Advertisement
E-Paper

এই প্রথম মশার খোঁজ পাওয়া গেল আইসল্যান্ডে! উষ্ণায়নেরই প্রভাব বলে মনে করছেন প্রকৃতিবিজ্ঞানীরা

গত কয়েক বছর ধরে আইসল্যান্ডের উষ্ণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে উত্তর গোলার্ধের বাকি অংশের তুলনায় চার গুণ দ্রুত হারে উষ্ণ হচ্ছে আইসল্যান্ড। বিজ্ঞানীদের অনুমান, বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরেই আইসল্যান্ড ক্রমশ পতঙ্গদের বসবাসের জন্য আরও অনুকূল হয়ে উঠছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:২৭
কুলিসেটা অ্যানুলাটা মশা। সম্প্রতি এই প্রজাতির তিনটি মশা পাওয়া গিয়েছে আইসল্যান্ডে।

কুলিসেটা অ্যানুলাটা মশা। সম্প্রতি এই প্রজাতির তিনটি মশা পাওয়া গিয়েছে আইসল্যান্ডে। —ফাইল চিত্র।

মশার উপদ্রব এ বার শুরু হয়ে গেল আইসল্যান্ডেও। ইউরোপের এই দেশটিতেও যে মশা বনবন করতে পারে, তা কয়েক দিন আগে পর্যন্তও কেউ কল্পনা করতে পারতেন না। বিশ্বে হাতে গোনা যে কয়েকটি জায়গায় মশার উপদ্রব ছিল না, তার মধ্যে একটি ছিল আইসল্যান্ড।

এই প্রথম বারের মতো মশার অস্তিত্ব ধরা পড়ল আইসল্যান্ডে। তা-ও সে দেশের রাজধানী রেইকিয়াভিকের অদূরেই। আইসল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর রেইকিয়াভিক থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে পাওয়া গিয়েছে তিনটি মশা (কুলিসেটা অ্যানুলাটা)-র খোঁজ— দু’টি স্ত্রী মশা এবং একটি পুরুষ মশা। আইসল্যান্ডের কিডাফেল এবং কিয়স এলাকা থেকে এই মশাগুলির সন্ধান পেয়েছেন ‘ন্যাচারাল সায়েন্স ইনস্টিটিউট অফ আইসল্যান্ড’-এর পতঙ্গবিদ ম্যাথিয়াস আলফ্রেডসন।

আইসল্যান্ডে অবশ্য আগেও এক বার মশা দেখা গিয়েছিল। তবে তা কোনও প্রাকৃতিক পরিবেশে নয়। একটি বিমানের ভিতরে মশা মিলেছিল। সে বহু বছর আগের কথা। আইসল্যান্ডের কেফলাভিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি বিমানের ভিতরে একটিই মশা (এডিস নিগ্রিপেস) পাওয়া গিয়েছিল। সেটি কোথা থেকে এসেছিল, তা-ও অজানা। প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে এই প্রথম বার মশার দেখা মিলল এই ইউরোপীয় দ্বীপরাষ্ট্রে।

বিজ্ঞানীদের অনুমান, বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরেই আইসল্যান্ড ক্রমশ পতঙ্গদের বসবাসের জন্য আরও অনুকূল হয়ে উঠছে। আইসল্যান্ডে মশার সন্ধান পাওয়াও সে দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে মনে করা হচ্ছে। আইসল্যান্ডে প্রচুর জলাভূমি এবং পুকুর রয়েছে, যা মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত। ফলে আইসল্যান্ড যে মশাদের বসবাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারে, সেই ভবিষ্যদ্বাণী আগেই করেছিলেন বিজ্ঞানীদের একাংশ। তবে এর ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এত দিন আইসল্যান্ডে মশা উপদ্রব দেখা যায়নি। এই দ্বীপরাষ্ট্রটি বরফে মোড়া গ্রিনল্যান্ডের খুব কাছেই অবস্থিত। ফলে ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ুগত কারণে মশাদের অনেক প্রজাতিই আইসল্যান্ডে টিকে থাকতে পারবে না, তা-ও অনুমান করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।

ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ুগত কারণে এত দিন আইসল্যান্ডে মশা দেখা না-গেলেও গত কয়েক বছর ধরে দেশটির উষ্ণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ অনুসারে, বর্তমানে বাকি উত্তর গোলার্ধের তুলনায় চার গুণ দ্রুত হারে উষ্ণ হচ্ছে আইসল্যান্ড। হিমবাহ ভাঙছে সে দেশে। এমনকি ম্যাকেরেলের মতো মাছ, যা সাধারণত উষ্ণ জলবায়ুতে দেখা যায়, তা-ও পাওয়া গিয়েছে সেখানে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, উষ্ণায়নের কারণেই সে দেশে মশা পাওয়া গিয়েছে।

উষ্ণায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন, চলতি বছরেই ব্রিটেনে ‘এডিস ইজিপ্টাই’ মশার ডিম পাওয়া গিয়েছে। ব্রিটেনের কেন্ট প্রদেশে মিলেছে ‘এডিস অ্যালবোপিকটাস’ মশা। পতঙ্গবিদ আলফ্রেডসনের কথায়, সম্প্রতি আইসল্যান্ডে যে তিনটি মশার সন্ধান মিলেছে, সেগুলি শীতল জলবায়ুতে মানিয়ে নিতে পারে। এরা শীতে ‘কাবু’ হয় না। শীতকালে এ বার বাড়ির বেসমেন্ট এবং শস্যাগারে আশ্রয় নিয়ে আইসল্যান্ডের পরিবেশে সহজেই বেঁচে থাকতে পারে বলে জানান আলফ্রেডসন।

Iceland Mosquitos Global Warming
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy