Advertisement
E-Paper

সিএবি প্রধান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে অভিষেক

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অবশ্য ছবি আরও পরিষ্কার হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বাকি দু’জনের চেয়ে দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন অভিষেক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:২৯
চর্চায়: বাবার আসনে দেখা যেতে পারে ডালমিয়া পুত্রকে। ফাইল চিত্র

চর্চায়: বাবার আসনে দেখা যেতে পারে ডালমিয়া পুত্রকে। ফাইল চিত্র

মহানাটকীয় পরিস্থিতিতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সিএবি-র মসনদে তা হলে এ বার কে বসবেন? রবিবার অধিক রাতে তিন জনের নাম শোনা গিয়েছিল। প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ বাবলু কোলে, সৌরভের দাদা এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এবং এখনকার সচিব অভিষেক ডালমিয়া।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অবশ্য ছবি আরও পরিষ্কার হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বাকি দু’জনের চেয়ে দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন অভিষেক। শেষ মুহূর্তে খুব বড় কোনও নাটক উপস্থিত না হলে ডালমিয়া-পুত্রই বসে পড়বেন সিএবি-র সর্বোচ্চ পদে। সে ক্ষেত্রে সৌরভের দাদা স্নেহাশিস হতে পারেন সচিব। শোনা যাচ্ছে, নিজের পরিবারের কাউকে রাতারাতি প্রেসিডেন্ট পদে বসিয়ে দিতে রাজি নন সৌরভ। তাঁরও সমর্থন রয়েছে অভিষেকের দিকেই।

সৌরভ এবং অভিষেক এক সঙ্গেই সিএবি-র উচ্চপদে বসেছিলেন। ডালমিয়ার প্রয়াণের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে দাঁড়িয়ে তাঁদের নাম ঘোষণা করেছিলেন। সৌরভকে বেছে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এবং অভিষেককে সচিবের পদে। মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহের হাত এখনও অভিষেকের সঙ্গী হতে পারে বলেও ইঙ্গিত রয়েছে। বোর্ডের মসনদে যেমন অমিত শাহের সমর্থন সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, এখানে ইডেনের মসনদের ক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ কার দিকে রয়েছে, তা গুরুত্বপূর্ণ হতেই পারে।

সৌরভের সঙ্গে মুম্বইয়েই রয়েছেন অভিষেক। দু’জনের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্কও রয়েছে। স্থানীয় ক্রিকেটের ওয়াকিবহাল মহলের মত, অভিষেক শীর্ষ পদে বসলে সৌরভের দিকে সমর্থন ছাড়া আপত্তি আসবে না। সৌরভ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হয়ে যাওয়ায় সিএবি প্রতিনিধি হিসেবে বোর্ডের বৈঠকে যাওয়ার ছাড়পত্রও পেতে পারেন ডালমিয়া-পুত্র। তবে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রূপ নেওয়া শুরু করবে আজ, মঙ্গলবার থেকে। সন্ধের দিকে মুম্বই থেকে ফিরতে পারেন
সৌরভ এবং অভিষেক।

দুপুর তিনটে পর্যন্ত প্রার্থী পদের স্ক্রুটিনি রয়েছে। কোথাও কোনও ফাঁক রাখতে চান না কেউ। তাই সব মিটে যাওয়ার পরেই প্রার্থীরা মুম্বই ছেড়ে বেরবেন। ২৩ অক্টোবর কোনও নির্বাচনই হচ্ছে না বোর্ডের বৈঠকে। সর্বসম্মত ভাবেই সব পদ ঠিক হয়েছে। সৌরভ প্রেসিডেন্ট, অমিত শাহের পুত্র জয় শাহ সচিব, যুগ্ম-সচিব জয়েশ জর্জ, কোষাধ্যক্ষ অনুরাগ ঠাকুরের ভাই অরুণ সিংহ ধুমাল। ভাইস প্রেসিডেন্ট মহিম বর্মা। আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের প্রধান ব্রিজেশ পটেল। সকলে মিলে এ দিনই ওয়াংখেড়েতে বোর্ডের সদর দফতরে যান মনোনয়ন জমা দিতে। কিন্তু গিয়ে দেখেন, নির্বাচনী অফিসারই আসেননি। অপেক্ষা করেও তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। এথচ, এ দিনই ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ।

শেষ পর্যন্ত আইনি প্রতিনিধিদের হাতেই মনোনয়ন জমা দিয়ে আসেন সৌরভরা। তখনই খটকা আসে কারও কারও মনে যে, স্ক্রুটিনির সময় শেষ মুহূর্তে কোনও নাটক আবার না উপস্থিত হয়। ঠিক হয়, সকলে স্ক্রুটিনি ঠিকঠাক না মেটা পর্যন্ত মুম্বইয়েই থাকবেন এবং নির্বাচনী অফিসার সব ঠিক আছে বললে তবেই মুম্বই ছেড়ে বেরবেন। ঐক্যবদ্ধ বোর্ডের ছবি তুলে ধরতে শীর্ষ কর্তারা সকলে একসঙ্গে ঢোকেন ক্রিকেট সেন্টারে। সৌরভ এবং শ্রীনিবাসনকে পাশাপাশি দেখা যায়। তেমনই সৌরভ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় রাজীব শুক্লকে। ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জিতে লর্ডসের ব্যালকনিতে সৌরভ যখন জামা খুলে ওড়াচ্ছেন, তখনও রাজীব ছিলেন পাশে। সেই সফরে তিনি ছিলেন ম্যানেজার। তবে এই মুহূর্তে কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের (সিওএ) বিধানে রাজীব বোর্ডের কোনও বৈঠকে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। পদে তো থাকার প্রশ্নই নেই। কিন্তু এ দিন যে ভাবে শ্রীনি, রাজীবদের নিয়ে সৌরভ, জয় শাহের মতো নতুন প্রশাসকেরা বোর্ডের অফিসে ঢোকেন, তাতে পরিষ্কার, তাঁরা দেখাতে চেয়েছেন, ঐক্যবদ্ধই আছি।

নতুন করে বোর্ড গঠন হতে যাচ্ছে, তবে পুরনো আমলের মতোই শ্রীনিবাসন যে এখনও ক্ষমতাশালী থেকে গিয়েছেন, তা-ও প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। পদাধিকারীদের মধ্যে দাবি মতোই দু’টি পদ তিনি পেয়েছেন। যদিও শেষ মুহূর্তে তাঁর প্রার্থী ব্রিজেশ পটেল প্রেসিডেন্ট পদের লড়াইয়ে হেরে গিয়েছেন সৌরভের কাছে। শ্রীনির এখন লক্ষ্য, আইসিসি-তে গিয়ে শশাঙ্ক মনোহরকে ‘শিক্ষা’ দেওয়া। ভারতীয় বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হয়ে শশাঙ্ক আইসিসি থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীনিকে। নিজে হয়ে যান আইসিসি প্রধান। মুছে ফেলেন শ্রীনির তিন মহাশক্তির জোটকেও।

বোর্ড কর্তাদের কাছে শ্রীনি ব্যক্ত করেছেন, তিনি এর জবাব দিতে চান। তাই তাঁর এই ইচ্ছাটুকু মেনে নেওয়া হোক যে, আইসিসি-তে তিনি যাবেন। গরিষ্ঠ অংশ তা মেনেও নিয়েছে কারণ, শশাঙ্ক সকলেরই ‘শত্রু’। কারও কারও কথায়, ‘‘আইসিসি-তে ভারতীয় বোর্ডকে জিম্বাবোয়ে বানিয়ে দিয়েছে শশাঙ্ক। ওকে শিক্ষা দিতেই হবে।’’ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, লোঢা সংস্কারের প্রভাবে বোর্ডে আসার যোগ্যতামান হারানো মানে তুমি আইসিসি-তেও যেতে পারবে না। সেই কারণে শ্রীনির ইচ্ছা পূরণ হওয়ার পথে অনেক রকম ‘হার্ডল’ রয়েছে। এমনিতে তাঁর সংস্থা বোর্ডের সভায় আসার অনুমতি পায়নি। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তিনি যদি ‘ম্যাচ’ ঘোরাতে পারেন।

তবু যে-হেতু শ্রীনি, কেউ বাতিলের খাতায় ফেলে দেওয়ার বোকামি করছে না। যাঁর দুর্নীতি ও অপশাসনকে ঘিরে বোর্ডে সমস্ত বিতর্ক আর সাফাই অভিযানের শুরু, চার বছর পরে প্রথম নির্বাচনের সময়েও তিনি যে সমান ভাবে সক্রিয়। কে তাঁকে সমীকরণের বাইরে রাখার সাহস দেখায়!

CAB Abhishek Dalmiya Cricket Cricketer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy