চন্দ্রগ্রহণে চাঁদের রক্তিম রূপ তাক লাগিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সারা বছর ধরে এমন কত মহাজাগতিক ঘটনা ঘটে আমাদের মাথার উপর! কত ঘটনা খালি চোখেই চাক্ষুষ করার সুযোগ মেলে! শুধু আগে থেকে জানা থাকে না বলে দেখা হয় না। তেমনই এক মহাজাগতিক বিস্ময়ের হদিস দিলেন বিজ্ঞানীরা। সেপ্টম্বরে সারা মাস ধরে আকাশের এক কোণে দেখা যাবে সৌরজগতের ষষ্ঠ গ্রহ শনিকে। খালি চোখেই তা চাক্ষুষ করতে পারবেন আগ্রহীরা। এমনকি, চেষ্টা করলে শনির বলয়ের দেখাও মিলবে। আর যদি টেলিস্কোপের বন্দোবস্ত করা যায়, দেখা দেবে শনির সবচেয়ে বড় উপগ্রহ টাইটানও!
আকাশ পরিষ্কার থাকলে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকেই শনিকে দেখা যাবে। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর, মহালয়ার সন্ধ্যায় শনি হবে সবচেয়ে উজ্জ্বল। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই দিন সূর্য এবং শনির সঙ্গে একই সরলরেখায় চলে আসবে পৃথিবী। ফলে আকাশে মেঘ না-থাকলে সে দিন শনিকে খুঁজে নেওয়া সবচেয়ে সহজ। শুধু সেপ্টেম্বরেই নয়, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতি দিনই পৃথিবী থেকে শনিকে দেখা যাবে। তার পর আবার তা ফিকে হতে শুরু করবে।
আরও পড়ুন:
প্রতি দিন পূব আকাশে ‘উদয়’ হবে শনির। ভোরের দিকে পশ্চিম আকাশে তা ‘অস্ত’ যাবে। সারা রাত ধরেই এই গ্রহের দেখা মিলতে পারে। আকাশের দক্ষিণঘেঁষা কোণে উজ্জ্বল সাদা স্থির আলো খুঁজে নিতে হবে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর জন্য বিশেষ অ্যাপ রয়েছে। আকাশের ঠিক কোন দিকে তাকালে শনির দেখা মিলবে, তা জানতে ওই অ্যাপের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
প্রতি বছর অন্তর বিরল অবস্থানে আসে শনি। তার বলয়গুলি তখন পৃথিবী থেকে স্পষ্ট দেখা যায়। চলতি মাসেও সেটাই ঘটছে, দাবি বিজ্ঞানীদের। শনির এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত মোট উপগ্রহের সংখ্যা ২৭৪। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় টাইটানকে দেখা যাবে শনিকে প্রদক্ষিণরত অবস্থায়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, উপগ্রহটিকে খালি চোখে দেখা সম্ভব নয়। তবে টেলিস্কোপের সাহায্য নিলে সহজেই তা দেখা যাবে। মহাকাশবিজ্ঞানী এড ব্লুমারের কথায়, ‘‘একটা বড় সাদা বিন্দুর সামনে একটা অপেক্ষাকৃত ছোট সাদা বিন্দু ঘুরে বেড়াচ্ছে। খালি চোখে এটা দেখা কঠিন। যদিও খাতায়কলমে একেবারে অসম্ভব নয়।’’ টাইটান দেখতে চাইলে ২০ সেপ্টেম্বর ভোরের আগে আকাশে চোখ রাখতে হবে।