Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Ravichandran Ashwin

পিচে বিছানা নিয়ে শুয়ে পড়েছিলাম, বিহারীকে অশ্বিন

প্রবাদ আছে, খোঁচা খাওয়া বাঘ নাকি মারাত্মক হয়। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও হনুমা বিহারী কিন্ত চোটে কাবু হলেও যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে যাননি। বরং বীরের মতো বাইশগজের যুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়েছেন। ফল স্বরূপ দেশকে নতুন বছর উপহার দিলেন ড্র টেস্ট। এমন একটা ম্যাচ ড্র করলেন, যেটা ভারতের হারার সম্ভাবনা ছিল বেশি। যদিও গোটা দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিলেন ওঁরা।

অশ্বিন ও বিহারী। চোট পেয়েও সিডনি টেস্ট ড্র করলেন দুই নায়ক। ছবি : আইসিসি

অশ্বিন ও বিহারী। চোট পেয়েও সিডনি টেস্ট ড্র করলেন দুই নায়ক। ছবি : আইসিসি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ২২:০০
Share: Save:

প্রবাদ আছে, খোঁচা খাওয়া বাঘ নাকি মারাত্মক হয়। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও হনুমা বিহারী কিন্ত চোটে কাবু হলেও যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে যাননি। বরং বীরের মতো বাইশগজের যুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়েছেন। ফল স্বরূপ দেশকে নতুন বছর উপহার দিলেন ড্র টেস্ট। এমন একটা ম্যাচ ড্র করলেন, যেটা ভারতের হারার সম্ভাবনা ছিল বেশি। যদিও গোটা দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিলেন ওঁরা। ব্যাটিং শৌর্যের মাধ্যমে। আর ম্যাচ শেষে টিম ইন্ডিয়ার দুই যোদ্ধা কথা বললেন বিসিসিআই.টিভি'র সঙ্গে। কী বললেন ওরা? পাঠকদের কাছে তুলে ধরা হল।

অশ্বিন: যাঁরা এদিন মাঠে এসেছিলেন, তাঁদের একটা টাকাও নষ্ট হয়নি। সত্যি বলতে, এই মুহূর্তে আমার মনের অবস্থা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। এই ম্যাচটা আমাদের কাছে খুবই স্পেশ্যাল। ম্যাচটা শেষ হওয়ার পর আমাদের মাথা পুরো ব্ল্যাঙ্ক হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় আমরা সেলিব্রেশন পর্যন্ত করিনি। কীভাবে আমরা একে অপরকে অভিনন্দন জানাব, বুঝে উঠতে পারছিলাম না। একটা সময় ঠিক করেছিলাম আমরা এক ওভার করে ব্যাটিং করব। তৃতীয় সেশনের শেষ দিকে আমি ‘ডেড ব্যাটিং’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। মানে পিচে বিছানা নিয়ে শুয়ে পড়া যাকে বলে। তখন ফাফ ডু প্লেসির কথা মনে পড়ল। কয়েক বছর আগে ও এভাবেই অ্যাডিলেডে ব্যাট করে ম্যাচ ড্র করেছিল। তবে দিনের শুরুটা কিন্তু ঋষভ পন্থ করে। চাপের মুখে পন্থকে ক্রিজে পাঠিয়ে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। শুরু থেকে কাউন্টার অ্যাটাক করতেই ব্যাকফুটে চলে যায় অস্ট্রেলিয়া। ওর বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে একটা সময় আমাদের জেতার সুযোগ পর্যন্ত তৈরি হয়। পূজারা ও পন্থ আমাদের লড়াইয়ের ভীত গড়ে দেয়। ওদের তৈরি করা ভীতের উপর আমরা শেষ তিন ঘন্টা লড়েছি। ও সফল হলাম।

বিহারী: পঞ্চম দিনে ব্যাট করে টেস্ট ম্যাচ ড্র করা। এখনও ভাবলে গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের দাপটে একটা সময় মনে হচ্ছিল তলিয়ে যাব। কিন্তু অন্যমনস্ক হলেই অশ্বিন বড় দাদার মতো আমাকে আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেল। এই ম্যাচ জীবনে ভুলতে পারব না। কারণ সিরিজ এখন ১-১।

আরও পড়ুন: ‘খুনী’ হনুমার সমালোচনায় ‘ক্রিকেটের কিছুই না জানা’ বাবুল

অশ্বিন: আমাদের ৬২ রানের পার্টনারশিপে দ্রুত রান তোলা কখনই গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। আর কোনও উইকেট না হারানোই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেইজন্য আমরা বারবার কথা বলছিলাম। পেসার ও নেথান লায়নের বিরুদ্ধে কোন স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ব্যাট করব, কে কোন বোলারের বিরুদ্ধে উইকেটে টিকে থাকব, সেটা নিয়েই আলোচনা হচ্ছিল। কারণ, আমরা দুজনেই চোটে নাজেহাল ছিলাম। বিহারীর হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট বেশ ভোগাচ্ছিল। আর আমি তো গতকাল রাত থেকেই পিঠের ব্যাথায় কাবু। তাই দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করিনি। এতে মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটতে পারত। তবে শেষ চার-পাঁচ ওভারে কিছু রান তোলার চেষ্টা করি। কারণ, ততক্ষণে জানতাম অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে এই টেস্ট জেতা সম্ভব নয়। এই ঐতিহাসিক ড্র শুধু বিহারীর জন্যই সম্ভব হল। এককথায় অনবদ্য পারফরম্যান্স।

অশ্বিন: আমি ক্রিজে গিয়ে লায়নকে ফেস করি। ওর স্পিনে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে ব্যাথা আরও বেড়ে যায়। কারণ, লম্বা পা বের করে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করলে কাঁধ, পিঠ ও কোমরের উপর বেশ জোর পরে। তাই নন স্ট্রাইকারে দাঁড়িয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানেও দেখা দিল অন্য সমস্যা। কিছুটা সময় ব্যাট না করার জন্য পিঠ পুরো স্টিফ হয়ে যায়। তাই শেষ পর্যন্ত চেস্ট গার্ড ব্যবহার করি। অবশ্য সেই সময় ওদের পেসাররা বোলিং করতে আসে। ও নতুন বল হাতে নিয়ে আমার পিঠ লক্ষ্য করে শর্ট বল করতে শুরু করে দেন। তবে ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তাই তো অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে দেশকে এমন একটা ম্যাচ উপহার দিতে পেরেছি।

বিহারী : নতুন বছরের শুরুতে এমন ড্র তো জয়ের সমান। তবে পন্থ আউট না হলে ও পূজারা আরও কিছুক্ষণ ক্রিজে থাকলে আমরা সিডনি-তেই এগিয়ে যেতে পারতাম। তবে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কথা মাথায় রেখে ১০ পয়েন্ট পাওয়া বিশাল ব্যাপার। এবার টার্গেট ব্রিসবেন টেস্ট।

আরও পড়ুন: বরাত জোরে সুযোগ পাওয়া হনুমাই সিডনির নায়ক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ravichandran Ashwin Hanuma Vihari India Australia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE