Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
স্টেপ আউট

তেরো জনে হার্দিককে না-দেখে অবাকই হলাম

সিডনির পিচ নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে। শুনলাম ওখানকার উইকেটে ভাল রকম ঘাস থাকবে। আর সেটা থাকতে পারে একটাই কারণে। পিচ যাতে দ্রুত না ভাঙে। মেলবোর্নের পিচও কিন্তু যথেষ্ট শুকনো ছিল।

তেরো জনের দলে নেই হার্দিক পাণ্ড্য ও ভুবনেশ্বর কুমার।

তেরো জনের দলে নেই হার্দিক পাণ্ড্য ও ভুবনেশ্বর কুমার।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪১
Share: Save:

মেলবোর্নে কর্তৃত্ব নিয়ে জয়ের পরে ভারত এ বার সিরিজের শেষ টেস্টের সামনে। দু’দলের কাছেই যে লড়াইয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। বেশি করে ভারতের কাছে। কারণ, আমরা এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের সন্ধিক্ষণে রয়েছি। পারথে্ টিম পেনরা জেতার পরে মেলবোর্নে বিরাট কোহালিরা কিন্তু টানা পাঁচ দিন ধরেই চালকের আসনে ছিল। জিতেছেও দারুণ ভাবে। ঘটনাচক্রে এই সিরিজে দেখছি, যারাই টস জিতে আগে ব্যাট করছে তারাই এগিয়ে থাকছে। মেলবোর্নে দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৬-৮ স্কোরেও ভারত ডিক্লেয়ার করায় একটা সত্যিই স্পষ্ট হচ্ছে। টস জেতাটা বিরাট ব্যাপার। আমার তো মনে হয়, সিডনিতেও সেটাই হতে যাচ্ছে।

সিডনির পিচ নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে। শুনলাম ওখানকার উইকেটে ভাল রকম ঘাস থাকবে। আর সেটা থাকতে পারে একটাই কারণে। পিচ যাতে দ্রুত না ভাঙে। মেলবোর্নের পিচও কিন্তু যথেষ্ট শুকনো ছিল। অথচ কখনওই মনে হয়নি, ওখানে ভাল করে ব্যাটটাই করা যাবে না! তাই ভারতকে খুবই সতর্ক থাকতে হবে দ্বিতীয় স্পিনার নির্বাচন নিয়ে। অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যেই আর একজন স্পিনার দলে নিয়েছে। হ্যাঁ, অলরাউন্ডার মার্নাস লাবুশানের কথা বলছি। যদিও আমার মনে হয় না, অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম এগারোয় দ্বিতীয় কোনও স্পিনার রাখবে। অবশ্য এমনও হতে পারে, প্রথম ছ’জনের মধ্যে ব্যাটটাও ভাল করে দিতে পারে বলে ওকে শেষ পর্যন্ত খেলিয়ে দেওয়া হল।

অস্ট্রেলিয়াকে কিন্তু সিডনিতে টপ-অর্ডারে ব্যাটিংটা ঠিকঠাক করতেই হবে। প্রচুর প্রশ্ন উঠছে অ্যারন ফিঞ্চকে নিয়ে। আমার তো মনে হয়, ওর টেস্ট খেলার টেকনিকে খামতি আছে। অবশ্য ওর জন্য ভাল খবর, সিডনিতে চোটের জন্য ইশান্ত শর্মা খেলছে না। ফিঞ্চকে ইশান্তের বিরুদ্ধেই বেশি নড়বড়ে দেখিয়েছে এই সিরিজে। বিশেষ করে ভিতরে ঢুকে আসা বলগুলোর ক্ষেত্রে। ভারত আবার উমেশ যাদবকে দলে রেখেছে। সঙ্গে আর অশ্বিনকে সুস্থ করে খেলিয়ে দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে দ্বিতীয় স্পিনার খেলাতে চাইলে অশ্বিন ১০০ ভাগ ফিট কি না বুঝে নেওয়াটা সব চেয়ে জরুরি। কারণ ম্যাচের মধ্যে খারাপ কিছু হলে ভারতকে কিন্তু তিন জন বোলারকে নিয়ে লড়তে হবে।

তেরো জনের দলে হার্দিক পাণ্ড্যকে না দেখে আমি একটু অবাকই হয়েছি। ও থাকা মানে কিন্তু ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই বাড়তি সুবিধে পাওয়া। সেই সঙ্গে একজন তৃতীয় সিমারও পাওয়া যেত। অবাক হয়েছি ইশান্ত চোট পাওয়ার পরেও ভুবনেশ্বর কুমারকে তেরো জনে না দেখে। এই অস্ট্রেলিয়াকে তাদের দলে অনেক সমস্যার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি ভারতের মাথাব্যথার কারণ অশ্বিন আর ইশান্তের চোট। দলের কম্বিনেশন ঠিক করাটাই তাই এখন একটা ঝামেলার বিষয়। কে এল রাহুলকে দলে ফিরিয়েছে কোহালিরা। যাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, হনুমা বিহারী আবার ওর নিজের জায়গা ছয় নম্বরে ফিরে যাবে। হঠাৎই যেন ভারতীয় দলে কয়েক জনের অনুপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ব্যাটিং লাইনআপকেও নতুন করে সাজিয়ে নেওয়া দরকার হয়ে পড়ছে।

গত পনেরো বছরে এত দুর্বল অস্ট্রেলীয় ব্যাটিং সত্যিই দেখা যায়নি। অবশ্য ওরা একটা রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তবে তার জন্য শুধুই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে দায়ী করার কোনও মানে হয় না। কে না জানে যে, কেন উইলিয়ামসন, কোহালি, ডেভিড ওয়ার্নার, জো রুট, জস বাটলার, জনি বেয়ারস্টোরাও প্রচুর টি-টোয়েন্টি খেলে। ওরা কিন্তু টেস্টেও দিব্যি মানিয়ে নেয়। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের এখন সব চেয়ে বড় সমস্যা হল ওদের রক্ষণের টেকনিকটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয়, সর্বোচ্চ স্তরে এখনকার ক্রিকেটারদের সব ধরনের ফর্ম্যাটেই মানিয়ে নেওয়াটাই আসল কথা।

(গেমপ্ল্যান)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE