বিহু নাচছেন রিয়ান পরাগ। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।
আইপিএলে বিহু! অসমিয়া এই নাচকে কোটিপতি লিগে আমদানি করলেন রাজস্থান রয়্যালসের ব্যাটসম্যান রিয়ান পরাগ। যিনি অহমিয়া। রবিবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে রাজস্থান রয়্যালসকে নাটকীয় ভাবে জিতিয়ে মাঠেই বিহু নাচতে শুরু করেন ১৮ বছরের রিয়ান।
তবে টিন এজ এই ক্রিকেটারই শুধু নন, তাঁর টিমের শীর্ষস্তরেও অসম তথা বিহু বিরাজমান। ঘটনাচক্রে, রাজস্থান রয়্যালস যে সংস্থার অধীন, সেই ‘রয়্যাল মাল্টিস্পোর্ট প্রাইভেট মিলিটেড’-এর এগজিকিউটিভ চেয়ারম্যান হলেন রঞ্জিত বড়ঠাকুর। যাঁর বাড়ি অসমের জোড়হাটে। ক্রিকেটের পাশাপাশি রাজনীতিতেও সমান উৎসাহী রঞ্জিত। কংগ্রেস আমলে তিনি অসমের মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টাও ছিলেন। তাঁকে অবশ্য এখনও মাঠে বিহু নাচতে দেখা যায়নি। কে জানে রাজস্থান দ্বিতীয়বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হলে তাঁকেও বিয়ানের সঙ্গে মাঠে কোমর দোলাতে দেখা যাবে কি না।
আরও পড়ুন: ‘তোমার এটা প্রাপ্য’, তাঁর রেকর্ড স্পর্শ করায় নাদালকে অভিনন্দন ফেডেরারের
আরও পড়ুন: ইরাকের ক্লাবের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিককারী কার্লটন চ্যাপম্যান আর নেই, ময়দানে শোকের ছায়া
হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচে শেষ ওভারের পঞ্চম বলে খলিল আমেদকে কভারের উপর দিয়ে ছয় মেরে ম্যাচে দাঁড়ি টেনেছিলেন রিয়ান। তার পরই হেলমেট খুলে কোমরে হাত দিয়ে বিহু নাচতে থাকেন অসমের এই ক্রিকেটার। সঙ্গে সঙ্গে তা সাড়া ফেলে দেয় নেটাগরিকদের মধ্যে। প্রথমে অবশ্য অনেকে বুঝতে পারেননি, এটা কোন নাচ। কারণ, এমনিতে আইপিএলে চিয়ারগার্ল দেখতেই অভ্যস্ত দর্শকরা। প্রথম সংস্করণ থেকেই আইপিএলে চিয়ারগার্ল সংস্কৃতি চালু ছিল। প্রথমে চিয়ারগার্লদের আনা হত আমেরিকা, পোল্যান্ড এবং রাশিয়া থেকে। ম্যাচের পর নৈশ পার্টিতে তাঁদের সঙ্গে ক্রিকেটারদের একাংশের ‘মাখামাখি’ নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। পরের দিকে ভারত, এমনকি, বাংলা থেকেও চিয়ারগার্লরা পারফর্ম করছেন আইপিএলে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন হাসিন জাহান। যাঁর সঙ্গে বাংলা তথা ভারতের ফাস্ট বোলার মহম্মদ শামির পরিচয় আইপিএলের অবসরেই। প্রণয় থেকে পরিণয়। তাঁদের এক কন্যাসন্তানও রয়েছে। যদিও আপাতত তাঁরা আলাদা থাকেন। মামলাও চলছে।
তবে ২০১৬ সালে স্পট ফিক্সিংয়ের পর নৈশ পার্টি এবং চিয়ারগার্ল সংস্কৃতি কমিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৮ থেকে চিয়ারগার্ল নিষিদ্ধই হয়ে যায় আইপিএলে। ফলে ক্রিকেটাররা তাঁদের মতো করে সেলিব্রেশনের উপায় বার করতে থাকেন। কিন্তু এতদিন সেটা মূলত খেলোয়াড়ি আগ্রাসনের মধ্যেই আটক ছিল। রিয়ানই প্রথম সেখানে বিহুর মতো নাচের আমদানি করলেন। এর আগে অবশ্য বোলার শ্রীসন্থ উইকেট নিয়ে মাঝেমধ্যে মালয়ালি নাচ নেচেছেন। কিন্তু দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোনও রাজ্যের নিজস্ব সংস্কৃতি এই প্রথম ক্রিকেটের এই বিশ্ব মঞ্চে অবতীর্ণ হল।
When you're happy and you know it ☺️😊🕺🕺#Dream11IPL #SRHvRR
এমনিতে আইপিএল বিভিন্ন দেশজ সংস্কৃতির মেলবন্ধন তো বটেই। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রিকেটাররা সেখানে খেলায় এমনিতেই বিবিধ সংসৃকতির আদানপ্রদান হয়ে থাকে। তাতে অংশ নেন বিদেশি ক্রিকেটাররাও। যেমন তাঁদের অধিকাংশই এতদিনে নানা ধরনের হিন্দি শব্দ শিখে ফেলেছেন। রবিবার দুবাইয়ের মাঠে রিয়ান তাঁদেরও তাক লাগিয়ে দিয়েছেন!
২০১৮-র পর আইপিএল-এ এই দৃশ্য আর চোখে পড়েনি।
দুবাইয়ে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ১৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করছিল রাজস্থান। ৬৩ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর নেমেছিলেন রিয়ান। ২৬ বলে ৪২ করে ম্যাচ জিতিয়ে ফেরেন তিনি। নিজের ইনিংস নিয়ে পরে রিয়ান বলেছেন, “ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। এই ধরনের পরিস্থিতি উপভোগ করি। যখন দলের দরকার, এগিয়ে আসতে চাই। স্পিনাররা ভাল বল করছিল। তাই শেষের দিকে মারার জন্য জোরে বোলারদেরই বেছে নিয়েছিলাম। আমি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। স্বপ্নে এমন পরিস্থিতির কথা ভাবি। আর স্বপ্নই বাস্তবায়িত হল যেন।”
আর ম্যাচের পরে বিহু নাচ? একগাল হেসে রিয়ান বললেন, “বিহু হল অসমের ঐতিহ্যবাহী নাচ। গ্যালারিতে বেশ কিছু অহমিয়া ছেলে ছিল। ম্যাচের পর মজার জন্যই নেচেছিলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy