Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Ian Chappell

চ্যাপেলের চোখে ইডেনে লক্ষ্মণের সেই ইনিংসই সেরা

সেই সময় স্পিন-সহায়ক উইকেট বানানো হত ইডেনে। বিপক্ষে ছিলেন কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্ন।

স্মরণীয়: ঐতিহাসিক ইনিংসের পরে লক্ষ্মণ। সঙ্গে দ্রাবিড়। ফাইল চিত্র

স্মরণীয়: ঐতিহাসিক ইনিংসের পরে লক্ষ্মণ। সঙ্গে দ্রাবিড়। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ ০৪:৫০
Share: Save:

সেই ২০০১। সেই ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। ইডেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফলো-অন থেকে দলকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছিলেন ভিভিএস লক্ষ্মণ ও রাহুল দ্রাবিড়। ৩৭৬ রানের সেই জুটি ভুলতে পারেনি ক্রিকেটবিশ্ব। ভুলতে পারেননি প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ইয়ান চ্যাপেলও। এমনকি স্পিন আক্রমণের বিরুদ্ধে লক্ষ্মণের এই ২৮১ রানের ইনিংসই তাঁর বাছাইয়ে অন্যতম সেরা।

এক সংবাদমাধ্যমে লেখা কলামে চ্যাপেল বলেছেন, “করোনা আতঙ্কে সারা বিশ্বের ক্রিকেট বন্ধ। তাই বেশ কিছুটা সময় পেয়েছি আমর দেখা প্রিয় ইনিংসগুলো নিয়ে আলোচনা করার। স্পিন আক্রমণের বিরুদ্ধে আমার পছন্দের দুই ইনিংস নিয়ে কথা বলতে চাই। প্রথমে অবশ্যই জায়গা করে নেবে ইডেনে লক্ষ্মণের ২৮১ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় স্থানে রাখব অস্ট্রেলিয়ার ডাগ ওয়াল্টার্সের ইনিংসকে।”

সেই সময় স্পিন-সহায়ক উইকেট বানানো হত ইডেনে। বিপক্ষে ছিলেন কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্ন। লক্ষ্মণের স্পিন খেলার দক্ষতা এতটাই যে, ওয়ার্নের মতো বোলারকেও নির্বিষ দেখাতে শুরু করে ইডেনের বাইশ গজে। চ্যাপেল লিখেছেন, “স্পিনের বিরুদ্ধে এত নিখুঁত ব্যাট করতে একমাত্র লক্ষ্মণকেই দেখেছি। সেই সিরিজ শেষে ওয়ার্নকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কী মনে হয়, কী রকম বল করেছ তুমি? ওয়ার্ন বলেছিল, মনে হয়না খুব একটা খারাপ বল করেছি। আমিও ওকে বলি, একেবারেই। তুমি খারাপ বল করোনি।” চ্যাপেল যোগ করেন, “একজন লেগস্পিনারকে স্টেপ আউট করে যদি কেউ অন ড্রাইভ মারে তা হলে বোলার কী করবে? পরের বলটি ফ্লাইট বাড়িয়ে খাটো লেংথে করেছিল ওয়ার্ন। লক্ষ্মণকে ড্রাইভের আমন্ত্রণ জানিয়ে। কিন্তু ব্যাকফুটে গিয়ে অসাধারণ পুল করেছিল লক্ষ্মণ। এটা কিন্তু খারাপ বোলিং নয়। বরং দুর্দান্ত ফুটওয়ার্ক ও ব্যাটিংয়ের উদাহরণ।”

চ্যাপেলের আরও বিশ্লেষণ, “সেই ইনিংসে ৪৫২টি বল খেলেছিল লক্ষ্মণ। তার মধ্যে ৪৪টি চার মেরেছিল ও। আর প্রত্যেকটি গ্রাউন্ড শট। অসাধারণ ব্যাটিং নিদর্শন। লক্ষ্মণ কেন বড় ব্যাটসম্যান সে দিনই বুঝে গিয়েছিলাম। ওর টেকনিক দেখে মনেই হয়নি স্পিনের বিরুদ্ধে বিন্দুমাত্র সমস্যায় পড়েছে। টেস্টে এ ধরনের ব্যাটিং দেখতেই লোকে আসে। আর লক্ষ্মণের ব্যাটিং দেখতে মাঠে আসা যায়।”

এ বারে চ্যাপেল তাঁর সতীর্থের প্রসঙ্গে বিশ্লেষণ করেন। অস্ট্রেলিয়ার সেই দলে ওয়াল্টার্সকেই স্পিনের বিরুদ্ধে সব চেয়ে ভাল ব্যাটসম্যান হিসেবে দেখতেন চ্যাপেল। চ্যাপেল লিখেছেন, “একই সেশনে সেঞ্চুরি করতে ক’জনকে দেখেছেন? আমি তিন বার ওয়াল্টার্সকে একই সেশনে সেঞ্চুরি করতে দেখেছি। ওর মধ্যে দ্রুত রান করার ক্ষমতা ছিল। স্পিন সহায়ক পিচে ওকে আউট করতে ক্লান্ত হয়ে যেত বিপক্ষ।”

আরও বলেছেন, ‘‘মাদ্রাজে (বর্তমান চেন্নাই) ১৯৬৯ সালে ভারতের বিরুদ্ধে অসাধারণ ইনিংস দেখেছিলাম ওয়াল্টার্সের। ও কিন্তু অফস্পিনের বিরুদ্ধে অন্যতম সেরা। মাদ্রাজে ঘূর্ণি পিচে সেঞ্চুরি করেছিল। এরাপল্লি প্রসন্নকে তখন কেউ খেলতে পারত না। ভয় পেত সারা বিশ্ব। কিন্তু সেই ভারতীয় স্পিন আক্রমণের বিরুদ্ধে ১৪টি চার ও দু’টি ছয়ের সৌজন্যে সেঞ্চুরি করেছিস‌ল ও।” যোগ করেন, “ওয়াল্টার্সের সেই ইনিংস তরুণ প্রজন্মের কাছে উদাহরণ হিসেবে থেকে যাবে। শত চেষ্টা করেও ওকে পরাস্ত করতে পারছিল না প্রসন্নেরা‌।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE