Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Science News

৩ শাখাকে এক সূত্রে গেঁথে অঙ্কের ‘নোবেল’ অ্যাবেল পেলেন ল্যাংল্যান্ডস

অ্যাবেল পুরস্কারকে গণিতশাস্ত্রের ‘নোবেল পুরস্কার’ বলা হয়। অ্যাবেল পুরস্কার চালু হওয়ার আগে গণিতশাস্ত্রবিদদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল ফিল্ডস মেডেল। কিন্তু ৪০ বছর বয়স বা তার কম বয়স হলেই ওই পুরস্কার পাওয়া যায়। অ্যাবেল পুরস্কারে সেই সীমাবদ্ধতা নেই বলেই এই পুরস্কারকে গণিতশাস্ত্রের ‘নোবেল পুরস্কার’ বলা হয়।

গণিতশাস্ত্রবিদ রবার্ট পি ল্যাংল্যান্ডস। ছবি- অ্যাবেল পুরস্কার কমিটির টুইটার অ্য়াকাউন্টের সৌজন্যে।

গণিতশাস্ত্রবিদ রবার্ট পি ল্যাংল্যান্ডস। ছবি- অ্যাবেল পুরস্কার কমিটির টুইটার অ্য়াকাউন্টের সৌজন্যে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ২১:০৫
Share: Save:

গণিতের তিনটি শাখাকে এক সূত্রে গাঁথার একটি অভিনব তত্ত্বের জন্য এ বছরের ‘অ্যাবেল পুরস্কার’ পেলেন বিশিষ্ট গণিতশাস্ত্রবিদ রবার্ট পি ল্যাংল্যান্ডস।

এই পুরস্কারটি দেয় নরওয়ের অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স অ্যান্ড লেটার্স। এর অর্থমূল্য সাড়ে ৬ লক্ষ ক্রোনার (নরওয়ের মুদ্রা)।

অ্যাবেল পুরস্কারকে গণিতশাস্ত্রের ‘নোবেল পুরস্কার’ বলা হয়। অ্যাবেল পুরস্কার চালু হওয়ার আগে গণিতশাস্ত্রবিদদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল ফিল্ডস মেডেল। কিন্তু ৪০ বছর বয়স বা তার কম বয়স হলেই ওই পুরস্কার পাওয়া যায়। অ্যাবেল পুরস্কারে সেই সীমাবদ্ধতা নেই বলেই এই পুরস্কারকে গণিতশাস্ত্রের ‘নোবেল পুরস্কার’ বলা হয়।

অ্যাবেল পুরস্কার কমিটির তরফে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, গণিতের তিনটি শাখা বীজগণিত (অ্যালজেব্রা), সংখ্যাতত্ত্ব (নাম্বার থিয়োরি) ও বিশ্লেষণ (অ্যানালিসিস)-কে ল্যাংল্যান্ডস একটি সূত্রে বাঁধার একটি অভিনব তত্ত্ব দিয়েছেন। যার নাম- ‘গ্র্যান্ড ইউনিফিকেশন থিয়োরি’ বা ‘জিইউটি’। তাঁর ওই তত্ত্বের জন্যই নিউ জার্সির প্রিন্সটনে ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি’র স্কুল অফ ম্যাথমেটিকসের এমেরিটাস অধ্যাপক ল্যাংল্যান্ডসকে এ বছরের অ্যাবেল পুরস্কার দেওয়া হল।

বিশিষ্ট গণিতশাস্ত্রবিদের তত্ত্বের নাম- ‘ল্যাংল্যান্ডস প্রোগ্রাম’। ল্যাংল্যান্ডসের এই ‘প্রোগ্রাম’ গণিতশাস্ত্র ও তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা (থিয়োরেটিকাল ফিজিক্স)-কে এক সূত্রে গাঁথতেও সাহায্য করবে বলে অ্যাবেল পুরস্কার কমিটির তরফে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন- আরও ব্রহ্মাণ্ড আছে কি? মৃত্যুশয্যার গবেষণাপত্রে প্রশ্ন তুলে গেলেন হকিং​

আরও পড়ুন- রীতিমতো বিষয়ী, ধরতেন বাজিও​

১৯৬৭ সালে প্রথম ওই ‘প্রোগ্রাম’-এর উপস্থাপনা করেন অধ্যাপক ল্যাংল্যান্ডস। কোনও থিসিস পেপারে (গবেষণাপত্র) নয়, বন্ধু গণিতশাস্ত্রবিদ আঁদ্রে ভেইল (Andre Weil)-কে লেখা ১৭ পাতার একটি চিঠিতেই প্রথম তাঁর ওই নতুন ‘প্রোগ্রাম’-এর কথা লিখেছিলেন ল্যাংল্যান্ডস। ওই সময় আঁদ্রে ছিলেন ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি’র স্কুল অফ ম্যাথমেটিকসের অধ্যাপক, ল্যাংল্যান্ডস এখন যেখানে এমেরিটাস অধ্যাপক হিসাবে রয়েছেন।

বন্ধু আঁদ্রেকে ওই সময় চিঠিতে ল্যাংল্যান্ডস লিখেছিলেন, ‘‘গণিতের তিনটি শাখার মধ্যে মেলবন্ধন ঘটানো খুবই জরুরি। কারণ, তাতে কোনও একটি শাখা দিয়ে যে জটিল ধাঁধার জট খোলা সম্ভব হচ্ছে না, আমি দেখেছি, অন্য আরেকটি শাখায় তার সমাধান খুবই সহজে হচ্ছে। ওই তিনটি শাখা হল নাম্বার থিয়োরি, অ্যালজেব্রিক জিওমেট্রি (বীজগাণিতিক জ্যামিতি) এবং অটোমরফিক ফর্মসের তত্ত্ব।’’

বন্ধু আঁদ্রেকে চিঠিটি হাতে লিখেছিলেন ল্যাংল্যান্ডস। গোটা চিঠিটি পড়ার পর আঁদ্রে বন্ধু ল্যাংল্যান্ডসকে পরামর্শ দেন, কষ্ট করে পুরো চিঠিটা টাইপ করে ফেলতে। আর তা বিশ্বের নানা প্রান্তের গণিতশাস্ত্রবিদদের পাঠিয়ে দিতে। টাইপ করা লেখা পড়তে সুবিধা হবে বলে। বানান ভুলের সম্ভাবনা কমবে বলে। বন্ধুর পরামর্শ মেনে নিয়ে সাতের দশক জুড়ে সেই টাইপ করা চিঠি ল্যাংল্যান্ডস বিশ্বের নানা প্রান্তের গণিতশাস্ত্রবিদদের পাঠিয়েছিলেন। তার পর তা নিয়েই গত ৪ দশক ধরে চলে তর্কবিতর্ক।

গণিতশাস্ত্রে সারা জীবনের অবদানের জন্য অ্যাবেল পুরস্কার চালু হয় ২০০৩ সালে। নরওয়ের বিশিষ্ট গণিতশাস্ত্রবিদ নিল্‌স হেনড্রিক অ্যাবেলের নামে। এর আগে অ্যান্ড্রু জে ভাইলস, পিটার ডি ল্যাক্স এবং জন এফ ন্যাশ জুনিয়রের মতো গণিতশাস্ত্রবিদরাও অ্যাবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE