Advertisement
০৮ মে ২০২৪

হনুমাকে দেখে মনে হচ্ছে, দলে থাকতেই এসেছেন

হনুমা বিহারী ছেলেটার নাম দিন দশেক আগে কত জন ক্রিকেটপ্রেমী জানতেন, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। কিন্তু রবিবারের পরে নিশ্চয়ই এই নামটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

অভিষেক টেস্টেই হাফ সেঞ্চুরি হনুমা বিহারীর। রবিবার। এএফপি

অভিষেক টেস্টেই হাফ সেঞ্চুরি হনুমা বিহারীর। রবিবার। এএফপি

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২৩
Share: Save:

হনুমা বিহারী ছেলেটার নাম দিন দশেক আগে কত জন ক্রিকেটপ্রেমী জানতেন, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। কিন্তু রবিবারের পরে নিশ্চয়ই এই নামটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। জীবনের প্রথম টেস্টেই হাফ সেঞ্চুরি, তা-ও এই পরিবেশে এবং চাপের মধ্যে। যেটা অবশ্যই কৃতিত্বের। হনুমার ৫৬ রানের মূল্য কিন্তু অনেক।

এই টেস্টে আরও একটা বদল করেছিল ভারত। এবং, দেখা যাচ্ছে সেই বদলটা দারুণ হিট হয়ে গেল। আর অশ্বিনের জায়গায় রবীন্দ্র জাডেজা। এই টেস্টে জাডেজা দেখিয়ে দিলেন, তিনি পরিপূর্ণ একটা প্যাকেজ। প্রথম ইনিংসে চার উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ইতিমধ্যেই একটা উইকেট তুলে নিয়েছেন। ব্যাট হাতে অসাধারণ অপরাজিত ৮৬ রান। সঙ্গে দুরন্ত ফিল্ডিং।

কিন্তু এই দু’জনের লড়াই সত্ত্বেও আমি বলব, ইংল্যান্ডের জয়ের সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ। তৃতীয় দিনের শেষে জো রুটদের দল এগিয়ে গিয়েছে ১৫৪ রানে। হাতে আট উইকেট। জীবনের শেষ টেস্ট ইনিংসে ‘কিছুতেই উইকেট দেব না’ মনোভাব নিয়ে খেলছেন অ্যালেস্টেয়ার কুক। ছন্দে দেখাচ্ছে রুটকেও। আর শ’খানেক রানের মধ্যে ইংল্যান্ডকে আটকাতে না পারলে কিন্তু ভারতের অবস্থা আরও খারাপ হবে। মনে রাখতে হবে, শেষ দিনে ব্যাট করতে হবে ভারতকে। যেটা একেবারেই সহজ কাজ হবে না।

জাডেজা তো হিট। পাশাপাশি হনুমাকে নিয়ে বলব, এই ছেলেটা অনেক দিন দলে থাকার জন্যই এসেছেন। হনুমা বছর তিনেক আগে হায়দরাবাদ দলের হয়ে আইপিএলও খেলেছেন। কিন্তু এর পরে নিজেকে আইপিএল থেকে সরিয়ে নেন। অন্ধ্রপ্রদেশের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত ব্যাটিং করছেন। তবে তাঁকে এই ভাবে দলে নিয়ে আসা এবং টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতীয় কোচ-অধিনায়ককে অবশ্যই অভিনন্দন জানাতে হবে।

আরও পড়ুন: লর্ডসের ইনিংস মাথায় ছিল জাডেজার

বিদেশের কঠিন সফরে ভাল খেলার জন্য যে রকম ডিফেন্সিভ টেকনিক দরকার, তা আছে হনুমার। আগেই ব্যাটটা বাড়িয়ে দেননি। বলের জন্য অপেক্ষা করে খেলেছেন। দারুণ ভাবে বল ছেড়েছেন। যেটা দেখে শিখতে পারে টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরাও। দিনের শুরুতে জিমি অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডকে খুব ভাল সামলেছেন। মইন আলি-কে বেশ কয়েকটা সুইপও মারতে দেখলাম হনুমাকে। যা আগে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা মারছিলেন না। তবে দিনের সেরা শটটা জাডেজার। অ্যান্ডারসনের মতো বোলারের মাথার ওপর দিয়ে বল গ্যালারিতে পাঠিয়ে দিলেন। এখন দেখে মনে হচ্ছে, এই একটা বদল যদি দু’একটা টেস্ট ম্যাচ আগে হত!

এবং, ঋষভ পন্থ। আমি কোনও দিন দেখিনি কোনও ক্লাব ক্রিকেটে নিয়মিত ২০-২৫ রান বাই হচ্ছে। আমি কোনও দিন রঞ্জি-দলীপ ট্রফির ম্যাচে এমন ঘটনা ঘটতে দেখিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো ছেড়েই দিন। কিন্তু ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে এই ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। ২০-২৫ রান করে বাই হচ্ছে। সৌজন্যে অবশ্যই ভারতীয় উইকেটকিপার ঋষভ। এত বাজে গ্লাভস পজিশন আমি খুব কম দেখেছি। উইকেটের দু’দিকেই ডাইভ দিচ্ছেন ঋষভ। ওঁকে দেখে আমি বুঝতে পারছি না, কিপিং করছেন না কুস্তি! রবিবার একটা সহজ বল ফস্কে চার রান বাই দেওয়ার পরে টিভি-তে বিরাট কোহালির মুখটা দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কতটা বিরক্ত।

ঋষভের কিপিং দেখে মনে হচ্ছে, ইংল্যান্ডের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না। ইংল্যান্ডে কিপিং করা এমনিতেই কঠিন। বল উইকেট পার হয়ে গিয়েও সুইং করে। সেই সুইংটা বুঝতে না পারলে হাত বলের পিছনে নিয়ে আসা যাবে না। ঋষভ সেই সুইংটা বুঝতে পারছেন না। আমরা দুটো টেস্ট খুব অল্প ব্যবধানে হেরেছি। এ রকম সব ম্যাচে এই ২০-২৫ রান খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। ভারত এবং ঋষভকে সেটা মাথায় রাখতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE