Advertisement
E-Paper

ডাইনোসর যুগের এই উড়ন্ত সরীসৃপেরা কী খেত? ধোঁয়াশা কাটল জীবাশ্ম নিয়ে নতুন গবেষণায়

কোনও প্রাণীর খাদ্যাভাস কী ছিল, তা শারীরিক গঠন থেকে অনেকাংশে অনুমান করা যায়। তবে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পাকস্থলীর নমুনা পাওয়া অত্যন্ত জরুরী। তবে টেরাসরদের ক্ষেত্রে এমন নমুনা এখনও পর্যন্ত খুব বেশি পাওয়া যায়নি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:১৩
টেরাসর। ডাইনোসর যুগে উড়ে বেড়াত এই সরীসৃপেরা।

টেরাসর। ডাইনোসর যুগে উড়ে বেড়াত এই সরীসৃপেরা। —প্রতীকী চিত্র।

ডাইনোসর যুগে ওরা আকাশে উড়ে বেড়াত। বড়সড় চেহারার উড়ন্ত সরীসৃপ টেরাসর। এখনও পর্যন্ত টেরাসরদের বিভিন্ন প্রজাতির খোঁজ মিলেছে। তবে তাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে দীর্ঘ গবেষণার পরেও ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছিল। এ বার সেই ধোঁয়াশা কিছুটা হলেও কাটল। উড়ন্ত ওই সরীসৃপদের অন্তত একটি প্রজাতি যে তৃণভোজী ছিল, তা প্রমাণ হল সাম্প্রতিক গবেষণায়।

টেরাসরদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে এত দিন ধরে বিভিন্ন ধারণা প্রচলিত ছিল গবেষকদের মধ্যে। তবে সবই অনুমানভিত্তিক। এদের মধ্যে কোনও প্রজাতিকে ধরে মাংসাশী, কোনওটি পতঙ্গভুক, কোনও প্রজাতিকে মৎস্যভোজী, আবার কোনওটিকে তৃণভোজী বলে ধরে নেওয়া হত। তবে এত দিন পর্যন্ত কেবল মৎস্যভোজী হওয়ার বিষয়েও প্রমাণ মিলেছিল। তা-ও সব প্রজাতির নয়। সাম্প্রতিক গবেষণা ডাইনোসর যুগের এই উড়ন্ত সরীসৃপদের বিষয়ে নতুন তথ্যের জানান দিল।

কোনও প্রাণীর খাদ্যাভাস কী ছিল, তা শারীরিক গঠন থেকে অনেকাংশে অনুমান করা যায়। তবে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পাকস্থলীর নমুনা পাওয়া অত্যন্ত জরুরী। তবে টেরোসরদের ক্ষেত্রে এমন নমুনা এখনও পর্যন্ত খুব বেশি পাওয়া যায়নি। এখনও পর্যন্ত টেরোসরের পাঁচটি জীবাশ্মের সঙ্গে পাকস্থলীর নমুনার খোঁজ মিলেছিল। সেখানে আঁশ জাতীয় বস্তু পাওয়া গিয়েছে। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় উড়ন্ত সরীসৃপদের মধ্যে কিছু প্রজাতি ছিল মৎস্যভোজী।

সম্প্রতি বেজিঙে ‘চাইনিজ় অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস’-এর জীবাশ্মবিদ্যা বিভাগের গবেষক শাওলিন ওয়াং এবং তাঁর সহযোগীরা ‘সিনোপটেরাস অ্যাটাভিসামাস’-এর জীবাশ্মের পাকস্থলীর নমুনা পরীক্ষা করে দেখেন। ডাইনোসরদের যুগে আকাশে যে প্রাণীরা উড়ে বেড়াত, তাদের মধ্যে একটি সিনোপটেরাস। উত্তরপূর্ব চিনে খুঁজে পাওয়া ওই জীবাশ্মের পেটের অংশে অসংখ্য ছোট ছোট গ্যাস্ট্রোলিথ শণাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। জীবাশ্মের পেটের দিকের একটি অংশ থেকে পাওয়া গিয়েছে ৩২০টি ফাইটোলিথ। বস্তুত, ফাইটোলিথ হল একটি আনুবীক্ষণিক সিলিকা, যা গাছের মধ্যে তৈরি হয়। এর আগে কোনও টেরাসরের পাকস্থলীতে এমন নমুনা পাওয়া যায়নি।

তবে এই ফাইটোলিথগুলি যে ওই উড়ন্ত সরীসৃপের পেটেই ছিল, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আশপাশের অন্য নমুনাও পরীক্ষা করে দেখেন জীবাশ্মবিদেরা। ফাইটোলিথগুলি যে পরে অন্য কোথাও থেকে পাকস্থলীতে এসে জমেনি, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আশপাশের পাথরগুলি যাচাই করেনি তাঁরা। কিন্তু আশপাশের পাথরগুলিতে কোনও ফাইটোলিথ মেলেনি। অন্য কোনও তৃণভোজী প্রাণীকে খাওয়ার ফলে পেটে ওই ফাইটোলিথগুলি জমেছে কি না, তা-ও পরীক্ষা করে দেখা হয়। সে ক্ষেত্রে অন্য প্রাণীর দেহাবশেষের নমুনা (হাড়, আঁশ বা অন্য কিছু) পাকস্থলীর মধ্যে পাওয়ার কথা। তেমন কিছুও মেলেনি সিনোপটেরাসের জীবাশ্মে। যা দেখে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত, ‘সিনোপটেরাস অ্যাটাভিসামাস’ প্রজাতির টেরাসরেরা তৃণভোজীই ছিল। ‘সায়েন্স বুলেটিন’ সাময়িকীর সাম্প্রতিক সংখ্যায় গত মাসে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।

Dinosaur Fossils
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy