Advertisement
E-Paper

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপে বাধা রাজনীতিও

মহাকাশ অভিযানে ভারত ইতিমধ্যেই প্রথম সারিতে উঠে গিয়েছে। বিশ্বের সব চেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপও এ দেশে বসবে কি না তা নিয়েও জল্পনা চলছে। জল্পনা যে একেবারে অবাস্তব নয়, তা মেনে নিয়েছেন খোদ কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ০৩:১৫

মহাকাশ অভিযানে ভারত ইতিমধ্যেই প্রথম সারিতে উঠে গিয়েছে। বিশ্বের সব চেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপও এ দেশে বসবে কি না তা নিয়েও জল্পনা চলছে। জল্পনা যে একেবারে অবাস্তব নয়, তা মেনে নিয়েছেন খোদ কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনও। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘‘ওই টেলিস্কোপ এ দেশে বসানোর জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তাই এ নিয়ে এখনই কোনও ঘোষণা করা যাবে না।’’ চিন-ভারত রাজনৈতিক লড়াইও টেলিস্কোপ বসানোর ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে বলে সরকারি সূত্রে খবর।

আমেরিকা, কানাডা, চিন, জাপানের সঙ্গে মিলে ৩০ মিটার ব্যাসবিশিষ্ট টেলিস্কোপ (থার্টি মিটার টেলিস্কোপ বা টিএমটি) তৈরিতে হাত লাগিয়েছে ভারত। মহাকাশ বিজ্ঞানের গবেষকেরা বলছেন, এটিই হতে চলেছে এ যাবৎকালের সব থেকে শক্তিশালী টেলিস্কোপ। প্রাথমিক ভাবে এটিকে বসানোর জন্য হাওয়াই দ্বীপের মউনা কিয়াকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যে জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের ধর্মীয় আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। সেই কারণেই সেখানে বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছে। এমনকী এর ফলে গোলমাল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। স্থগিত রয়েছে মউনা কিয়ায় টেলিস্কোপ বসানোর কাজ।

এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়ি় ভারতের এক মহাকাশবিজ্ঞানী জানান, মউনা কিয়ায় এই পরিস্থিতিেত জটিলতা তৈরি হওয়ায় পাঁচটি বিকল্প জায়গা বাছা হয়েছে। তার মধ্যে লাদাখের হানলে রয়েছে। হানলে উঁচু পাহাড়ি এলাকা। সেখানে দূষণ, জলীয় বাষ্প কম। ফলে বিভিন্ন জ্যোতিষ্ক স্পষ্ট ভাবে টেলিস্কোপে ধরা দেয়। শুষ্ক অঞ্চল হওয়ায় মেঘের বাধাও থাকে না। টিএমটি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত পুণের ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের অধিকর্তা সোমক রায়চৌধুরী

বলছেন, ‘‘আমরা টিএমটি-কে লাদাখে নিয়ে আসার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কিন্তু টিএমটি কোথায় বসবে, প্রস্তাবিত জায়গাগুলি যাচাই করে সংশ্লিষ্ট কমিটি তা ঠিক করবে। এটাও সত্যি যে তালিকায় লাদাখ সবার উপরে নেই।’’

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্রের খবর, ওই তালিকায় চিনের দু’টি জায়গা রয়েছে। তার পরে রয়েছে স্পেনের ক্যানারিস দ্বীপপুঞ্জ। চার নম্বরে রয়েছে লাদাখের হানলে এবং পাঁচ নম্বরে তিব্বত। চিলেতে ইতিমধ্যেই অন্য দু’টি বড় মাপের টেলিস্কোপ বসানো হচ্ছে। ফলে টিএমটি-ও সেখানে বসানো হবে কেন, তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। ক্যানারিসেও ব্রিটেন, স্পেন-সহ একাধিক দেশের টেলিস্কোপ রয়েছে। সে দিক থেকে লাদাখ পছন্দসই জায়গা হতেই পারে।

আবার লাদাখের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। বিজ্ঞানীদের অনেকেরই মতে, এই প্রকল্পে চিনের অংশীদারি রয়েছে। কিন্তু লাদাখে চিনের সরকারি কর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ঠিক যেমন ভাবে তিব্বতে বসানো হলে ভারতের বিজ্ঞানীদের সেখানে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।

এই সব পরিস্থিতি দেখে এ দেশের বিজ্ঞানীদের অনেকেরই আশঙ্কা, ভারতের কপালে শেষে রাজনীতিটাই বাধা হয়ে দাঁড়াবে না তো?

telescope Scientist
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy