Advertisement
০২ মে ২০২৪

অবশেষে ধরা পড়ল চাঁচলের হনুমান

পাঁচ ঘন্টা ধরে বন দফতরের পাঁচ কর্মীর সঙ্গে লুকোচুরি খেলে তাদের নাকাল করে শেষপর্যন্ত জালে ধরা পড়ল গত দু’সপ্তাহ ধরে মালদহের রতুয়ার আড়াইডাঙ্গা এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানো হনুমানটি। একের পর এক ঘুমের ওষুধ মেশানো কলা খাইয়েও তাকে কাবু করতে না পেরে এদিনও একরকম আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন বন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু ফের কলার লোভে রাস্তায় নামতেই জাল ফেলে বন্দি করা হল তাকে।

জালে পড়ল সেই হনুমান। নিজস্ব চিত্র।

জালে পড়ল সেই হনুমান। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:২০
Share: Save:

পাঁচ ঘন্টা ধরে বন দফতরের পাঁচ কর্মীর সঙ্গে লুকোচুরি খেলে তাদের নাকাল করে শেষপর্যন্ত জালে ধরা পড়ল গত দু’সপ্তাহ ধরে মালদহের রতুয়ার আড়াইডাঙ্গা এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানো হনুমানটি।
একের পর এক ঘুমের ওষুধ মেশানো কলা খাইয়েও তাকে কাবু করতে না পেরে এদিনও একরকম আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন বন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু ফের কলার লোভে রাস্তায় নামতেই জাল ফেলে বন্দি করা হল তাকে। রতুয়ার কাগাচিরা এলাকা থেকে এদিন বিকালে হনুমানটি ধরা পড়ায় এলাকা জুড়ে স্বস্তি ফিরেছে।
মালদহের ডিএফও কৌশিক সরকার বলেন, ‘‘হনুমানটিকে ধরা হয়েছে। পর্যবেক্ষণের জন্য ২৪ ঘন্টা হনুমানটিকে বন দফতরের তত্ত্বাবধানে রাখা হবে। আহত হওয়ায় হনুমানটি এমন আচরণ করছিল কি না পশু চিকিত্সকরা তা দেখবেন। তারপর আদিনার জঙ্গলে হনুমানটিকে ছাড়া হবে।
রতুয়া-২ ব্লকের আড়াইডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের একবর্ণা সহ লাগোয়া কয়েকটি এলাকায় গত দু’সপ্তাহ ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছিল হনুমানটি। তার কামড়ে পাঁচ স্কুল পড়ুয়া সহ অন্তত ২০ জন বাসিন্দা আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিন ছাত্রকে চিকিত্সার জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাস্তায় তো বটেই এমনকি স্কুলে ও বাড়িতে ঢুকেও শরীরের মাংস খুবলে নিয়ে পালাত ওই হনুমানটি। ফলে স্থানীয় স্কুলে পড়াশুনা প্রায় লাটে উঠেছিল। হনুমানের তাণ্ডবে মঙ্গলবারও একবর্ণা গদাধর বিদ্যাপীঠে পঠন-পাঠন হয়নি। এদিনও হাতে গোনা কয়েকজন পড়ুয়া স্কুলে এসেছিল বলে স্কুল সূত্রেই জানা গিয়েছে।
এলাকাজুড়ে তাণ্ডব চালানো হনুমানকে ধরার দাবিতে সোমবার মালদহ-মাদিয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করেছিলেন বাসিন্দারা। তাদের বিক্ষোভের পর বিকালে হনুমান ধরতে নামলেও খালি হাতে ফিরতে হয় বন দফতরের কর্মীদের। বিকেল চারটে থেকে তিন ঘন্টা ধরে কলার সঙ্গে মেশানো কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খেয়েও দাপিয়ে বেড়ায় হনুমানটি। উল্টে সন্ধের পর হনুমানের তাড়া খেয়ে ফিরে যেতে হয় বন দফতরের কর্মীদের। তারপর এদিন সকাল ১১টা থেকে ফের অভিযানে নামেন বন দফতরের পাঁচ কর্মী।

বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এদিনও ওই হনুমানটিকে ধরতে কয়েক ডজন কলা নিয়ে গিয়েছিলেন বন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু ঘুমের ওষুধ মেশানো একের পর এক কলা খেয়ে দাপাদাপি আরও বেড়ে যায় হনুমানটির। কলা খেয়েই সে এক আমগাছ থেকে অন্য আমগাছে উঠে দাপিয়ে বেড়াতে তাকে। কলার লোভ দেখিয়ে কাছে নিয়ে আসার পরও তাকে জালে ধরতে বারবার ব্যর্থ হন বন দফতরের কর্মীরা। হনুমানটি ঘুমিয়ে পড়লে তাকে ধরা হবে ভেবে অপেক্ষা করেও লাভ হয়নি। শেষে কিছুটা নিস্তেজ হয়ে পড়লে কলা খেয়ে পালানোর সময় জাল দিয়ে ধরে ফেলা হয় হনুমানটিকে। ধরা পড়ার পর হনুমানটি পোষা হতে পারে বলে সন্দেহ বন দফতরের। কোনওভাবে সে ছাড়া পেয়ে পালিয়ে এসে ওই এলাকায় ঘাঁটি গেঁড়েছিল।

একবর্ণা গদাধর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মাধব সাহা বলেন, ‘‘কয়েকদিন ধরে গোটা এলাকা জুড়ে যেন আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। জেলাশাসক ও ডিএফও-কে লিখিতভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলাম। শেষ পর্য়ন্ত হনুমানটি ধরা পড়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE