি করা হয়েছে শুধুই গবেষণাগারে। ইঁদুরের মতো প্রাণী বা মানুষের উপর এখনও তা প্রয়োগ করে দেখা হয়নি।

সার্স-কভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণের জন্যই আমরা আক্রান্ত হই করোনায়। গত ৬ মাসের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শরীরে ঢোকার পর আমাদের ফুসফুসই সবচেয়ে পছন্দের জায়গা সার্স-কভ-২ ভাইরাসের। আমাদেরই একটি প্রোটিন তাকে ফুসফুসের কোষের গায়ে সেঁটে থাকতে সাহায্য করে। তারই সাহায্য নিয়ে ভাইরাসটি আমাদের ফুসফুসের কোষের মধ্যে ঢোকে। তার পর দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটায়। একটি কোষে তাদের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেলে তারা সেই কোষের প্রাচীর ফাটিয়ে বেরিয়ে এসে ফুসফুসের অন্য কোষগুলিকেও একই ভাবে আক্রমণ করে।

গবেষকরা গবেষণাগারে দেখতে চেয়েছিলেন পলিমারের ন্যানো পার্টিক্‌লকে ফুসফুসের কোষের মতো ব্যবহার করলে সার্স-কভ-২’কে আমাদের শরীরের মধ্যে ধোঁকা দেওয়া যাচ্ছে কি না। তারা সেই পলিমারের ন্যানো পার্টিক্‌লকে ফুসফুসের জীবন্ত কোষ বলে মনে করছে কি না।

আরও পড়ুন- ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৭ হাজার নতুন সংক্রমণ, মোট মৃত্যু পেরলো ১৫ হাজার

আরও পড়ুন- লাদাখ ঘুরে এসে রিপোর্ট দিচ্ছেন নরবণে, তার পর স্থির পরবর্তী পদক্ষেপ

গবেষকরা দেখেছেন, ভাইরাসটি ধোঁকা খাচ্ছে। ফাঁদে পড়ছে। আর তার পর বাঁচার রসদ জোগাড় করতে না পেরে মরে যাচ্ছে।

এটা দেখতে গিয়ে গবেষকরা পলিমারের ন্যানো পার্টিক্‌লের উপর আমাদের ফুসফসের বা দেহের প্রতিরোধী ব্যবস্থার জীবন্ত কোষের একটি আস্তরণ দিয়ে দিয়েছিলেন।

গবেষকরা দেখেছেন, পলিমারের বাইরে থাকা ফুসফুসের কোষের আস্তরণ দেখেই তা পছন্দ হচ্ছে ভাইরাসটির। সে তার মধ্যে ঢুকে পড়ছে। কিন্তু ঢুকেই পাচ্ছে পলিমারটিকে। সেখানে সে আর জীবন্ত কোষ থেকে তার বেঁচে থাকার রসদ জোগাড় করতে পারছে না। ফলে, মরে যাচ্ছে।

গবেষকরা চাইছেন এ বার সেই ফাঁদটিকে ইঁদুরের মতো প্রাণী বা আমাদের শরীরে ঢুকিয়ে দিতে।

গবেষকদের দাবি, পলিমারটি আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক হবে না। তাঁদের ধারণা, আমাদের শরীরে ঢুকে ফাঁদে পড়ে মরে যাওয়ার পর ভাইরাসটির প্রাণহীন দেহ আর পলিমারটিকে বর্জ্য পদার্থ হিসেবে দেহ থেকে স্বাভাবিক পদ্ধতিতেই বের করে দিতে পারবে আমাদের প্রতিরোধী ব্যবস্থা।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এই পলিমার ন্যানো পার্টিক্‌ল নানা ধরনের প্রদাহও কমাতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus covid-19 nano letters bio decoy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE