Advertisement
E-Paper

মনে হচ্ছিল যেন ভূমিকম্প হচ্ছে, পড়েই দেখি দাঁতাল

আমরা প্রতিদিনের মতোই যে যার বাড়ি থেকে খাবার খেয়ে হাঁটতে হাঁটতে নজরমিনারে উঠব বলে বেরিয়েছিলাম। আমরা মোট ছয় বন্ধু। আমি রাজকুমার, পাতরাস, কামিল, আসানু আর ফাগ্নু।

রেতনু খেড়িয়া

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ০২:৪৬

আমরা প্রতিদিনের মতোই যে যার বাড়ি থেকে খাবার খেয়ে হাঁটতে হাঁটতে নজরমিনারে উঠব বলে বেরিয়েছিলাম। আমরা মোট ছয় বন্ধু। আমি রাজকুমার, পাতরাস, কামিল, আসানু আর ফাগ্নু। সকলেই মেচবস্তির স্কুল লাগোয়া পাড়াতেই থাকি। নজরমিনারটি বাড়ি থেকে হেঁটে ১০ মিনিট দূরে। নজরমিনারের চার দিকেই আমাদের ধান খেত। গ্রামের সকলেই আমাদের ধান পাহারায় থাকতে বলেছিল। রাতে বন্ধুরা মিলে গল্পও হয়। আবার হাতিও তাড়ানো যায়। সব মিলিয়ে ভালই সময় কাটে। তাই গত একমাস ধরে এই রাতপাহারা দিতে খারাপ লাগছিল না।

বৃহ্স্পতিবার নজরমিনার উঠে চাদর পেতে শুয়ে গল্পগুজব করে ১১টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হাতি ধানখেত দিয়ে ঢুকলে একটা সরসর আওয়াজ হয়। সেই শব্দ আমরা চিনি আর তাতেই আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। এমনটা আগে বহুবারই হয়েছে। এই একমাসেও আমরা চার থেকে পাঁচবার ধানখেতে ওই আওয়াজে উঠে চকোলেট বোম মেরে হাতি তাড়িয়েছি। কিন্তু এ দিন কেন যে এমন হল, তা মেলাতেই পারছি না। রাত তখন বোধহয় বারোটা হবে। আচমকাই নজরমিনার দুলতে শুরু করেছে। ধরফর করে উঠে বসেই বুঝলাম নিশ্চয়ই ভূমিকম্প হচ্ছে। সকলে উঠে পড়লেও কেউ টাল সামলাতে পারছিল না। সব মিলিয়ে বোধহয় কয়েক সেকেন্ড মাত্র। তারপরই আমরা নীচে পড়ে গেলাম। কাদা মাটিতে পড়ায় জোর বেঁচে গিয়েছি। তাও সাংঘাতিক ব্যথা হচ্ছিল।

অন্ধকারে ভাল করে দেখাও যাচ্ছিল না। কিন্তু চোখ কচলে মাটিতে পড়েই আচমকা দেখি বিরাট আকৃতির দাঁতাল আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে। হাতিটি কিন্তু আমাদের দিকেই তাকিয়ে। তবে তেড়ে আসছে না। কোনও রকমে দৌড়ে লাগিয়েছি এরপর। বস্তিতে ফিরে কোনও রকমে সকলকে ডেকে যখন ঘটনার কথা খুলে বলতে শুরু করলাম, তখন ভাল করে বুঝলাম যে ভূমিকম্প নয়। দাঁতালই এ কাজ করেছে। বুঝতে পারলাম হাতিই আমাদের হ্যাঁচকা টানে ফেলে দিয়েছে। এমনটা কোনও দিন আগে হয় নি। এতবড় দাঁতাল কখন এত কাছে চলে এল, আমরা বুঝতেও পারলাম না। এটা ভেবেই বেশি অবাক লাগছে। তবে আমার অন্যদের মতো বিশেষ ব্যথা লাগেনি। তাই আমি আর হাসপাতালে যাইনি। ব্যথার ওষুধ খেয়ে নিয়েছি শুধু। তবে নজরমিনারে আর উঠছি না।

(মেচবস্তি এলাকার নজরমিনারে পাহারায় থাকা এক যুবক)

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy