Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Ishan Porel

ইডেনে ঈশান-আকাশের দাপটে ব্যাটিং ব্যর্থতা সত্ত্বেও ২৬২ রানের লিড বাংলার

এ দিন সকালে নয় উইকেটে ২৭৫ নিয়ে শুরু করেছিল বাংলা। সেখান থেকে দলকে ৩১২ রানে পৌঁছে দেয় বাংলার শেষ উইকেটের জুটি। দশম উইকেটে অনুষ্টুপ ও ঈশান যোগ করেন ৫৪ রান।

বিধ্বংসী ঈশান পোড়েল। রবিবার ইডেনে। কর্নাটকের বিরুদ্ধে রঞ্জি সেমিফাইনালে নিলেন পাঁচ উইকেট। —ফাইল চিত্র।

বিধ্বংসী ঈশান পোড়েল। রবিবার ইডেনে। কর্নাটকের বিরুদ্ধে রঞ্জি সেমিফাইনালে নিলেন পাঁচ উইকেট। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ১৪:৫৪
Share: Save:

ঈশান পোড়েল-আকাশ দীপের দাপটে ১৯০ রানের লিড পেয়েছিল বাংলা। কিন্তু, দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ ব্যাটসম্যানরা। ইডেনে রঞ্জির সেমিফাইনালে কর্নাটকের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের শেষে বাংলা চার উইকেট হারিয়ে তুলল ৭২। ফলে, লিড এখন ২৬২ রানের। ক্রিজে আছেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায় (৪০) ও অনুষ্টুপ মজুমদার (১)। খেলার এখনও তিন দিন বাকি। সরাসরি ফয়সালা হওয়ার দিকে এগোচ্ছে ম্যাচ। বাংলা তাই চতুর্থ ইনিংসে যতটা সম্ভব বড় রানের চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলতে চাইছে করুণ নায়ারের কর্নাটককে।

রবিবার সকালে বাংলাকে ব্যাটে টেনেছিলেন অনুষ্টুপ মজুমদার। যিনি প্রথম ইনিংসে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ১৪৯ রানে। আর রবিবাসরীয় দুপুরে বল হাতে বাংলাকে ভরসা দিলেন ঈশান পোড়েল-আকাশ দীপ। ঈশান নিলেন পাঁচ উইকেট। আকাশ দীপ নিলেন তিন উইকেট। অনুষ্টুপ-ঈশান-আকাশ, এই তিন যোদ্ধার দাপটে কর্নাটকের বিরুদ্ধে ইডেনে রঞ্জি সেমিফাইনালের দ্বিতীয় দিনে স্বস্তিতেই বাংলা। বাংলার প্রথম ইনিংসে ৩১২ রানের জবাবে ৩৬.২ ওভারে ১২২ রানে শেষ হয়েছিল কর্নাটকের প্রথম ইনিংস। ১৯০ রানের লিড পেয়েছিল অভিমন্যু ঈশ্বরনের দল। কিন্তু, ব্যাটসম্যানরা দ্বিতীয় ইনিংসেও নির্ভরতা দিতে পারলেন না।

এ দিন সকালে নয় উইকেটে ২৭৫ নিয়ে শুরু করেছিল বাংলা। সেখান থেকে দলকে ৩১২ রানে পৌঁছে দেয় বাংলার শেষ উইকেটের জুটি। দশম উইকেটে অনুষ্টুপ ও ঈশান যোগ করেন ৫৪ রান। ঈশান (৭) একদিক ধরে ছিলেন, আর রানের দায়িত্বে ছিলেন অনুষ্টুপ। তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১৪৯ রানে। ২০৭ বলের ইনিংসে অনুষ্টুপ মারেন ২১টি চার ও তিনটি ছয়। বাংলার মোট রানের প্রায় অর্ধেকই তাঁর। রনিত মোরের (৩-৫২) বলে ঈশান বোল্ড হওয়ায় দেড়শোর ঠিক আগে থামতে হল তাঁকে।

আরও পড়ুন: শামিদের লড়াই, জাডেজার অনবদ্য ক্যাচ, বিরাটদের ব্যাটিং ব্যর্থতা... আর যা যা ঘটল ক্রাইস্টচার্চে

আরও পড়ুন: ওয়্যাগনারকে ফেরানো জাডেজার এই অবিশ্বাস্য ক্যাচ কি সর্বকালের সেরা?​

ঈশান পোড়েল ব্যাট হাতে যে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছিলেন, নতুন বলেও তা দিলেন। চতুর্থ বলেই ফেরালেন কর্নাটকের ওপেনার রবিকুমার সমর্থকে (০)। স্লিপে ক্যাচ নিলেন মনোজ তিওয়ারি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফের আঘাত হানলেন ঈশান। এ বার ফেরালেন কর্নাটকের অধিনায়ক করুণ নায়ারকে (৩)। করুণের ক্যাচ ধরলেন স্লিপে থাকা অনুষ্টুপ। পাঁচ রানের মধ্যে দুই উইকেট পড়ে গিয়েছিল কর্নাটকের।

তীয় উইকেট পড়ল ৩৫ রানে। চারে নামা কৃষ্ণমূর্তি সিদ্ধার্থ (১৪) খোঁচা দিলেন আকাশ দীপের বলে। যা ধরলেন সেই মনোজ। চতুর্থ উইকেটে লোকেশ রাহুল ও মণীশ পাণ্ডে ইনিংস মেরামতের চেষ্টায় ছিলেন এর পর। ৫৬ রানে ফিরলেন মণীশ (১২)। তাঁকে বোল্ড করলেন মুকেশ কুমার। কর্নাটকের হয়ে রীতিমতো ধারাবাহিক দেবদূত পাদিকাল এসেছিলেন ছয়ে। তিনি ঈশানের বলে ক্যাচ দিলেন দ্বিতীয় স্লিপে অনুষ্টুপকে। ফিরলেন চার রানে। ৬৩ রানের মধ্যে কর্নাটকের অর্ধেক দল তখন ফিরে গিয়েছে। এর পর এল মোক্ষম আঘাত। মুকেশ কুমারের বাইরের বল মারতে গিয়ে লোকেশ রাহুল ক্যাচ তুললেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। ছুটে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ তালুবন্দি করলেন অভিষেক রামন। ৬৫ রানে পড়ল আরও এক উইকেট। শ্রীনিবাস সরথ খোঁচা দিলেন ঈশানকে। প্রথম স্লিপে ধরলেন বাংলার অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন।

অষ্টম উইকেটে অভিমন্যু মিঠুন ও কৃষ্ণাপ্পা গৌতম ৫৬ রান যোগ করে ফলোঅনের লজ্জা থেকে বাঁচান কর্নাটককে। কিন্তু তার পরই ফেরেন মিঠুন (২৪)। ঈশানের পঞ্চম শিকার হন তিনি। মিঠুনের ক্যাচ ধরেন আকাশ দীপ। দলীয় ১২১ রানে ফেরেন গৌতমও (৩১)। আকাশ দীপের বলে তাঁর ক্যাচ ধরেন পরিবর্ত ফিল্ডার অগ্নিভ পান। কর্নাটকের ইনিংসে দাঁড়ি পড়ে ১২২ রানে। আকাশ দীপের বলে রনিত মোরের ক্যাচ বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ধরেন উইকেটকিপার শ্রীবৎস গোস্বামী। ঈশানের মতোই বোলিংয়ে নজর কাড়লেন আকাশ দীপ (৩-৩০) ও মুকেশ কুমার (২-৪৬)।

বাংলার দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই অভিমন্যু মিঠুনের বিধ্বংসী স্পেল টেনশন এনেছিল বাংলা শিবিরে। ইনিংসের চতুর্থ বলে তিনি ফেরান অভিষেক রামনকে (১)। অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন (১১) এর পর বোল্ড হন মিঠুনের বলে। দুই উইকেটে ২৩ থেকে দ্রুত তিন উইকেটে ২৩ দেখায় স্কোরবোর্ড। চার নম্বরে নামা অর্ণব নন্দী (০) হন এলবিডব্লিউ। বোলার যথারীতি মিঠুন। এর পর চতুর্থ উইকেটে ৩৮ রান যোগ করেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায় ও মনোজ তিওয়ারি। পড়ন্ত বেলায় মনোজ (১৩) ফেরেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের বলে খোঁচা দিয়ে। ৬১ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলা। পঞ্চম উইকেটও হারিয়ে বসেছিল হোম টিম। রণিত মোরের বলে কোনও রান করার আগেই অনুষ্টুপ মজুমদারের ক্যাচ ধরেন মণীশ পাণ্ডে। কিন্তু অনুষ্টুপকে বাঁচায় রনিতের নো-বল। রিপ্লে দেখে নো ডাকেন আম্পায়ার। বেঁচে যান অনুষ্টুপ। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বাংলা শিবির। ২৬২ রানের লিড বাড়াতে এখন সুদীপ-অনুষ্টুপের দিকে তাকিয়ে দল। সুদীপকে অনেক দিন পর ছন্দে দেখাচ্ছে। আর অনুষ্টুপ তো ফর্মেই রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE