Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

কোহালি মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েই আমিষ খাদ্য বর্জন সুনীলের

জাতীয় ফুটবল দলের ৩৪ বছরের অধিনায়ক সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ফিটনেস ধরে রাখতেই তিনি আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তাঁর খাদ্যাভ্যাসে।

অনুসরণ: কোহালির পথেই সুনীল। ফাইল চিত্র

অনুসরণ: কোহালির পথেই সুনীল। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৫৩
Share: Save:

ফিটনেস এবং মাঠে আগের মতোই ক্ষিপ্রতা ধরে রাখতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহালির পথই অনুসরণ করলেন সুনীল ছেত্রী। আমিষ খাদ্য ত্যাগ করে তিনি এখন নিরামষভোজী।

আগামী মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বিশ্বকাপ যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলবে ভারত। তার আগে জাতীয় ফুটবল দলের ৩৪ বছরের অধিনায়ক সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ফিটনেস ধরে রাখতেই তিনি আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তাঁর খাদ্যাভ্যাসে। দেশের হয়ে ৭২টি আন্তর্জাতিক গোলের মালিক বলেছেন, ‘‘এখন আমি সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী। অনেক দিন মাংস এবং এবং তৈলজাতীয় খাদ্য বর্জন করেছি। এতে যেমন তরতাজা রয়েছি, তেমনই আমার হজমশক্তিতেও কোনও বিঘ্ন ঘটেনি। বয়স বাড়লেও মাঠে নেমে যাতে বাকিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলতে পারি, সেই কারণে এই পথেই আমাকে এগোতে হয়েছে।’’

ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা জানিয়েছেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে তিনি এটা উপলব্ধি করেছেন, শারীরিক ধকল সামলানোর সঙ্গে দ্রুত চোটমুক্ত হওয়াও খুবই প্রয়োজনীয়। আর তার জন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা একান্তই জরুরি। সুনীলের কথায়, ‘‘বয়স বাড়ার সঙ্গে নিজের ভাবনাচিন্তা যেমন পরিণত হয়েছে, তেমনই বেশ কিছু এমন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে যাঁরা জীবনে পরিবর্তন আনতে অনেক ধরনের ইতিবাচক পরামর্শ দিয়েছেন। সে ভাবেই আমি নিজেকে পাল্টে ফেলেছি।’’ সেখানেই না থেমে সুনীল আরও বলেছেন, ‘‘তা ছাড়া বয়স বাড়ার কারণে আমার পক্ষে এখন যে কোনও পরিস্থিতিতে নিজেকে শান্ত রাখার কাজও সহজ হয়ে গিয়েছে। সে ভাবেই নিজের নিয়মিত খাদ্যতালিকায় পরিবর্তনের কাজও সহজ হয়ে গিয়েছে।’’

রাতারাতি আমিষ খাদ্য বর্জন করে নিরামিষ খাদ্য গ্রহণের যৌক্তিকতা কি ছিল? সুনীল বলেছেন, ‘‘আমি যে খাদ্যতালিকা তৈরি করেছি, সেটা নিজের ফিটনেসকে ধরে রাখতেই। দশ বছর আগে যা খেতাম, তার সঙ্গে এর অনেক পার্থক্য রয়েছে।’’ আরও যোগ করেছেন, ‘‘তবে এটাও মনে করার প্রয়োজন নেই যে, দশ বছর আগে আমি ইচ্ছেমতো সমস্ত কিছুই খেতাম। আসলে ধীরে ধীরে নিজেকে সংযমের শৃঙ্খলে বেঁধে এই পরিবর্তনের পথে এগিয়ে গিয়েছি।’’ ভারত অধিনায়কের আরও সংযোজন, ‘‘আসলে বয়স কম থাকার সময়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাটা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তখন অনেক কিছু খাওয়ার ইচ্ছা হত। অনেক কিছু করার ইচ্ছাও প্রবল ছিল। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে নিজেকে এটাও বুঝতে হবে আমার পক্ষে কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়। আমিও সেই অভিজ্ঞতা থেকেই নিজের জীবনে বড়মাপের বদল এনেছি।’’

এই সাক্ষাৎকারে সুনীল ফিরে গিয়েছেন তাঁর পুরনো দিনের রোজনামচাতেও। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার যখন ২৫ বছর বয়স ছিল, তখন প্রত্যেক দিন ছ’টুকরো আলু খেতে বলা হয়েছিল। কোনও দিন তা বেড়ে আট, আবার কোনও সময়ে দশও হয়ে যেত। কেউই কিন্তু এই সংখ্যাবৃদ্ধির মধ্যে বিরাট পরিবর্তন লক্ষ্য করেননি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘পরে যখন এক খাদ্যবিশারদের সঙ্গে তা নিয়ে কথা বলি, তিনি বলেন সারা দিনে ছ’টুকরো আলু খেতে পারি। কিন্তু তার বেশি নয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে এই ব্যাপারগুলো নিয়ে নিজেকেও ভাবনাচিন্তা করতে হয়। সংযমী হওয়ার শিক্ষা নিতে হয়।’’

ভারত অধিনায়ক জানিয়েছেন, কানসাস সিটি এবং পর্তুগালের স্পোর্টিং লিসবন ক্লাবে খেলতে যাওয়ার পরে তিনি অনুভব করেন, খাদ্যতালিকা সম্পর্কে কতটা সচেতন থাকা উচিত। সুনীল বলেছেন, ‘‘তার পরেই আমি কী খাব অথবা কী খাব না, সে সম্পর্কে কড়া হতে থাকি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football India Virat Kohli Sunil Chhetri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE