Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পন্থ নেই, পাওয়ারহিটারদের লড়াইয়ে ভরসা সেই হার্দিক

পাওয়ারহিটারদের এই লড়াইয়ে ভারত কিন্তু একটু পিছিয়েই শুরু করবে। কেন এ কথা বলছি? কেদার যাদব সুস্থ হয়ে গিয়েছে। খুবই ভাল খবর। কিন্তু পাশাপাশি একই সঙ্গে এটাও ঠিক হয়ে গেল, ঋষভ পন্থকে এই বিশ্বকাপের বাইরেই থাকতে হচ্ছে।

অস্ত্র: শেষ দিকে হার্দিকই ঝড় তুলতে পারেন ব্যাটে। ফাইল চিত্র

অস্ত্র: শেষ দিকে হার্দিকই ঝড় তুলতে পারেন ব্যাটে। ফাইল চিত্র

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৯ ০৪:২৬
Share: Save:

এ বার বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে ৩০ মে। ভারতের প্রথম ম্যাচ ৫ জুন। এটা ইংল্যান্ডের ‘সেকেন্ড সামার’। অর্থাৎ গ্রীষ্মের পরের পর্ব। যেখানে বল সে রকম নড়াচড়া করবে না। হাওয়াতেও নয়, উইকেটে পড়েও নয়। শট খেলতে কোনও সমস্যা হবে না ব্যাটসম্যানদের। তাই মনে হয়, এই বিশ্বকাপে পাওয়ারহিটারদের দাপট দেখা যাবে। চলতি ইংল্যান্ড-পাকিস্তান সিরিজে যে ব্যাটিং তাণ্ডব দেখছি, তাতে সে রকমই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

পাওয়ারহিটারদের এই লড়াইয়ে ভারত কিন্তু একটু পিছিয়েই শুরু করবে। কেন এ কথা বলছি? কেদার যাদব সুস্থ হয়ে গিয়েছে। খুবই ভাল খবর। কিন্তু পাশাপাশি একই সঙ্গে এটাও ঠিক হয়ে গেল, ঋষভ পন্থকে এই বিশ্বকাপের বাইরেই থাকতে হচ্ছে। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, পন্থকে বিশ্বকাপে না নিয়ে যাওয়াটা চূড়ান্ত বোকামি। ও হল আদর্শ পাওয়ারহিটার। খুব জোরে বলটা মারতে পারে। ইংল্যান্ডের অনেক মাঠই বেশ ছোট। যেখানে পন্থ সহজেই মাঠ পার করে দিতে পারত। দেড়শো স্ট্রাইক রেটে শেষ দিকে ব্যাট করা ওর পক্ষে খুব কঠিন কাজ নয়।

পন্থের বদলে নেওয়া হয়েছে দীনেশ কার্তিককে। যদি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি চোট পায়, তা হলেই নাকি খেলানো হবে কার্তিককে। আমি নিজে জাতীয় নির্বাচক ছিলাম। কখনও এই যুক্তিতে কাউকে দলে নেওয়া হয় বলে জানতাম না। সেই ক্রিকেটার যদি শুরু থেকেই প্রথম একাদশে আসার যোগ্য না হয়, তা হলে তাকে নেব কেন?

পন্থ না থাকায় নির্ভেজাল পাওয়ারহিটার বলতে ভারতের শুধু হার্দিক পাণ্ড্যই থাকল। হার্দিক যে দিন খেলবে, দেড়শো-দুশো স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করে দেবে। আইপিএলে আমরা সে রকমই দেখেছি। কিন্তু ও বাদে ভারতীয় দলে সে রকম পাওয়ারহিটার কই? সেট হয়ে গেলে পরের দিকে রোহিত শর্মা অবশ্যই বড় স্ট্রোক মারতে পারে। রোহিতকে তাই অর্ধেক পাওয়ারহিটার বলা চলে।

এ বার অন্যান্য কয়েকটা দলের উপরে চোখ রাখা যাক। প্রথমেই বলব ইংল্যান্ডের কথা। ওপেনে জনি বেয়ারস্টো, জেসন রয়। পরের দিকে জস বাটলার, বেন স্টোকস, মইন আলি। প্রত্যেকেরই ক্ষমতা আছে দেড়শোর ওপর স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করার। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চলতি সিরিজে বাটলার তো দুশো স্ট্রাইক রেটে সেঞ্চুরি করল। এ ছাড়া বেয়ারস্টো, জেসনও বিধ্ব‌ংসী ব্যাটিং করছে। আর ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের মইনের ওই ইনিংস (২৮ বলে ৬৬) নিশ্চয়ই কেউ ভোলেননি।

এর পরে বলতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কথা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এমন একটা দল যারা কোনও দিন বিশ্বসেরাকেও হারাতে পারে আবার আফগানিস্তানের কাছেও হারতে পারে। কোনও দিন সাড়ে তিন শো তুলে দেবে, কোনও দিন হয়তো দেড়শো রানে শেষ হয়ে যাবে। তবে এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে আধুনিক ক্রিকেটের অতিমানবীয় সব পাওয়ারহিটার আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটায়। যেমন, ক্রিস গেল, শিমরন হেটমায়ার এবং অবশ্যই আন্দ্রে রাসেল। সদ্য সমাপ্ত আইপিএল দেখিয়েছে, কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে রাসেল। ও মারতে থাকলে চারশো রানের গণ্ডিও না টপকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এ বার আসি অস্ট্রেলিয়ার কথায়। যেখানে দু’জনের কথা বলতেই হবে। শুরুতে ডেভিড ওয়ার্নার, মাঝের বা শেষের দিকে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ওয়ার্নারের মতো ‘বৈজ্ঞানিক পাওয়ারহিটার’ আমি খুব কমই দেখেছি। বৈজ্ঞানিক পাওয়ারহিটার বলতে আমি বোঝাচ্ছি সেই ব্যাটসম্যানকে যে যতটা সম্ভব ঝুঁকি কম নিয়েও দ্রুত রান তুলতে পারে। ম্যাক্সওয়েলের খেলার মধ্যে আবার ঝুঁকির মাত্রাটা অনেক বেশি।

ব্রেন্ডন ম্যাকালাম এবং এ বি ডিভিলিয়ার্স সরে যাওয়ায় নিউজ়িল্যান্ড বা দক্ষিণ আফ্রিকায় সে রকম ভয়ঙ্কর পাওয়ারহিটার নেই এখন। নিউজ়িল্যান্ডের মার্টিন গাপ্টিল বা দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলারের কথা কিছুটা বলা যেতে পারে। পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কা দলে আমি সে রকম পাওয়ারহিটার

দেখছি না।

তবে ভারত পাওয়ারহিটারদের লড়াইয়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও বিশ্বকাপ জেতার লড়াইয়ে আগেই থাকবে। রোহিত, বিরাট কোহালি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি আছে ব্যাটিংয়ে। বোলিংয়ে যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামি, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চহাল। ভারতকে নিশ্চিত ভাবে শেষ চারে দেখছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE