আইনরক্ষার কাজের ফাঁকে ‘উপরি’ রোজগারের আশায় চোরাশিকারিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন সিআরপি জওয়ান। গেকো-পাচার চক্রে ঢুকেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। পড়শি রাজ্যে দু’টি টোকে গেকো বিক্রি করতে গিয়ে সাদা পোশাকের পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন সিআরপি-র ৪৮ নম্বর ব্যাটেলিয়নের ‘জি’ কোম্পানির জওয়ান কে বি জিতেন সিংহ। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর শাগরেদ ভি সি হরেকেও। পুলিশের সন্দেহ, আধা সামরিক বাহিনীর ওই জওয়ান গন্ডার চোরাশিকারেও জড়িত। কাজিরাঙা, মায়ং-সহ সংরক্ষিত অরণ্যের লাগোয়া থানাগুলি থেকে তদন্তকারীরা এখন এই দু’জনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন। পুলিশের দাবি, জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় মোতায়েন জওয়ান এবং জঙ্গিদু’পক্ষই টোকে গেকো নামের এই টিকটিকি পাচারে জড়িত। গেকো-শিকারের অভিযোগে সিআরপি জওয়ানকে গ্রেফতার করার ঘটনা নজিরবিহীন। মৈরাবাড়ি থানার ওসি এস দোলে বলেন, “জিতেন সিংহ নামে ওই জওয়ান দু’টি গেকো বিক্রি করতে মৈরাবাড়ি এলাকায় সালিমুদ্দিন নামে এক শিকারির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সালিমুদ্দিন গেকোগুলিকে ধিং এলাকায় বিক্রির জন্য নিয়ে যায়। সেখানেই ওই শিকারিকে ধরা হয়।” পুলিশ জানায়, গত রাতে মৈরাবাড়ি থেকেই জিতেনদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে কয়েকটি হরিণের শিং-ও মিলেছে। পুলিশের দাবি, মণিপুরি ও নাগা শিকারিরা যে ভাবে গন্ডার শিকারে সামরিক বাহিনীতে ব্যবহৃত রাইফেলের কার্তুজ ব্যবহার করছে, তাতে শিকার-চক্রের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর যোগাযোগ অনেকটাই নিশ্চিত। জিতেন শিকারিদের অস্ত্র এবং গুলি সরবরাহ করতেন কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, ধৃত জওয়ান ধুবুরির বিলাসিপাড়ায় মোতায়েন ছিলেন। কয়েক দিন আগে দু’মাসের ছুটিতে বাড়িতে ফেরেন। পুলিশ সূত্রের খবর: মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, অসমের জঙ্গলে এখন গন্ডার শিকারের চেয়েও টোকে গেকো পাচারের ব্যবসা লাভজনক। আন্তর্জাতিক চোরাবাজারে বছর দু’য়েকের মধ্যে টোকে গেকোর দর অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। চিন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বহু মানুষ বিশ্বাস করে, গন্ডারের খড়্গের মতোই ক্যান্সার, যৌন রোগ, এড্স প্রতিরোধের ওষুধ তৈরির জন্য গেকোর চাহিদা বাড়ছে। একটি এক ফুটের গেকো মায়ানমারে ১০ থেকে ২০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয় বলে পুলিশের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy