Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
India vs New Zealand

ছয় মেরে জেতালেন শ্রেয়াস, অকল্যান্ডে ৬ উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে হারাল ভারত

কলিন মুনরো, কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলরের মারমুখী ব্যাটিংয়ে রানের পাহাড়ে চড়েছিল নিউজিল্যান্ড। ২০ ওভারে কিউয়িরা তুলেছিল পাঁচ উইকেটে ২০৩ রান।

দুরন্ত শ্রেয়াস। অকল্যান্ডে শুক্রবার। ছবি: এএফপি।

দুরন্ত শ্রেয়াস। অকল্যান্ডে শুক্রবার। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
অকল্যান্ড শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ১২:০৩
Share: Save:

দাপটে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিতল ভারত। অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে বিশাল ছয় মেরে জয় ছিনিয়ে আনলেন ‘ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ’ শ্রেয়াস আইয়ার। ছয় বল বাকি থাকতে এল ছয় উইকেটে জয়। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেল বিরাট কোহালির দল। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি রবিবার অকল্যান্ডেই।

কলিন মুনরো, কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলরের মারমুখী ব্যাটিংয়ে রানের পাহাড়ে চড়েছিল নিউজিল্যান্ড। ২০ ওভারে কিউয়িরা তুলেছিল পাঁচ উইকেটে ২০৩ রান। টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই রান যথেষ্ট। তার উপরে বিদেশের মাটিতে গিয়ে দুশোর বেশি রান তাড়া করা কঠিনই বলতে হবে। কিন্তু সেটাই সহজে করে দেখাল ভারত (১৯ ওভারে ২০৪-৪)। শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহালির ব্যাটিংয়ে এক ওভার বাকি থাকতে এল জয়।

শুরুটা অবশ্য ভাল হয়নি। রান তাড়া করতে নেমে ছন্দে থাকা রোহিত শর্মা ৭ রান করেই ফিরে গিয়েছিলেন। মিচেল স্যান্টনারের বলে ঠিকঠাক টাইম করতে পারেননি মুম্বইকর। বল উঠে গিয়েছিল শূন্যে। সহজ ক্যাচ ধরেছিলেন রস টেলর। রোহিত ফেরার পর লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহালি টানছিলেন দলকে। দ্বিতীয় উইকেটে দু’জনে যোগ করেছিলেন ৯৯ রান। দুর্দান্ত ছন্দে আসেন রাহুল। সেই ফর্মেই ব্যাট করলেন। ছয় মেরে পঞ্চাশে পৌঁছেছিলেন তিনি। যা এসেছিল মাত্র ২৩ বলে। কিন্তু তার পরই ফিরলেন তিনি। ঈশ সোধিকে ছয় মারতে গিয়ে তুললেন লোপ্পা ক্যাচ। রাহুলের ২৭ বলে ৫৬ রানের ইনিংসে রয়েছে চারটি চার ও তিনটি ছয়।

রাহুল ফেরার পর বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি কোহালিও। ৩২ বলে ৪৫ করে ফেরেন তিনি। চেজমাস্টার মেজাজেই ছিলেন। মনে হচ্ছিল, ম্যাচ শেষ করেই ফিরবেন। কিন্তু, পঞ্চাশের আগেই ফিরে গিয়েছিলেন। তবে বোলার ব্লেয়ার টিকনার নন, তাঁকে ফেরানোর কৃতিত্ব মার্টিন গাপ্টিলের। সীমানা থেকে দৌড়ে এসে পুরোদস্তুর ঝাঁপিয়ে অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিলেন তিনি। এই ক্যাচই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেবে না তো, আশঙ্কিত হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা। কিন্তু শ্রেয়াস-মণীশের অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটের জুটি চাপ কাটিয়ে দিল।

বিরাট ফেরার পর পাঁচে অবশ্য মণীশ নন, এসেছিলেন শিবম দুবে। মারমুখী মেজাজে খেলছিলেন। কিন্তু বেশি ক্ষণ থাকলেন না। নয় বলে ১৩ করে ফিরলেন মারতে গিয়ে। ১৪২ রানে পড়েছিল ভারতের চতুর্থ উইকেট। তার পর জুটি বেঁধেছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার (১৬) ও মণীশ পাণ্ডে (৩)। দু’জনে ৩৪ বলে যোগ করলেন ৬২ রান। ২৬ বলে পঞ্চাশে পৌঁছেছিলেন শ্রেয়াস। শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে অপরাজিত থাকলেন ৫৮ রানে। যাতে ছিল পাঁচটি চার ও তিনটি ছয়। ছয় মেরে ম্যাচ শেষও করলেন তিনি। আর মণীশ অপরাজিত থাকলেন ১২ বলে ১৪ রানে।

শুক্রবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ঝোড়ো শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড। দুই ওপেনার মার্টিন গাপ্টিল ও কলিন মুনরো মারমার কাটকাট ভঙ্গিতে চালাচ্ছিলেন। দু’জনের দাপটে ২৭ বলে পঞ্চাশে পৌঁছে গিয়েছিল রান। পাওয়ারপ্লে-র ছয় ওভারে বিনা উইকেটে উঠেছিল ৬৮। প্রথম স্পেলে শার্দুল ঠাকুরের দুই ওভারে উঠেছিল ৩০ রান, শামির দুই ওভারে উঠেছিল ২২ রান। রানের গতি কিছুটা থামিয়েছিলেন লেগস্পিনার যুজবেন্দ্র চহাল। প্রথম দুই ওভারে তিনি দিয়েছিলেন মাত্র আট রান।

আরও পড়ুন: চাই আর ২০৫, ফের এক রেকর্ডের সামনে বিরাট কোহালি​

আরও পড়ুন: একবার নয়, আজ সারাদিনে তিনবার নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি ভারতীয় ক্রিকেটাররা!

নিউজিল্যান্ড ইনিংসে প্রথম আঘাত হেনেছিলেন অলরাউন্ডার শিবম দুবে। তাঁর প্রথম ওভারে ফিরেছিলেন গাপ্টিল (১৯ বলে ৩০)। ছয় মারতে গিয়েছিলেন তিনি। ডিপ মিড উইকেটে রিলে ক্যাচ নিয়ে তাঁকে ফেরালেন রোহিত শর্মা। প্রথম উইকেটে ৮০ রান যোগ করেছিল নিউজিল্যান্ড।

দ্বিতীয় উইকেটে মুনরোর সঙ্গে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন যোগ করেছিলেন ৩৬ রান। শার্দুল ঠাকুরের দ্বিতীয় স্পেলে যুজবেন্দ্র চহালকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন তিনি। ৪২ বলে তাঁর ৫৯ রানে ছিল ছয়টি চার ও দুটো ছয়। ১১৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়েছিল কিউয়িদের। তৃতীয় উইকেট পড়ল ১১৭ রানে। রবীন্দ্র জাডেজার প্রথম ওভারে ফিরলেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমি (০)। তাঁর লেগ গ্লান্স জমা হল শিবম দুবের হাতে।

চার মেরে হাফ-সেঞ্চুরিতে পৌঁছতে উইলিয়ামসনের লেগেছিল ২৫ বল। বিধ্বংসী মেজাজে খেলছিলেন তিনি। তবে ফিরলেন তার পরই। ২৬ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ছিল চারটি চার ও চারটি ছয়। ১৭৮ বলে পড়েছিল চতুর্থ উইকেট। পঞ্চম উইকেট পড়ল ১৮১ রানে। উইকেটকিপার টিম সেইফার্ট (১) মারতে গিয়ে জশপ্রীত বুমরার বলে ক্যাচ দিলেন শ্রেয়াস আইয়ারকে। শেষের দিকে রস টেলর ২৭ বলে বিধ্বংসী মেজাজে ৫৪ রান করেন। তাঁর ইনিংসে ছিল তিনটি চার ও তিনটি ছয়।

টস জিতে সফরের শুরু করেছিলেন বিরাট কোহালি। ভারতীয় দল যা পছন্দ করে, সেই রান তাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। শুরুতে নতুন বলে আঘাত হানতে চান, বলেও দিয়েছিলেন। কিন্তু তা হল না। ভারতীয় পেসারদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করলেন গাপ্টিল-মুনরোরা।

টি-টোয়েন্টিতে ভারতের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের রেকর্ড দুর্দান্ত। আটবার ভারতকে হারিয়েছে তারা। ভারত জিতেছে মাত্র তিন বার। ঘরের মাঠে ব্ল্যাক ক্যাপসরা আরও বিপজ্জনক। চারবার জিতেছে তারা। নিউজিল্যান্ডে এসে কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে ভারত মাত্র একবারই হারিয়েছে হোম টিমকে। ফলে, বিরাট কোহালির দলের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ।

এই বছরেই অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেই দিকে তাকিয়েই বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে ভারত। সেই কারণেই দেখে নেওয়া হচ্ছে ক্রিকেটারদের। এই ম্যাচে উইকেটকিপার হিসেবে খেলছেন লোকেশ রাহুল। দলে নেই ঋষভ পন্থ ও সঞ্জু স্যামসন, দুই বিশেষজ্ঞ উইকেটকিপারই। প্রথম এগারোয় নেই নবদীপ সাইনি, কুলদীপ যাদবও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE