বাড়তি ছাইপুকুরের ব্যবস্থা না করেই ইউনিটের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছিল বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। তার ফলে ভরে যাওয়া ছাইপুকুর থেকে দূষণ গ্রাস করেছে এলাকার পরিবেশ। এমন অভিযোগে সম্প্রতি জাতীয় পরিবেশ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ। এ বার আদালতের নির্দেশে অভিযোগের গুরুত্ব খতিয়ে দেখতে ছাইপুকুর ও সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখে গেলেন ‘ন্যাশনাল এনভাইরনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইন্সটিটিউটে’র দুই পরিবেশ বিজ্ঞানী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নাগপুর থেকে আসা প্রিন্সিপ্যাল সায়েন্টিস্ট পরশ পূজারী এবং কলকাতা থেকে দীপাঞ্জন মজুমদারেরা অ্যাশ পন্ডের ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (যেখান থেকে ছাই মিশ্রিত জল চন্দ্রভগা নদীতে মেশে), ছাই পুকুর, পার্শ্ববর্তী এলাকা খতিয়ে দেখেন। ছাই দূষণ নিয়ে কী সমস্যা স্থানীয়দের, সে নিয়ে আগত প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথাও বলেন। দুই বি়জ্ঞানীর সঙ্গী ছিলেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্তও। ছিলেন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার মহীতোষ মাজি এবং অন্যান্য আধিকারিকেরা।
ঘটনা হল, দূষণের জেরে বারবার আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে। এমনকী, কেন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে জরিমানা করা হবে না, সেই প্রশ্নও তুলেছে আদালত। আদালতের তিরস্কার ও জরিমানা সংক্রান্ত হুঁশিয়ারির কারণ, বারবার বলা সত্ত্বেও ছাই ফেলার উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হয়নি। যদিও তাপবিদ্যুৎ কর্তপক্ষের দাবি, আদালতের নির্দেশ মেনে তারা ছাই দূষণ রুখতে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছেন। এমনকী, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভরে যাওয়া ছাই পুকুর বা অ্যাশ পন্ড থেকে সংলগ্ন চন্দ্রভাগা নদীতে দূষণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে। অন্য দিকে, যিনি বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের ছাইপুকুর থেকে ছাই দূষণ নিয়ে মামলা করেছেন, সেই সুভাষবাবু আদালতে দাবি করেন, ছাইদূষণ রুখতে যে পদক্ষেপ তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ নিয়েছেন, তা মোটেই যথেষ্ট নয়।
এ দিন তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই পরিদর্শন বলে জানা গিয়েছে। যদিও তাঁরা কী দেখলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই দূষণ নিয়ে পদক্ষেপই বা কেমন, সেই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি দুই বিজ্ঞানী। পরশবাবু বলেন, ‘‘আমার যা বলার, আদালতকে বলব।’’ অন্য দিকে, দীপাঞ্জনবাবু বলছেন, ‘‘বিষয়গুলি দেখে প্রাথমিক মূল্যায়ন করলাম। এখনই বলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে, যেটুকু দেখলাম তা আদালতকে জানানো হবে।’’