পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের পরের দিন, সোমবার আকাশে চোখ রাখলে দেখা যাবে আরও এক বিরল দৃশ্য। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তা মহাজাগতিক নয়, তবে মহাকাশপ্রেমীদের কাছে অবশ্যই আগ্রহের। সোমবার চাঁদের খুব কাছাকাছি চলে আসবে শনি। সূর্য ডুবলে পূর্ব আকাশে চোখ রাখলেই দেখা যাবে এই দৃশ্য। ভারত থেকেও দেখা যাবে। চাঁদের একপাশে থাকবে শনি, অন্য পাশে থাকবে অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি। পৃথিবী যে ছায়াপথে রয়েছে, সেই আকাশগঙ্গার সবচেয়ে কাছের ছায়াপথ হল অ্যান্ড্রোমিডা।
ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের অধিকর্তা সন্দীপকুমার চক্রবর্তী জানালেন, সোমবার চাঁদ এবং শনি থাকবে একেবারে গায়ে গায়ে। রবিবার পূর্ণগ্রাসের সময়েও চাঁদের কাছাকাছি দেখা গিয়েছিল শনিকে। কিন্তু আজ উজ্জ্বল চাঁদের আরও কাছে থাকবে সেই গ্রহ। মাত্র ৩ ডিগ্রি কৌণিক দূরত্বে। মঙ্গলবার থেকে আবার কিছুটা দূরে সরে যাবে সে।
সোমবার শনিকে চাঁদের খুব কাছে দেখা গেলেও সেই পরিচিত রূপে দেখা দেবে না গ্রহটি। অর্থাৎ শনির চারপাশে যে বলয় থাকে, তা সেই রূপেই দৃশ্যমান হবে না। এমনটাই জানালেন সন্দীপ। শনি এখন যে অবস্থানে রয়েছে, তাতে ওই বলয়কে একটি রেখার মতো দেখাবে। খাবার থালা পাশ থেকে দেখলে যেমন মনে হয়। এখন যদি মাথার উপর থেকে শনিকে দেখা যেত, তা হলে স্পষ্ট ভাবে লক্ষিত হত সেই বলয়। আগামী মাসের পর ধীরে ধীরে নিজের গতিপথে চলতে চলতে বেঁকতে থাকবে শনি। তখন ধীরে ধীরে বোঝা যাবে সেই বলয়। সাড়ে পাঁচ বছর অন্তর পৃথিবী থেকে স্পষ্ট ভাবে দেখা যায় শনির বলয়। ১১ বছর পরে আবার সেই বলয় রেখার আকারে দেখা যাবে।
আরও পড়ুন:
সোমবার রাতে চাঁদের পূর্বে থাকবে শনি, পশ্চিমে থাকবে অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি। পৃথিবী যে আকাশগঙ্গা ছায়াপথে রয়েছে, তার চেয়ে এটি ১০ গুণ বড়। ওই অ্যান্ড্রোমিডায় তাকিয়ে বোঝা যায় আমাদের ছায়াপথ আসলে কেমন দেখতে। পৃথিবী যে ছায়াপথে রয়েছে, তা দেখা যায় না। কারণ, সেই ছায়াপথেই আমরা বসে রয়েছি। আমাদের ছায়াপথ থেকে ২৫ কোটি আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে অ্যান্ড্রোমিডা। এই ছায়াপথ ক্রমে এগিয়ে যাচ্ছে সেটির দিকে। কয়েকশো কোটি বছর পরে দু’টির ধাক্কা লাগবে। তার পর দুই ছায়াপথ মিলিয়ে একটি হবে। সেই ঘটনা ঘটতে সময় লাগবে ৪৫০ থেকে ৫০০ কোটি বছর।