Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
বিশ্বকাপ থেকে প্রায় বিদায় ডুপ্লেসিদের

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে সেঞ্চুরি করে জেতালেন ক্যাপ্টেন কেন

নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে বার্মিংহ্যামে প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ২৪১-৬ স্কোরে আটকে গেল ফ্যাফ ডুপ্লেসির দল। সে রান তাড়া করতে গিয়ে শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায়।

রাজকীয়: ১৩৮ বলে অপরাজিত ১০৬। কেন উইলিয়ামসনের দাপটে জয়ের ধারা বজায় রাখল নিউজ়িল্যান্ড। বুধবার বার্মিংহ্যামে। গেটি ইমেজেস

রাজকীয়: ১৩৮ বলে অপরাজিত ১০৬। কেন উইলিয়ামসনের দাপটে জয়ের ধারা বজায় রাখল নিউজ়িল্যান্ড। বুধবার বার্মিংহ্যামে। গেটি ইমেজেস

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০৪:১৪
Share: Save:

স্যাঁতসেঁতে উইকেট। কাগিসো রাবাডা, লুনগি এনগিডির মতো পেসারদের কাছে যা আদর্শ। তবুও পিচের আর্দ্রতার সদ্ব্যবহার করতে পারল না এনগিডি, রাবাডা, ফেহলুকওয়েও ত্রয়ী। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছিল ফ্যাফ ডুপ্লেসিদের। বুধবার বার্মিংহ্যামে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে চার উইকেটে হারের পরে সেই আত্মবিশ্বাস চলে যেতে বাধ্য।

নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে বার্মিংহ্যামে প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ২৪১-৬ স্কোরে আটকে গেল ফ্যাফ ডুপ্লেসির দল। সে রান তাড়া করতে গিয়ে শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায়। কেন উইলিয়ামসনের ১৩৮ বলে ১০৬ রানের দুরন্ত ইনিংস সেমিফাইনালের রাস্তায় এক ধাপ এগিয়ে দেয় নিউজ়িল্যান্ডকে। অধিনায়ক কেনের পাশাপাশি ৪৭ বলে ৬০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে যান কলিন দে গ্র্যান্ডহোম।

খেলা শেষে শতরান করে দলকে জেতানো নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়ামসন বলে গেলেন, ‘‘পিচ মোটেই সহজ ছিল না। কিন্তু কলিন দে গ্র্যান্ডহোম এসে মারতে শুরু করে। তাতেই আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই আমরা। আর এ রকম একটা কঠিন ম্যাচ জিতলে ভাল তো লাগবেই।’’ ছয় ম্যাচে চতুর্থ হারের পরে শেষ চারের রাস্তা আরও কঠিন হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার। ছয় ম্যাচে চার নম্বর হার দক্ষিণ আফ্রিকার। তাঁদের হারের যথেষ্ট কারণও রয়েছে। উইলিয়ামসন ও গ্র্যান্ডহোমের ক্যাচ পড়ে। সেই সঙ্গে নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়কের সহজ রান আউট ফস্কান ডেভিড মিলার। কিন্তু স্যাঁতসেঁতে পিচে কী ভাবে ব্যাট করতে হয় তা কিন্তু দেখিয়ে গেলেন নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক। অথচ দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানেরা মন্থর গতিতে ইনিংস শুরু করলেও তা বড় রানে পরিণত করতে পারেননি। বুধবার বৃষ্টি হওয়ায় পুরো ওভার খেলা হয়নি। ৪৯ ওভার করে ব্যাট করার সুযোগ পায় দু’দল। বৃষ্টি হওয়ায় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমান বেড়ে গিয়েছিল। উইকেটে স্যাঁতসেঁতে ভাব আন্দাজ করা গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং দেখে। ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরিদের বল শুরু থেকেই সুইং ও কাট করতে দেখা যায়। তাই ঝুঁকি নেওয়ার কোনও পরিকল্পনাই ছিল না ওপেনার হাসিম আমলার। আট বলে পাঁচ রান করে কুইন্টন ডি’কক ফিরে যাওয়ার পরে মন্থর গতিতে খেলেন আমলা ও ডুপ্লেসি।

নতুন বলের বিরুদ্ধে সাবলীল ব্যাট করেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। যখন বল নড়াচড়া করছিল, উইকেটে টিকে ছিলেন আমলা ও ডুপ্লেসি। কিন্তু লকি ফার্গুসনের একটি আউটসুইং ইয়র্কারের নাগাল পাননি ডুপ্লেসি। লকির গতিময় ইয়র্কার অফস্টাম্পে আছড়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়কের। তাঁকে ফিরে যেতে হয় ৩৫ বলে ২৩ রান করে।

৫৯ রানে দু’উইকেট হারানোর পরে ম্যাচের হাল ধরার দায়িত্ব এসে পড়ে এডেন মার্করাম ও আমলার কাঁধে। কিন্তু ৫২ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি এই জুটি। মার্করামও অতিরিক্ত মন্থর গতিতে ব্যাট করেন। ওয়ান ডে ক্রিকেটে এ ধরনের ব্যাটিং সচরাচর দেখা যায় না। ৫৫ বল খেলে ৩৮ রান করে ফিরে যান মার্করাম। কলিন ডি’গ্র্যান্ডহোমের বলে বড় শট নিতে গিয়ে ডিপ-এক্সট্রা কভার অঞ্চলে ক্যাচ ওঠে মার্করামের। যা ধরতে কোনও ভুল করেননি কলিন মুনরো। মার্করামের আগেই আউট হন আমলা। ৫৫ রান করতে ৮৩ বল নেন। টপ অর্ডার যখন স্কোরবোর্ড সচল রাখতে ব্যর্থ, দায়িত্ব নিতে হয় মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের। ৬৪ বলে অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন রাসি ফান ডার ডুসঁ।

স্কোরকার্ড
দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪১-৬ (৪৯)
নিউজ়িল্যান্ড ২৪৫-৬ (৪৮.৩)

দক্ষিণ আফ্রিকা
ডি কক বো বোল্ট ৫•৮
আমলা বো স্যান্টনার ৫৫•৮৩
ডুপ্লেসি বো ফার্গুসন ২৩•৩৫
মার্করাম ক মুনরো বো গ্র্যান্ডহোম ৩৮•৫৫
ডুসঁ ন. আ. ৬৭•৬৪
মিলার ক বোল্ট বো ফার্গুসন ৩৬•৩৭
ফেহলুকওয়েও ক কেন বো ফার্গুসন ০•৫
মরিস ন. আ. ৬•৭
অতিরিক্ত ১১
মোট ২৪১-৬ (৫০)
পতন: ১-৯ (ডি কক, ১.৫), ২-৫৯ (ডুপ্লেসি, ১৩.৬), ৩-১১১ (আমলা, ২৭.৪), ৪-১৩৬ (মার্করাম, ৩২.৩), ৫-২০৮ (মিলার, ৪৪.৫), ৬-২১৮ (ফেহলুকওয়েও, ৪৬.৩)।
বোলিং: ম্যাট হেনরি ১০-২-৩৪-০, ট্রেন্ট বোল্ট ১০-০-৬৩-১, লকি ফার্গুসন ১০-০-৫৯-৩, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ১০-০-৩৩-১, মিচেল স্যান্টনার ৯-০-৪৫-১।

নিউজ়িল্যান্ড
গাপ্টিল হিট উইকেট বো ফেহলুকওয়াও ৩৫•৫৯
মুনরো ক ও বো রাবাডা ৯•৫
উইলিয়ামসন ন. আ. ১০৬•১৩৮
টেলর ক ডি কক বো মরিস ১•২
লাথাম ক ডি কক বো মরিস ১•৪
নিশাম ক আমলা বো মরিস ২৩•৩৪
গ্র্যান্ডহোম ক ডুপ্লেসি বো এনগিডি ৬০•৪৭
স্যান্টনার ন. আ. ২•৩
অতিরিক্ত ৮ মোট ২৪৫-৬ (৪৮.৩)
পতন: ১-১২ (মুনরো, ২.১), ২-৭২ (গাপ্টিল, ১৪.৬), ৩-৭৪ (টেলর, ১৬.১), ৪-৮০ (লাথাম, ১৮.১), ৫-১৩৭ (নিশাম, ৩২.২), ৬-২২৮ (গ্র্যান্ডহোম, ৪৭.১)।
বোলিং: কাগিসো রাবাডা ১০-০-৪২-১, লুনগি এনগিডি ১০-১-৪৭-১, ক্রিস মরিস ১০-০-৪৯-৩, আন্দাইল ফেহলুকওয়েও ৮.৩-০-৭৩-১, ইমরান তাহির ১০-০-৩৩-০।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE