পুজোর মুখে নতুন ‘অতিথি’ ঘড়িয়াল পেল রসিকবিল মিনি জু। সোমবার কোচবিহারের রসিকবিল মিনি জু এলাকার নির্দিষ্ট পুকুরে রায়গঞ্জ থেকে আনা স্ত্রী ঘড়িয়ালটি ছাড়া হয়।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নিয়ে রসিকবিলে ঘড়িয়ালের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭টি। এদিন পশু চিকিৎসকরা ঘড়িয়ালটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সেটিকে পুকুরে ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। আগে থেকে স্ত্রী ঘড়িয়ালদের জন্য নির্দিষ্ট পুকুরে পুরানো আবাসিক পাঁচটির সঙ্গে নতুনটিকে রাখা হয়েছে। একমাত্র পুরুষ ঘড়িয়ালটিকে অবশ্য আগে থেকেই অন্য একটি পুকুরে রাখা হয়েছে। কোচবিহারের ডিএফও রথীনচন্দ্র রায় বলেন, “প্রায় সাড়ে ৬ ফুট দীর্ঘ ওই স্ত্রী ঘড়িয়ালটি এদিনই রায়গঞ্জ থেকে রসিকবিলে পৌঁছয়। পশু চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে সেটিকে অন্য স্ত্রী ঘড়িয়ালদের সঙ্গে রাখা হয়েছে। নতুন পরিবেশে প্রাণীটি দিব্যি মানিয়ে নিয়েছে।”
বন দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি রায়গঞ্জে একটি নদী থেকে ওই ঘড়িয়ালটিকে উদ্ধার করা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সেটিকে রসিকবিল মিনি জু’তে পাঠানোর পরিকল্পনা পাকা হয়। রবিবার একটি ট্রাকের উপরে ত্রিপল দিয়ে অনেকটা চৌবাচ্চার মোড়কে জল ছড়িয়ে ঘড়িয়ালটিকে নিয়ে রায়গঞ্জ থেকে রওনা হন বনকর্মীরা। সোমবার সকালে ঘড়িয়ালটি নিয়ে তাঁরা রসিকবিলে পৌঁছন। কয়েকজন বনকর্মী জানান, মূলত তাজা মাছ ঘড়িয়ালের পছন্দের খাদ্য। এদিন অবশ্য নতুন অতিথিকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবার দেওয়া হয়নি। দীর্ঘ যাত্রাপথের ক্লান্তি কাটিয়ে খানিকটা থিতু হলে মঙ্গলবার অতিথিকে খাওয়ান হবে।
২০০৩ সালে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির আওতাধীন রসিকবিল পর্যটন কেন্দ্রে ঘড়িয়াল পার্ক চালু হয়। সে সময় দুটি ঘড়িয়াল এনে ঘড়িয়াল পার্কের জন্য চিহ্নিত পুকুরে ছাড়া হয়। পরে বিভিন্ন নদী থেকে উদ্ধার ঘড়িয়াল সেখানে রাখায় সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬টি। এ বার তা ৭টি হল। এ দিন ঘড়িয়াল আনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই উৎসাহী বাসিন্দা ও পর্যটকদের অনেকে রসিকবিল চত্বরে ভিড় জমান।
তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বপন সাহা নিজেও এদিন নতুন অতিথির খোঁজখবর নিতে রসিকবিলে যান। স্বপনবাবু বলেন, “ঘড়িয়ালটি বেশ তরতাজা। জলে ছাড়ার পর অন্য ঘড়িয়ালদের সঙ্গে সেটি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়বে এমন আশঙ্কার ব্যাপারে বনকর্মীরা আলোচনা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত অসুবিধে হয়নি। এবার দুর্গাপুজোর মুখে রসিকবিলে পর্যটক আকর্ষণ বাড়াতে এটি বাড়তি মাত্রা যোগ করবে। দ্রুত নির্মীয়মাণ পাখিরালয়টি চালুর দাবিও করেছি।”