দুরন্ত: মারকুইনোজের গোল। এমবাপেদের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স।
আটলান্টা ১ পিএসজি ২
বলাবলি হচ্ছিল, মিনি বিশ্বকাপ। আট দিনে এগারোটি নক-আউট ম্যাচ। বিশ্বকাপের উন্মাদনা আশা করা হচ্ছিল, নতুন চেহারার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নক-আউট পর্ব থেকে। এবং, প্রথম রাতেই প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়ে গেল প্যারিস সাঁ জারমাঁর দুর্ধর্ষ প্রত্যাবর্তন। একেবারে শেষ মিনিটে দু’গোল করে হেরে যাওয়া ম্যাচ নেমাররা ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন এ বারের চমক আটলান্টার মুখের গ্রাস। ৮৯ মিনিট পর্যন্ত ০-১ পিছিয়ে থেকেও একেবারে শেষ প্রহরে ১৪৬ সেকেন্ডের ব্যবধানে দু’গোল করে যে জয় তুলে নিল পিএসজি, তা জায়গা করে নেবে ইতিহাসের সেরা প্রত্যাবর্তনগুলির মধ্যে।
কারও কারও মনে পড়ে যেতে পারে ১৯৯৯-এর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের কথা। বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে এ রকমই ০-১ পিছিয়ে ছিল আলেক্স ফার্গুসনের ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। এ ভাবেই অতিরিক্ত সময়ে দু’গোল করে ট্রফি জেতে তারা। ম্যানেজার থাকার সময়ে ফার্গুসনের ম্যান ইউ বিখ্যাত ছিল অতিরিক্ত সময়ে গোল করার জন্য। ফুটবল ইতিহাসে যা বিখ্যাত হয়ে আছে ‘ফার্গি টাইম’ নামে।
বুধবার রাতে ‘ফার্গি টাইম’ মনে করিয়ে দিলেন ইপিএলে স্টোক সিটিতে খেলে যাওয়া এক প্রাক্তন এবং অনামী ফুটবলার। তিনি এরিক ম্যাক্সিম সুপো-মোটিং, যাঁকে মাত্র ১১ মিনিট বাকি থাকতে পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামানো হয়েছিল। যাঁকে কেন কেনা হল, তা নিয়েই প্যারিসে বেশি চর্চা হয়েছিল। এমবাপের ক্রস থেকে পায়ের টোকায় তিনিই অবিশ্বাস্য জয় এনে দিলেন পিএসজি-কে। তার ঠিক ১৪৯ সেকেন্ড আগে গোল করে সমতা ফিরিয়েছিলেন মারকুইনোজ।
আরও খবর: চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আজ লেয়নডস্কির শক্তি বনাম লিয়ো-শিল্প
আরও খবর: বার্সায় একসঙ্গে মেসি-রোনাল্ডো? স্প্যানিশ সাংবাদিকের দাবিতে জল্পনা তুঙ্গে
নেমার, এমবাপের মতো মহাতারকার উপস্থিতিতেও প্যারিসের দলের রুদ্ধশ্বাস জয়ের নায়ক সুপো-মোটিং। ম্যাচের পরে আবেগতাড়িত ভাবে বলছিলেন, ‘‘আমাকে যখন নামানো হচ্ছিল, মনে-মনে ভাবছিলাম, আমরা কিছুতেই হেরে যেতে পারি না। বলছিলাম, এ ভাবে আমরা বাড়ি ফিরে যেতে পারি না।’’ ক্যামেরুনের ফরোয়ার্ড যোগ করছেন, ‘‘আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। দলের উপরেও আস্থা ছিল। প্যারিসের জন্য এটা একটা ইতিহাসের রাত।’’
করোনাভাইরাসের প্রকোপে বরাবরের সেই দুই পর্বের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এ বারে নেই। ছোট করে একটি মাত্র জায়গায় (লিসবনে) শেষ আটের লড়াই হচ্ছে এবং একটি ম্যাচের মাধ্যমেই নিষ্পত্তি হচ্ছে সেমিফাইনালে কারা যাবেন। প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, এই ফর্ম্যাটই ধরে রাখা উচিত কি না। দুই পর্বের চেয়ে একটি ম্যাচের আকর্ষণ এবং উত্তেজনা যে অনেক বেশি হতে পারে, তা বুধবার রাতেই যে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।
একই সঙ্গে প্রশ্ন, কী হত যদি বড় চোট উপেক্ষা করে কিলিয়ান এমবাপে মাঠে না নামতেন? নেমার যথাসাধ্য লড়াই করলেও আধ ঘণ্টা বাকি থাকতে মাঠে নেমে খেলার রং পাল্টে দেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ের তারকাই। না হলে ইটালির করোনা-বিধ্বস্ত অঞ্চল বার্গামোর দল আটলান্টাকে দেখে মনে হচ্ছিল, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অন্যতম সেরা অঘটন তারা ঘটিয়েই ছাড়বে। দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার মারিয়ো পাসালিচ। কে জানত, ৮৯ মিনিট পর্যন্ত নায়ক থেকেও শেষে ট্র্যাজিক নায়ক হয়ে ফিরতে হবে তাঁকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy