Advertisement
E-Paper

নেইমার না থাকাই একমাত্র সমস্যা নয় ব্রাজিলের

ব্রাজিল মানে দুর্ধর্ষ ফরোয়ার্ড লাইন। ব্রাজিল মানেই আক্রমণের ঝড়। ব্রাজিল মানে যারা তীব্র প্রতিকূলতার মধ্যেও লড়াই করে জেতে। অসংখ্য দুর্দান্ত স্কিলফুল ফুটবলার থাকা সত্ত্বেও ব্রাজিল কোনও দিন ব্যক্তিগত প্রতিভার উপর নির্ভর করে না। ব্রাজিল মানেই তো দলগত কেরামতি!

বিশ্বজিত্ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৫ ০২:২২
কোপায় স্তব্ধ সাম্বা

কোপায় স্তব্ধ সাম্বা

ব্রাজিল ১ (৩)

প্যারাগুয়ে ১ (৪)

ব্রাজিল মানে দুর্ধর্ষ ফরোয়ার্ড লাইন। ব্রাজিল মানেই আক্রমণের ঝড়। ব্রাজিল মানে যারা তীব্র প্রতিকূলতার মধ্যেও লড়াই করে জেতে। অসংখ্য দুর্দান্ত স্কিলফুল ফুটবলার থাকা সত্ত্বেও ব্রাজিল কোনও দিন ব্যক্তিগত প্রতিভার উপর নির্ভর করে না। ব্রাজিল মানেই তো দলগত কেরামতি!

প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে তাই ভেবেছিলাম সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেবে ব্রাজিল। দুর্ভাগ্যবশত সেটা নব্বই মিনিটে শুধু পঁয়তাল্লিশ মিনিট দিল দুঙ্গার দল। এমন নয়, ম্যাচটা খারাপ খেলেছে ওরা। তবে দলটার মধ্যে দ্বিধাবোধ রয়েছে। দেখে মনে হল পনেরো মিনিটেই এগিয়ে গিয়ে দোটানায় ছিল এই ভেবে যে, বাকি সময়টা কি এক গোলের লিড-ই ধরে রাখবে, না ব্যবধান বাড়াতে ঝাঁপাবে!

গোলকিপার বা ডিফেন্সের জন্য কোনও কালেই বিখ্যাত ছিল না ব্রাজিল। এখন দেখছি পুরো উল্টো! ডিফেন্সই দুর্দান্ত। আর মাঝমাঠ থেকে দলটা অতি সাধারণ। নেইমার ছিটকে যাওয়ায় বলতে গেলে কোনও স্কোরারই নেই। আবার এক গোলে এগিয়েও লিড ধরে রাখার আত্মবিশ্বাস নেই ডিফেন্সের। যদিও রবিনহোর গোলটা ট্রেডমার্ক ব্রাজিল গোল ছিল। রবিনহো মুভটা শুরু করে নিজেই ফিনিশ করল। চারটে অসাধারণ পাসে। রবিনহো থেকে এলিয়াস, দানি আলভেজ হয়ে ফের রবিনহোর কাছে বল যখন এল মাথা ঠান্ডা রেখে গোলটা করল। ওই সময় ফির্মিনোর ফলসটাও দারুণ ছিল। গোলটা দেখে মনে হল যেন সেই পুরনো ব্রাজিল। ফ্লুইড পাসিংয়ের সঙ্গে ডিরেক্ট ফুটবল মিশিয়ে একটা অভিনব কম্বিনেশন। তার পরেও ম্যাচের গতি ওরাই নিয়ন্ত্রণ করছিল। সুন্দর পাসিং। দ্রুত আক্রমণ তৈরি। কিন্তু ব্যস, ওই পর্যন্তই।

আরও একটা বড় টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল ব্রাজিল। জানি সবাই আঙুল তুলবেন নেইমার না থাকার দিকে। যেমন বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে হারের পর বলেছিলেন। আমার কিন্তু মনে হল কোপার ব্রাজিলের সমস্যা আরও গভীরে। যেমন— এক) অভিজ্ঞতার অভাব। অধিকাংশ প্লেয়ার আন্তর্জাতিক ফুটবল সম্বন্ধে তেমন পরিচিত নন। ফির্মিনো, এলিয়াস, ফিলিপে লুইস ভাল ফুটবলার হতে পারে কিন্তু আন্তর্জাতিক ফুটবল সম্পূর্ণ আলাদা ক্লাব ফুটবলের থেকে।
দুই) দুর্বল রিজার্ভ বেঞ্চ। ২০০২ বিশ্বকাপ ফাইনালে দেখেছিলাম ব্রাজিলের বেঞ্চে বসে জুনিনহো, ডেনিলসনের মতো ফুটবলার। এখন কোনও এক তারদেলি, রিবেরো। প্রথম এগারো বাদে পুরো স্কোয়াডে গভীরতা খুব কম। তিন) গোল করার লোক কোথায়? বড় রোনাল্ডোর পর থেকে সত্যিকারের ভাল স্ট্রাইকার দেখতে পেলাম না। সেন্টার ফরোয়ার্ড না হয়েও তাই গোল করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিতে হয় নেইমারকে। তাই ও না থাকলে ব্রাজিলেরও বেশি গোল নেই। চার) মাঝমাঠে প্যারাগুয়ের পাওয়ার গেমের বিরুদ্ধে এলিয়াস আর ফের্নান্দিনহো পুরো ব্যর্থ। মাঝমাঠ থেকে ডিফেন্সকে যে কভার দেওয়াটা উচিত আদৌ দিতে পারেনি। পাঁচ) প্যারাগুয়ের এরিয়াল খেলাকে ভয় পেলেও তার অ্যান্টিডো়ট বার করতে পারেনি।

ফুটবলের চালু কথা— দুই হাফে দু’রকম খেলা। দ্বিতীয়ার্ধে অন্য এক প্যারাগুয়েকে চোখে পড়ল। যারা অনেক বেশি আগ্রাসী। সেটপিস থেকে অনেক বেশি বিপদ ডেকে আনল। উইং বেশি ব্যবহার করে অগুনতি ক্রস বাড়াল। এবং এত আক্রমণের শেষমেশ সঠিক পুরস্কার পেল। তবে থিয়াগো সিলভার মতো অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার এমন হ্যান্ডবল করবে ভাবতে পারিনি। গঞ্জালেজের পেনাল্টিটা সুন্দর ছিল। ব্রাজিল হয়তো ধরেই নিয়েছিল খেলাটা স্লো করে ম্যাচ বার করে নেবে। কিন্তু প্যারাগুয়ে ১-১ করার পর যেন ‘প্ল্যান বি’ খুঁজে পাননি দুঙ্গা। টাইব্রেকারেও রিবেরো আর কোস্তার শট দেখে অবাক হলাম। পেনাল্টি অনেক ফুটবলারই মিস করে। তা বলে এত বাইরে উড়িয়ে দিয়ে!

তবু এর পরেও দুঙ্গাকে সরিয়ে দিলে ভুল করবে ব্রাজিল। দলকে গুছিয়ে নিতে আরও সময় দেওয়া উচিত ওঁকে। ওর হাতে যা রসদ আছে সেটা নিয়েই ওকে কাজ করতে হচ্ছে। এর আগেও দুঙ্গা প্রমাণ করেছেন উনি ভাল কোচ।

absence of neymar neymar absent brazil lost paraguay win brazil vs paraguay copa america 2015
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy